প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তৃণমূল বিএনপিকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে-এমন আশঙ্কা করছে জাতীয় পার্টি।
আসন্ন নির্বাচনে জাপাকে বাদ দিয়ে তৃণমূল বিএনপিকেই সংসদে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আনা হয় কি না- এ নিয়ে সন্দেহ ও সংশয় তৈরি হয়েছে দলটিতে।
বিএনপি নির্বাচনে না গেলে গত দুইবারের মতো জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের আসনে থাকার কথা। কিন্তু ইদানীং সরকারের চোখ বিএনপি থেকে আসা নেতাদের নিয়ে গঠিত তৃণমূল বিএনপিকে ঘিরে।
নতুন নিবন্ধন পাওয়া দলটি কেন্দ্রীয় নেতাদের খুব বেশি কাছে টানতে না পারলেও তৃণমূলে বিএনপিতে দীর্ঘদিন অবহেলিত অথচ জনপ্রিয়-এরকম নেতাদের নিয়ে সক্রিয় হচ্ছে।
সারা দেশে জনপ্রিয় তৃণমূল নেতাদের মনোনয়ন দিয়ে জাতীয় পার্টির বিকল্প অবস্থানে নেয়া হতে পারে বলে প্রায় দেড় দশক ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গী জাপা নেতাদের মনে এখন সন্দেহ সংশয় দোল খাচ্ছে।
জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচন পেছাতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। ওই আহ্বানের পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, রাজনৈতিক সমঝোতা হলে এবং বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে বা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হলে তারা পুনঃতফশিলের বিষয়টি বিবেচনা করবে।
তবে সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আগামী ১০ দিনের মধ্যে । কেননা ৩০শে নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হওয়ার পর পুনঃতফশিল করা হলে আইনি জটিলতা তৈরি হতে পারে।
যদিও সোমবার পর্যন্ত নির্বাচন পেছাতে ইসির কাছে কোনো পক্ষ থেকে অনুরোধও আসেনি।
রাজনৈতিক সমঝোতায় পুনঃতফশিলের নজির একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও রয়েছে।
২০১৮ সালের ৮ই নভেম্বর তফশিল ঘোষণার চার দিনের মাথায় ১২ই নভেম্বর পুনঃতফশিল করা হয়। ভোটগ্রহণের তারিখ ২৩শে ডিসেম্বর থেকে পিছিয়ে ৩০শে ডিসেম্বর করা হয়।
এবারও বিএনপি নির্বাচনে এলে পুনঃতফশিল করার জন্য সময় ইসির হাতে রয়েছে। কারণ জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত ভোটের তারিখ নির্ধারণ করার সুযোগ রয়েছে।
বিএনপি নেতাদের ধরপাকড় নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম, ‘112 BNP men sentenced in a single day’ অর্থাৎ ‘একদিনে বিএনপির ১১২ জনের সাজা’।
সহিংসতার মামলায় গতকাল ঢাকা ও রংপুরে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ১১২ নেতাকর্মীকে সাজা দেওয়া হয়েছে।
তবে কতজনকে সাজা দেয়া হয়েছে, তা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় আলাদা আলাদা তথ্য ছাপা হয়েছে।
মানবজমিন লিখেছে, দেশের বিভিন্ন আদালতে একদিনে বিএনপির ১৩৬ জন নেতা-কর্মীকে সাজা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে প্রথম আলো এই সংখ্যা ৬৮ জন বলে উল্লেখ করেছে।
গত কয়েকদিনে আদালতে বিএনপি কর্মী ও নেতাদের সাজা হলেও গতকালের সংখ্যা একদিনে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ২০১৩ সালের মে থেকে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঁচটি মামলায় তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
এসব নেতাকর্মীকে ১৮ মাস থেকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আসামিদের মধ্যে ৭২ বছর বয়সী অসুস্থ রোগীও আছেন।
এসব রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এখানে ন্যায়বিচার হয়নি বলে দাবি করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সব সাজা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের অবস্থান কি হবে তা পরিষ্কার করেনি জাতীয় পার্টি, তবে এরমধ্যে দলটি মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে দিয়েছে।
