পবিত্র ঈদ-উল-ফেতরকে সামনে রেখে প্রতিবারের মত এবারো শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে ঝিনাইদহের ঈদের বাজার। শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত টানা তিন দিনের বন্ধ থাকায় শহরে ক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিপনী-বিতানগুলো। বিপনী-বিতানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ঈদ আসতে আর মাত্র দিন কয়েক বাকি। তাই, কর্মব্যস্ত মানুষের পদচারনায় মুখর ঝিনাইদহের মার্কেটগুলো। মা-বাবা-ভাই-বোন সহ পরিবারের সবাই একত্রে ঈদের জন্য পছন্দসই পোশাক পায়জামা-পাঞ্জাবী, শার্ট-প্যান্ট, থ্রি-পিচ, শাড়ী-লুঙ্গী, জুতা, টুপি, কসমেটিকস সহ বিভিন্ন দ্রব্যের দোকানে ভীড় জমাচ্ছেন। তবে ঈদের মার্কেটে মহিলা এবং তরুণ তরুনীদের ভীড় সবচেয়ে বেশী লক্ষ্য করা যচ্ছে। সকাল থেকে রাত অবধি ক্রেতাদের পদচারনায় ঈদের বাজার মুখর থাকলেও মুলত বিকাল থেকে রাত্রের দিকে ক্রেতাদের ভীড় বেশী লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
কারণ সরকারি চাকুরী বিভিন্ন ধরনের পেশাজীবি মানুষরা দিনের কর্মব্যস্ততা শেষ করে অবসর সময় বিকাল এবং রাত্রে কেনাকাটা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। বড় বড় মার্কেটের বেচা বিক্রির তুলনায় পিছিয়ে নেই ফুটপাথের অবস্থিত মার্কেটগুলোও। কারণ নামি দামী খ্যাতনামা বিপনী-বিতানগুলোতে পয়সাওয়ালা লোকেরা ভীড় করলেও দারিদ্র সীমার মধ্যে বসবাস করা মানুষগুলো পছন্দের কেনাকাটার স্থান এই পথ মার্কেটগুলোই। প্রতিবারের মত এবারো নামি-দামী খ্যাতনামা বিতানগুলো তাদের দোকানগুলোর দেশী-বেদেশী বিভিন্ন ধরনের নামকরা পোশাক জুতা টুপিসহ বিভিন্ন দ্রব্যের পসরা সাজিয়েছেন। তবে সবচেয়ে বিক্রি বেশী হচ্ছে পুরুষের জন্য পায়জামা পাঞ্জাবী, মহিলাদের শাড়ি তরুনীদের এবার পছন্দ ইন্ডিয়ান থ্রি-পিচ, বাহুবলী, ফ্লোরটাচ, গাউন ও সারারা এবং শিশুদের রাখী বন্ধন, বর্জমালা, ঝিনুকমালা, শটকামিজ, লম্বাস্কাট বিভিন্ন নামের পোষাক বিপনী বিতানগুলোতে শোভাপাচ্ছে। ঈদের শেষমূহুর্তে নিজেকে সাজাতে তরুন-তরুনীদের সবচেয়ে বেশী ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে শহরের কসমেটিকস এর দোকান গুলোতে।
এদিকে মোছাঃ আকলিমা খাতুন এর সাথে আমাদের প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি জানান, ঈদের সকল কিনাটাকা শেষ এখন নিজেকে সাজাতে মেহেদী, আয়লানা, মাসকারা, চুড়ি, কানের দুলসহ কসমেটিকস এর সকল প্রসাধনী। পোশাক পরিচ্ছদের পাশাপাশি ইলেকট্রনিক্সের বাজারেও ঈদের ছোয়া লেগেছে। বিভিন্ন প্রকারের সাংসারিক প্রয়োজনীয় পণ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানা যায়। তবে ইলেকট্রনিক্স দ্রব্যের ভেতর মোবাইলের শো-রুমগুলোতে তরুন-তরুনীদের সবচেয়ে ভীড় বেশী। ঈদের ব্যস্ততা বাজারে কোনো প্রকার আইন শৃংখলার অবনতি যাতে না হয় সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে যথাযথ কঠোর ব্যবস্থা। শহরের প্রধান প্রধান স্পটে সার্বক্ষনিক র্যাব ও পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া শহরকে জানজট মুক্ত করতে ট্রাফিক পুলিশ শহরে ইজি বাইক প্রবেশের উপর যানজট মুক্ত করতে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন উদ্দীন জানান, ঈদ বাজারে কোনো প্রকার আইন শৃংখলার অবনতি যাতে না হয় সেজন্য সদর থানা পুলিশ বিশেষ টহল জোরদার করেছে। বিশেষ করে ব্যাংক এলাকাতে পুলিশ টহল রাখা হয়েছে। এছাড়াও বিপনী-বিতানগুলোতে পোশাক ধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা আছে।
ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসান বলেন, ঈদ-উল-ফেতরকে কেন্দ্র করে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশের টহলের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ নিয়জিত রয়েছে। ক্রেতারা নিবিঘেœ যাতে শপিং করতে পারে সে জন্য জেলা শহর সহ উপজেলা শহরগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জেলা শহরের গুরুত্ব পূর্ণস্থানসহ বিভিন্ন শপিংমলের পুলিশ সদস্যদেরকে নিরাপত্তার দায়িক্ত দেয়া হয়েছে। যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা পুলিশ সর্তক অবস্থায় রয়েছে। একই সাথে জেলার ৬ টি উপজেলা সহ গুরুত্বপূর্ণ বাজার সূমুহে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।