রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেকে দুই ইউপিডিএফ (ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট) সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। রোববার দুপুরে বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের মাচালং ব্রিজপাড়া এলাকায় একটি চায়ের দোকানে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- দীপায়ন চাকমা (৩৮) ও আশীষ চাকমা (৩৫)। নিহত দীপায়ন বাঘাইছড়ির উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের এগুজ্যাছড়ির মৃত অনিল বরণ চাকমার ছেলে এবং আশীষ একই উপজেলার রুপকারী ইউনিয়নের মোরঘোনা গ্রামের মৃত শান্তি কুমার চাকমার ছেলে।
সাজেক থানা পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ইউপিডিএফ সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএসকে দায়ী করলেও তা অস্বীকার করেছে জেএসএস।
জানা যায়, ওই এলাকার একটি চায়ের দোকানে গিয়ে একদল বন্দুকধারী ইউপিডিএফ সদস্যদের ওপর অতর্কিত গুলি চালায়। এতে গুলিতে ঘটনাস্থলেই ওই দুজন নিহত হন।
সাজেক থানার সার্কেল এএসপি ও রাঙামাটির জ্যৈষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের গুলিতে ইউপিডিএফ (প্রসিত) দলের দুইজন নিহত হয়েছেন। সংবাদ পাওয়ার পরপরই সাজেক থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে এ ঘটনায় কারা জড়িত তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এদিকে ১০-১২ ফেব্রুয়ারি তিন দিনের অবকাশযাপনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সাজেক যাওয়ার সফরসূচি রয়েছে। রাষ্ট্রপতির এ সফরসূচির প্রাক্কালে এ ধরনের ঘটনায় জনমনে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
অপরদিকে হত্যাকাণ্ডের জন্য সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএসকে (জনসংহতি সমিতি) দায়ী করে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউপিডিএফ। সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে সংগঠনটির রাঙামাটি জেলা সংগঠক সচল চাকমা ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে বলেন, এদিন দুপুর ১২টার দিকে জেএসএস সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সাজেক ইউনিয়নের মাচালং ব্রিজপাড়ার একটি দোকানে গিয়ে ইউপিডিএফের দুই সদস্যের ওপর অতর্কিত সশস্ত্র হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি ব্রাশফায়ারে ঘটনাস্থলে দীপায়ন চাকমা ও আশুক্য চাকমা ওরফে আশীষ নামে দুই ইউপিডিএফ সদস্য নিহত হন।
বিবৃতিতে এ হত্যার ঘটনাকে কাপুরুষোচিত ও ন্যক্কারজনক আখ্যায়িত করে ইউপিডিএফ নেতা সচল চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ে ইউপিডিএফের চলমান আন্দোলন বানচাল করে দিতে শাসকগোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে সন্তু গ্রুপসহ ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে প্রতিনিয়ত ইউপিডএফ নেতাকর্মীদের হত্যা করছে।
নেতাকর্মী খুন করে ও দমনপীড়ন চালিয়ে ইউপিডিএফের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমন করা যাবে না। পার্বত্য চট্টগ্রামের মুক্তিকামী জনতা এ জুম ধ্বংসের কার্যকলাপ রুখে দেবে। তিনি অবিলম্বে দুই ইউপিডিএফ সদস্যকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান।
ইউপিডিএফের অভিযোগ অস্বীকার করে জেএসএস (সন্তু লারমা) দলের বাঘাইছড়ি থানা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ত্রিদিপ চাকমা বলেন, সাজেক এলাকায় জেএসএসের কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই। তাছাড়া জেএসএস কোনোরকম সশস্ত্র কর্মকাণ্ডে জড়িত নয়। ইউপিডিএফের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।