সংস্থাটির মতে, বাংলাদেশের নিট রিজার্ভ এক হাজার ৪৭৯ কোটি ডলার, যা দিয়ে এক দশমিক আট মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব এবং মোট রিজার্ভ দিয়ে দুই দশমিক তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।
অথচ কোন দেশের রিজার্ভকে নিরাপদ মাত্রায় রাখতে হলে কমপক্ষে তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান রাখতে হয়। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রিজার্ভ বেশ কম বা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় নেমে এসেছে।
মোট ও নিট রিজার্ভ তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান করতে হলে অপেক্ষা করতে হবে আরো দুই থেকে তিন বছর।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক এ তথ্য মানতে নারাজ। তারা বলেছে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন নিট ও গ্রস দুই হিসাবেই তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের ওপরে রয়েছে।
গ্রস হিসাবে এখন রিজার্ভ দুই হাজার ৫২৩ কোটি ডলার ও নিট হিসাবে এক হাজার ৯৯১ কোটি ডলার। যা দিয়ে সাড়ে চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।
আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য শর্ত হলো বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ নির্ধারিত পরিমাণ থাকতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশ সেই পরিমাণ রিজার্ভ রাখতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে তিস্তা প্রসঙ্গ নিয়ে প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম, ‘ভারত দুঃসময়ের বন্ধু, চীন থেকে শেখার আছে’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য চীন ও ভারত উভয় দেশ বাংলাদেশকে প্রস্তাব দিয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন।
যে প্রস্তাব দেশের মানুষের কল্যাণে আসবে, সেটাই গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। তার মতে ভারত প্রকল্পটা করলে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘কোন প্রস্তাব নিলে আমি ঋণ কতটুকু নিলাম, শোধ করলাম, দিতে কতটুকু পারব। সবকিছু বিবেচনা করতে হবে।’
‘ভারত যখন বলছে তারা করতে চায় এবং টেকনিক্যাল গ্রুপ পাঠাবে, অবশ্যই তারা আসবে। আমরা যৌথভাবে সেটা দেখব। চীনও একটা সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে। ভারতও একটা করবে। যেটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য, লাভজনক—সেটাই করব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত আমাদের চরম দুঃসময়ের বন্ধু। আবার চীন যেভাবে নিজেদের উন্নত করেছে, সেখান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।’
আবার ভারত ও চীনের বৈরিতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চীন আমাকে দাওয়াত দিয়েছে, আমি চীনে যাব। কার কী ঝগড়া, সেটা তাদের সঙ্গে থাক। আমার না।’
সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়—বাংলাদেশের এমন পররাষ্ট্রনীতির বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর ওই সংবাদ সম্মেলনের নানা বক্তব্য বেশিরভাগ পত্রিকার প্রধান শিরোনাম হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রথম পাতার অন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ খবর তুলে ধরা হল।
যেমন দ্য ডেইলি স্টারের প্রথম পাতায় ভারতের সাথে চুক্তি প্রসঙ্গে খবর করেছে যার শিরোনাম, ‘New deals with India ‘go against country’s interest’’ অর্থাৎ, ‘ভারতের সঙ্গে নতুন চুক্তি ‘দেশের স্বার্থবিরোধী’’।
প্রতিবেদনে মূলত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
মি. আলমগীরের মতে, প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সফরে ভারতের সঙ্গে যে সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি হয়েছে তা ‘দেশের স্বার্থবিরোধী’। এর প্রতিবাদে আন্দোলন করার কথা জানান তিনি।
তবে, এই বিএনপি নেতা বলেন, আন্দোলন ভারতের বিরুদ্ধে নয়, বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে।
তিনি জানান, বাংলাদেশের আগে তিস্তার পানি দরকার কিন্তু সরকার তিস্তা প্রকল্পে কাজ করতে চায়। এর কারণ এই প্রকল্পে প্রচুর অর্থ জড়িত এবং সরকার সেই অর্থকে টার্গেট করছে।
চুক্তির সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফখরুল বলেন, “করিডোর থেকে ভারত অবশ্যই উপকৃত হবে। কিন্তু বাংলাদেশ কীভাবে উপকৃত হবে? কানেক্টিভিটি অপরিহার্য, তবে এটি আমাদের স্বার্থে হওয়া উচিত।”
এছাড়া আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি বণ্টন ও সীমান্ত হত্যা নিয়ে সরকার মৌন অবস্থান থাকা নিয়েও অভিযোগ করেন তিনি।
এমপি আজীম হত্যাকাণ্ডের নতুন দিক নিয়ে ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর, ‘অর্থের জোগানদাতা হিসেবে নতুন নাম সামনে আসছে’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ঝিনাইদহ চার আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে নতুন করে আরো অনেকের নাম আসছে। যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুনুর রশিদ এ কথা বলেছেন। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান তিনি।
বর্তমানে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা এই খুনের ঘটনার অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে তদন্ত যাতে বিলম্ব হয় এবং এর ফলে মামলার তদন্ত প্রমাণ বিনষ্ট হয় সেই চেষ্টায় চালিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িত মাফিয়া গ্রুপ – বলা হয়েছে খবরে।
খবরে বলা হচ্ছে, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের পাশাপাশি ‘নজিরবিহীন’ পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগও অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অনুসন্ধানে বেনজীরের পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে পরিচয় গোপন করে সাধারণ পাসপোর্ট নেওয়ার নজিরবিহীন জালিয়াতির তথ্য পাওয়া গেছে।