মনোনয়ন ফরম বিক্রির প্রথম দিন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতাসহ সাড়ে পাঁচশর বেশি মনোনয়ন প্রত্যাশী ফরম সংগ্রহ করেছেন বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
প্রতিটি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করা হচ্ছে ৩০ হাজার টাকা করে।
পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয় থেকে মঙ্গলবার ও বুধবার সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা যাবে। এছাড়া দেশের বিভাগভিত্তিক আলাদা বুথ থেকেও ফরম বিক্রি করার কথা রয়েছে।
ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ই জানুয়ারী জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে। আর মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ তারিখ ৩০শে নভেম্বর।
এ বিষয়ে দলটির নেতা মুজিবুল হক চুন্নু জানান, তিনি ফরম সংগ্রহ করেননি। নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে তার দল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি বলেও তিনি জানান।
তিনি বলেন, “পরিবেশ পরিস্থিতি দেখছি। সময়ের বাধ্যবাধকতা আছে, তাই আমরা নির্বাচনের কার্যক্রম এগিয়ে রাখছি।”
দলের চেয়ারম্যান ৩০শে নভেম্বরের আগে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি নিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের শোডাউনে নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তবে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, এতে আচরণবিধির লঙ্ঘিত হলেও মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করার সুযোগ নেই।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তফসিলের পর থেকে রাজনৈতিক দল ও সম্ভাব্য প্রার্থীরা আচরণবিধির আওতায়।
আগের দুই নির্বাচনের মত এবার সবকিছু এসে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করে তারা বলছেন স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ইসির পক্ষে নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে।
বিশ্লেষকদের মতে দলীয় সরকারের অধীনে পরিচালিত প্রশাসনের উপর ইসির নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রধান উপায় আচরণবিধির প্রতিপালনে কঠোর অবস্থান গ্রহণ।
এর মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে ইসি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সবার মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে পারে।
কিন্তু শুরুতেই আচরণবিধি লঙ্ঘণ ঠেকানোর বিষয়ে শিথিল মনোভাব প্রদর্শন পুরো নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বিএনপি জামায়াতের ডাকা দুই দিনের হরতালের শেষ দিন ছিল সোমবার।
এ দিন ঢাকার মতিঝিল, মিরপুর ও পল্টনে একটি দোতলা বাসসহ মোট তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম নগরী ও নগরীর বাইরে রবিবার রাতে আগুনে পুড়েছে ২৮টি বাস।
রোববার মধ্যরাতে হালিশহরে একটি অটো রিকশার গ্যারেজে রহস্যময় আগুনে ২০টি সিএনজি অটোরিকশা ও পাঁচটি মোটরসাইকেল ভস্মীভূত হয়।
অন্যদিকে গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহীর পুঠিয়া, ফেনীতেও ট্রাক ও বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আবার কিছু কিছু স্থানে পণ্যবাহী যানবাহনও হামলার মুখে পড়ে।
এসব আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিস তা নিয়ন্ত্রণে আনে। আবার কিছু আগুন পথচারীরাই নিভিয়ে ফেলে।
২৮শে অক্টোবর থেকে সোমবার পর্যন্ত ১৯৭টি যানবাহনের অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতাল-অবরোধ এবং অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আবারো অনলাইন পাঠদানে ফিরেছে।
