সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ১৩ বছরের দণ্ডিত জামিনে মুক্ত বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার (৬ মে) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
তবে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়ে এক মাসের মধ্যে দেশে ফিরতে হবে।
গত ২০ মার্চ এ মামলায় আমান উল্লাহ আমানকে জামিন দেন আপিল বিভাগ। তবে বিদেশ যেতে হলে আদালতের অনুমতি নিয়ে যেতে হবে বলে শর্ত দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি শুরু করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে ২৪ মার্চ তিনি জামিনে কারামুক্ত হন। এরপর ২৮ মার্চ চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন।
এর আগে গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণের পর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ-১ এর বিচারক আবুল কাশেম।
এরপর তিনি আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন। একইসঙ্গে জামিন আবেদনও করেন। তবে আপিল বিভাগ ৪ ডিসেম্বর তাকে জামিন না দিয়ে লিভ টু আপিলের শুনানি করতে বলেন। সে অনুসারে শুনানি শেষে ১৪ জানুয়ারি লিভ টু আপিল মঞ্জুর করা হয়।
এ অবস্থায় ফের তিনি জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
২০০৭ সালের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছরের ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গত বছরের ৩০ মে সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল পুনঃশুনানি শেষে তাদের দণ্ড বহাল রেখে রায় দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রায় পাওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। গত বছরের ৭ আগস্ট সেই রায় প্রকাশ হয়।
এরপর রায়ের নির্দেশনা মোতাবেক আমানের স্ত্রী সাবেরা আমান গত ৩ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করেন। পরদিন তিনি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত থেকে জামিন পান।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমান দম্পতির বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। ওই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছরের ও সাবেরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল মঞ্জুর করে তাদের খালাস দেন।
পরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আপিল করলে ২০১৪ সালের ২৬ মে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে হাইকোর্টে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়।
আপিল বিভাগের এ রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে আবেদন করেন আমান। পরে সে আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।