পুলিশ পরিচয় গোপন করে বেসরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে সাধারণ পাসপোর্ট তৈরি করেন তিনি। কিন্তু নবায়নের সময় ধরা পড়লে তা আটকে দেয় পাসপোর্ট অধিদপ্তর। চিঠি দেওয়া হয় র্যাব সদর দপ্তরে।
কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে সব ম্যানেজ করেন বেনজীর। পাসপোর্ট অফিসে না গিয়ে নেন বিশেষ সুবিধা। বানিয়ে নেন সাধারণ পাসপোর্ট।
এমনকি শুরু থেকে এ পর্যন্ত তিনি সরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে বিশেষ পাসপোর্টও (লাল পাসপোর্ট) নেননি বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধান দল এ পর্যন্ত বেনজীরের সাতটি পাসপোর্টের সন্ধান পেয়েছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
অভিযোগ অনুসন্ধানে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের আট কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
এদিকে ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মতিউরের সম্পদ ফ্রিজ করা প্রসঙ্গে সমকালের প্রথম পাতার খবর, ‘মতিউরে পরিবারের ব্যাংক-বিও হিসাব ফ্রিজ’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য ড. মো. মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সাত সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের আদেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট–বিএফআইইউ।
একই সঙ্গে তাদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
দুদকের অনুরোধে মঙ্গলবার এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে মতিউরের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম। এ ব্যাপারে তিনি অন্য সদস্য ও ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের সতর্ক করেছেন।
বিএফআইইউ থেকে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও এমএফএস কোম্পানিতে অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
মতিউর ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট হিসাবের লেনদেন বিবরণী, হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসিসহ যাবতীয় তথ্য আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বিএফআইইতে পাঠাতে বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য মতে গত এক বছরের তুলনায় চিনির দাম ৪০ শতাংশ পয়েন্ট কমলেও বাংলাদেশের চিত্র ভিন্ন।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, এক বছরের ব্যবধানে দেশের বাজারে চিনির দাম কমেছে মাত্র সাড়ে তিন শতাংশ।
বিশ্ববাজারে চিনির দাম কমার বেনিফিট বাংলাদেশ নিতে না পারার অন্যতম কারণ হিসেবে আমদানিকারকদের দাবি হল- জাহাজ খরচ বৃদ্ধি পাওয়া, ডলার সংকট, এলসির সীমাবদ্ধতা, ডলারের রেট এবং কাস্টমস ডিউটি।
বর্তমানে চিনির দাম কমানোর একটাই পথ হিসেবে তারা ডিউটি ফি কমানোর কথা বলেন। এটি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রসঙ্গে নিউ এইজের প্রধান শিরোনাম, ‘Bangladesh faces massive load-shedding as India’s Adani cuts power supply’ অর্থাৎ, ‘ভারতের আদানি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করায় বাংলাদেশ ব্যাপক লোডশেডিংয়ের সম্মুখীন হয়েছে’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ভারতের আদানি পাওয়ারে পরিচালিত কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার ফলে বিভিন্ন স্থানে ১৬ ঘন্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে।
তিন দিন আগে চলমান তাপপ্রবাহ শুরু হওয়ার পর থেকে, বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় চার হাজার মেগাওয়াট বেড়েছে, লোডশেডিং হারও ধাই ধাই করে বাড়ছে।
চলমান অর্থনৈতিক সংকট দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ তাদের জ্বালানি ব্যবহার মারাত্মকভাবে কমিয়ে এনেছে।
বর্তমান প্রায় সব বেসলোড পাওয়ার প্ল্যান্ট তাদের ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা এক-তৃতীয়াংশ সক্ষমতায় চলছে। শিগগিরই পরিস্থিতির উন্নতি হবে এমন কোনো আশা নেই।
বিশেষ করে বাংলাদেশের দুটি ভাসমান স্টোরেজ এবং রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটে ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানার পর থেকে এটি নষ্ট অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
এ অবস্থায় আদানি তার দুটি ইউনিটের মধ্যে একটি বন্ধ করার পরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
আদানি পাওয়ারের কাছে বকেয়া বিলের ৫০ কোটি ডলার সহ বাংলাদেশ দেশে এবং বিদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের কাছে তিন বিলিয়ন ডলারেরও বেশি পাওনা রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পদ্মা (যশলদিয়া) পানি শোধনাগার প্রকল্পে সরবরাহ লাইন তৈরির কোনো আয়োজন না করেই কার্যক্রম চালু করেছে ঢাকা ওয়াসা।
এই প্রকল্পের দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা ৪৫ কোটি লিটার। কিন্তু সক্ষমতার অর্ধেকের কম পানি উৎপাদন করায় ৫৬ মাসে ঢাকা ওয়াসার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৭১০ কোটি টাকা।
কারণ এ সময়ে দৈনিক উৎপাদনের গড় ২০ কোটি লিটার। অর্থাৎ ২৫ কোটি লিটার পানি উৎপাদন কম হয়েছে।
ঢাকা ওয়াসার আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহক সংখ্যা এবং পানির দামের নির্ধারিত মূল্য হিসাব-নিকাশ করে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।
এমন পরিস্থিতি হওয়ার পরও সরবরাহ লাইন স্থাপনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই ঢাকা ওয়াসার।
কয়েক দফা প্রকল্প গ্রহণের আওয়াজ তুললেও বাস্তবতা হচ্ছে এখনো কোনো প্রকল্পের অনুমোদন মেলেনি। অথচ মূল প্রকল্পের অনুষঙ্গ হিসাবে সরবরাহ লাইন রাখা দরকার ছিল।
এ প্রকল্প ঘিরে শুরু থেকেই নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অনিয়ম চিহ্নিত করতে অনুসন্ধান শুরু করে।