কোভিড প্রাদুর্ভাবের সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইন ক্লাসের বিস্তার ঘটেছিল। তবে সচেতনতা বৃদ্ধি, টিকাদানসহ নানা পদক্ষেপে ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আসায় পরিস্থিতি পরে স্বাভাবিক হয়ে আসে।
কিন্তু চলমান অস্থিরতা যেন আগের পরিস্থিতি যেন ফিরিয়ে এনেছে।
জানা গিয়েছে, গত ২৯শে অক্টোবর বিএনপির প্রথম দফায় হরতাল ঘোষণার পর থেকেই স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি অনলাইনেও পাঠদান শুরু করে।
তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শঙ্কা, রাজনৈতিক অস্থিরতা দীর্ঘ হলে অনলাইন পাঠদান সত্ত্বেও কোভিডকালীনের মতোই বড় ধরনের শিখন ঘাটতি তৈরি হতে পারে।
কেননা বিজ্ঞাননির্ভর যেসব বিভাগ রয়েছে সেগুলোয় ল্যাব এবং সশরীরে ক্লাস অপরিহার্য। অনলাইনে এসব বিষয়ে পরিপূর্ণভাবে শেখানো সম্ভব হয় না।
শিক্ষাবিদদের মতে, ‘অনলাইন শিক্ষা সশরীরে শিক্ষার বিকল্পও হতে পারে না।’
এদিকে কারগার থেকে খাদিজার বেরিয়ে আসার বিষয়ে প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর, ‘বিনা দোষে আমি প্রায় ১৫ মাস জেল খাটলাম।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে সোমবার সকালে মুক্তি পাওয়ার পর সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, জামিনে মুক্তি পেয়েই তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন এবং পরীক্ষার হলে বসেন।
মুক্তির পর খাদিজা কাশিমপুর কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার সঙ্গে অন্যায় তো হয়েছেই। বিনা দোষে আমি প্রায় ১৫ মাস জেল খাটলাম। এর চেয়ে বেশি কিছু আর এখন বলতে চাই না। বলার মতো মন-মানসিকতা আমার নেই।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় কারাগারে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ গত বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
সকাল নয়টার দিকে খাদিজা মুক্তি পেয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং বেলা ১১টা সাত মিনিটে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। এরপর সরাসরি পরীক্ষার হলে গিয়ে আসন গ্রহণ করেন।
যদিও পরীক্ষা শুরু হয়ে যায় সকাল দশটায়। খাদিজা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তবে কারাগারে থাকার কারণে তিনি পরীক্ষা দিতে পারেননি।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ২১৫টি পদ বিলুপ্ত হওয়ায় দুই ব্যাচের ২২৭ জন সহকারী পুলিশ সুপারের (এএসপি) পদোন্নতি আটকে গেছে।
২০২০ সালের ১৫ই মার্চ এসব পদ বিলুপ্ত করে একইসংখ্যক পুলিশ সুপারের (এসপি) পদ সৃষ্টি করা হয়। এতে পুলিশ প্রশাসনে অতিরিক্ত এসপি পদে পদোন্নতি দেওয়ার মতো শূন্য পদ নেই।
ফলে পুলিশ ক্যাডারের ৩৫ ও ৩৬ ব্যাচের কর্মকর্তা, যাঁরা এখন এএসপি, তাঁদের পদোন্নতি হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন বলছে, এ নিয়ে পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। তাঁদের এ সমস্যার সমাধানে সুপারনিউমারারি (সংখ্যাতিরিক্ত) পদ সৃষ্টি হতে পারে।
পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সাধারণত বিসিএস ক্যাডাররা পুলিশে যোগদানের পাঁচ বছর হলে অতিরিক্ত এসপি পদে পদোন্নতি পেয়ে থাকেন।
৩৫তম ব্যাচের কর্মকর্তারা গত ছয় বছর ৯ মাস এবং ৩৬ ব্যাচের কর্মকর্তারা পাঁচ বছর চার মাস ধরে দায়িত্ব পালন করেও পদোন্নতি পাচ্ছেন না।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, পুলিশের চলমান পদোন্নতির প্রক্রিয়া শেষ হলে অতিরিক্ত এসপির আড়াই শতাধিক সুপারনিউমারারি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠাবে পুলিশ সদর দপ্তর।