প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা, গ্রেপ্তার, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্তে রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রভাবশালী দুটি অঙ্গ—প্রশাসন ও পুলিশ ক্যাডারে অস্বস্তি বিরাজ করছে।
এর মধ্যেই প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে গুঞ্জন চলছে, বিগত নির্বাচনে মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের একটি অংশকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে কর্মকর্তাদের একপক্ষ মনে করছে, সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাদের ঢালাওভাবে মামলায় আসামি করা ও গ্রেপ্তার সার্বিক কার্যক্রমে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে আরেকটি অংশের মত, বিগত সরকারের আমলে যেসব আমলা ও পুলিশ কর্মকর্তা বেশি প্রভাব বিস্তার করেছেন ও দলীয় আবরণে গা ভাসিয়েছেন, তাঁদের বিচারের মুখোমুখি না করলে পুরো প্রশাসন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
তবে তুলনামূলক কম অভিযোগ থাকা উচ্চপর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তাকে আসামি করা ও গ্রেপ্তার নিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে কিছুটা অসন্তোষ রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারাগার থেকে জামিনে বের হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য তৎপরতা শুরু করেছেন। একইভাবে আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছেন।
অপরাধের পুরোনো সাম্রাজ্য ফিরে পেতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে মতিঝিল, মগবাজার, মোহাম্মদপুর ও মিরপুর এলাকায় এ প্রবণতা বেশি।
ডিস-ইন্টারনেট ব্যবসা, দরপত্র নিয়ন্ত্রণ, পরিবহন, ফুটপাত, বাজার, ঝুট ব্যবসা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও নির্মাণকাজ থেকে চাঁদাবাজি এবং জমি দখলের মতো বিভিন্ন খাত থেকে চাঁদা তোলা ও আর্থিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছেন তারা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র বলছে, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অনেকের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে। আবার ৫ই অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রও তাদের কাছে যেতে পারে।
জামিনে মুক্ত হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে আছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ‘কিলার আব্বাস’ হিসেবে পরিচিত মিরপুরের আব্বাস আলী, তেজগাঁওয়ের শেখ মোহাম্মদ আসলাম ওরফে সুইডেন আসলাম, মোহাম্মদপুরের ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল, হাজারীবাগ এলাকার সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন।
এ ছাড়া ঢাকার অপরাধজগতের আরও দুই নাম খন্দকার নাঈম আহমেদ ওরফে টিটন ও খোরশেদ আলম ওরফে রাসু ওরফে ফ্রিডম রাসুও কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এ ছাড়া আত্মগোপনে থাকা কেউ কেউ প্রকাশ্যে এসেছেন। এমনই একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বিদায়ি আওয়ামী সরকারের সময় থেকেই বাজারে এই অস্থিরতা চলছিল। ওই সরকারের ওপর মানুষের ক্ষোভের এটিও একটি কারণ।
তবে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর বাজার সহনীয় করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিলেও কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, অতিমুনাফালোভী পুরনো সিন্ডিকেট আগের মতোই সক্রিয়। অনেক ক্ষেত্রে বেপরোয়া। আর পথে পথে পরিচয় বদলে চাঁদাবাজিও চলছে সমান তালে।
পণ্যের সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেটের হোতাদের চিহ্নিত করে কঠোর হাতে দমন না করলে বাজারে স্বস্তি ফেরানো কঠিন।
এদিকে ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গিয়েছে, প্রতিদিনই বাড়ছে একেকটি নিত্যপণ্যের দাম।
আলু, বেগুন, কাঁচা মরিচ, ধনেপাতাসহ প্রায় সব ধরনের সবজিই অস্বাভাবিক দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিমও চলে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। কোনো কোনো পণ্যের দাম মাসের ব্যবধানে ১০০ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
বলতে গেলে সব শ্রেণি-পেশার মানুষই নিত্যপণ্যের লাগামহীন দামে দিশাহারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে বাংলাদেশের অংশে মাছ ধরার সময় ধরে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি ফিশিং ট্রলার ও ৭২ জন মাঝি-মাল্লাকে ২৪ ঘণ্টা পর ছেড়ে দিয়েছে মায়ানমার নৌবাহিনী।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ৪টার দিকে ট্রলারগুলো সেন্টমার্টিন ঘাটে পৌঁছে।
৯ই অক্টোবর বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে বঙ্গোপসাগরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমের মৌলভীর শিল নামে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মাছ ধরার নৌকায় বাংলাদেশি ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি করে মায়ানমার নৌ বাহিনী।
একই সময় জেলেসহ তারা ছয়টি মাছ ধরার ট্রলার ধরে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জেলের মৃত্যু এবং আরও দুই জেলে আহত হন।
দুপুর আড়াইটার দিকে নিহত জেলেসহ একটি ট্রলার শাহপরীরদ্বীপ জেটিতে আসে। এরপর বিকেল চারটার দিকে অন্য পাঁচটি ট্রলার জেলেসহ সেন্টমার্টিন ঘাটে পৌঁছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, রাষ্ট্র মেরামতে নতুন করে সংস্কার প্রস্তাব দেবে বিএনপি। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব ঘোষণা করা হয়েছিল দলটির পক্ষ থেকে।
সেগুলো নিয়ে এখন তৃণমূল ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে মতবিনিময় করছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাব ঘোষণা করবেন।
এই প্রস্তাবের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো- প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, বাকস্বাধীনতা, শিক্ষাব্যবস্থা, শিল্পকে শ্রমঘন করা, রাজনৈতিক সংঘাত চিরতরে বন্ধ করা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই প্রস্তাব সারা দেশে প্রচার করা হবে। লিফলেট, বুকলেটসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের কাছে প্রস্তাবগুলো তুলে ধরা হবে। এ জন্য চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
নিউ এইজের প্রধান শিরোনাম, ‘Stolen asset recovery process still at preliminary stage’ অর্থাৎ ‘চুরি হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যেই চুরি হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনার জন্য জাতীয় টাস্কফোর্স পুনর্গঠন করেছে।
সেইসাথে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চুরি হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারের প্রাথমিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে পুনর্গঠন করেছে।
তবে অর্থনীতিবিদদের মতে, চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধারের সাফল্য মূলত ওই দেশগুলোর সরকারের পাচারকৃত সম্পদ জব্দ করার উপর নির্ভর করে।
চুরি হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি বড় দেশ এবং জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির কাছ থেকেও সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন দেশে অবৈধ সম্পদ রয়েছে এমন বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রকাশ্যে চিহ্নিত করা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য একটি বড় অর্জন হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের সড়ক নির্মাণ ব্যয় প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে দুই থেকে নয় গুণ বেশি। আর ইউরোপের চেয়েও দুই গুণ বেশি; খোদ এমন চিত্র তুলে ধরেছে বিশ্বব্যাংক।
এ কারণ গল দরপত্র প্রক্রিয়ার ত্রুটির কারণে সড়ক ও জনপদ (সওজ) অধিদপ্তরের সড়ক ও মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে বড় দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে।
পদ্ধতিগত ত্রুটির সুযোগ নিয়ে রাজনীতিক, আমলা ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে নিচ্ছে।
এ অবস্থায় দরপত্র প্রক্রিয়ায় সংশোধন আনতে মতামত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের মতে, প্রকল্পের প্রাক্কলন প্রণয়ন থেকে দুর্নীতির শুরু হয়। যেনতেন প্রাক্কলন করে ধাপে ধাপে ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানো হয়।
এখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রাজনীতিক ও আমলাদের যোগসাজশে বড় লেনদেন হয়। এছাড়া বেশি কাজ করলে দরপত্র মূল্যায়নে বেশি নম্বর দেওয়ার পদ্ধতির কারণে একই ঠিকাদার বেশি কাজ পান।
এক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মেলবন্ধন ভেঙে দেয়া এবং একই প্রতিষ্ঠানের বারবার কাজ পাওয়ার সুযোগ বন্ধ করার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম, ‘Primary schools barely looked after’ অর্থাৎ, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর দিকে তেমন নজরই নেই’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে আরও শ্রেণীকক্ষ, স্যানিটেশন সুবিধা এবং অন্যান্য উন্নয়নের জন্য একটি বড় প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও গত ছয় বছরে খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। এ অবস্থায় খারাপ পরিবেশে শিশুদের পাঠদানের ক্ষতি হচ্ছে।
পরিকল্পনা কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির দুই-তৃতীয়াংশ কাজ মে মাস পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।
৩৮ হাজার ২৯১ কোটি টাকার প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুলাই মাসে চালু করা হয়েছিল। ২০২২ সালে সরকার প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়েছিল, কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৫ সালের জুনে।
তবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৬২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহমেদ।
প্রকল্পের কর্মকর্তাদের দাবি, রাজনৈতিক কোন্দলের মধ্যে গত কয়েক মাস ধরে প্রকল্পের বাস্তবায়ন প্রায় স্থগিত ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারের গত দেড় দশকের শাসনামলে দেশের স্থলভাগ ও সাগরে গ্যাস অনুসন্ধানে জরিপ চালানো হয় প্রায় ৫০ হাজার লাইন কিলোমিটার এলাকায়।
জরিপ চালানো হলেও গ্যাসের উত্তোলন বাড়াতে পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্যাস কূপ খনন করা হয়নি।
গত দেড় দশকে নতুন যে ছয়টি গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে, সেখানে ভোলা ছাড়া আর কোথাও গ্যাসের বড় কোনো মজুদ পাওয়া যায়নি।
ভোলা নর্থ ও ইলিশায় অন্তত ৮০০ বিসিএফ গ্যাসের মজুদ পাওয়া গেছে। কিন্তু পাইপলাইন না থাকায় এই গ্যাস তা জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা যাচ্ছে না।
স্থল ও সাগরে গত ১৫ বছরে প্রায় ৫০ হাজার লাইন ও বর্গকিলোমিটার এলাকায় জরিপ চালানো হলেও সেখানে অনুসন্ধান কার্যক্রম পর্যাপ্ত মাত্রায় ছিল না বলে দাবি জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের।
তাদের ভাষ্যমতে, গ্যাসের নতুন মজুদ আবিষ্কারের জন্য শুধু জরিপ পর্যাপ্ত নয়। এর সঙ্গে নতুন কূপ খননও প্রয়োজন। কিন্তু দেশের স্থলভাগে বিশেষ করে পশ্চিম অঞ্চল এবং পাহাড়ি এলাকায় আজ পর্যন্ত গ্যাসের কূপ খনন করা যায়নি।
এসব এলাকায় কূপ খনন করা গেলে গ্যাসের মজুদ পাওয়ার বড় সম্ভাবনা ছিল বলে মনে করছেন তারা।