প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। এই ভাইরাসের বিষাক্ত ছোবলে ইতোমধ্যে বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত (বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা) বিশ্বব্যাপী ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৩ লাখ ২৩ হাজার ৭৬১ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ১৩ হাজার ৭৩১ জনের।
ভারতে করোনা আক্রান্ত প্রতিদিন সব রেকর্ড পার করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই দেশটিতে করোনা আক্রান্ত ২ লাখ ৭৬ হাজার পেরিয়ে গেছে। মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৭৫০ জনের। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে, ভারতে ফের লকডাউন-নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়া হতে পারে বলে মনে করছে সিকিউরিটিজ রিসার্চ ফার্ম Nomura। সংস্থার সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, করোনা আক্রান্তের নিরিখে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিবহুল ১৫টি দেশের মধ্যে চলে এসেছে ভারত।
নমুরার জরিপ করা হয়েছে বিশ্বের ৪৫টি বড় অর্থনীতির ওপর। লকডাউন তোলার ফলে করোনা আক্রান্ত কতটা হারে বাড়ছে, তার উপরেই সমীক্ষাটি চালানো হয়। রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ বা সেকেন্ড ওয়েভের ঝুঁকি প্রবল, এমন দেশগুলোর তালিকায় প্রথম সারিতেই রয়েছে ভারত।
রিপোর্ট বলছে, ‘জরিপে একটি মিশ্র ফলাফল এসেছে। অর্থনীতির বড় অংশ খুলে গেছে, এমন ১৭টি দেশে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আসার লক্ষণ নেই। ১৩টি দেশের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে ঝুঁকি তুলনামূলক কম। ১৫টি দেশের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, দ্বিতীয় ঢেউকের ঝুঁকি প্রবল। এই সর্বোচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে ভারতও।’
সংস্থার বিশ্লেষণ বলছে, লকডাউন ওঠার ফলে ২টি চিত্র তৈরি হতে পারে। প্রথমত ভালো দিকটি হল, একটি দেশের জনসাধারণের গতিশীলতা বা সজীবতা দ্রুত ফিরছে। সংক্রমণের হার কম, ফলে মানুষের মনের ভীতি কমছে। যার জেরে অর্থনীতির চাকা ঘুরছে।
দ্বিতীয় চিত্রটি হল, অর্থনীতির চাকা ঘোরার সঙ্গে সঙ্গে নতুন আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। ফলে মানুষের মনের মনে ভয় বাড়ছে। সে ক্ষেত্রে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে, লকডাউন আবার জারি করা হতে পারে।
জরিপে ৪৫টি দেশকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমটি হল, অন ট্র্যাক অর্থাৎ সব কিছু স্বাভাবিক। দ্বিতীয় হচ্ছে, ওয়ার্নিং সাইনস বা সতর্কতার লক্ষণ এবং তৃতীয় হল ডেঞ্জার জোন বা দ্বিতীয় ঢেউয়ের ঝুঁকি প্রবল। ভারত পড়ছে ওই বিপজ্জনক জোনে।
ভারতের সঙ্গে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত আয়ের জনসংখ্যার দেশগুলোর মধ্যে এই জোনে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, চিলি, পাকিস্তানের মতো দেশগুলো। এই গোষ্ঠীতে উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে সুইডেন, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা ও কানাডা।
অন ট্র্যাক বা ঝুঁকি প্রায় নেই, এমন গোষ্ঠীতে রয়েছে- ফ্রান্স, ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়া। জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের মতো দেশগুলো ঝুঁকিপ্রবণ গোষ্ঠীতে রয়েছে। সূত্র: নিউজ এইটটিন, সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন