‘বিমানটা উড়লে আরও ভালো লাগত’

পাসপোর্ট, ভিসা, টিকিট, বোর্ডিং পাস ছাড়াই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কুয়েত এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে উঠে পড়া জোনায়েদ মোল্লা (১০)  বলেছে, ‘বিমানে ওঠার শখ করে বাড়ি থেকে ঢাকা গেছি। বিমানে উঠতে পারছি, খুশি হইছি। ভাবছিলাম বিমানটা উড়বো। বিমানটা উড়লে আরও ভালো লাগতো।’

বুধবার এক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে সে এসব কথা বলেন।

জোনায়েদ আরও বলে, ‘বাড়ি না বলে মুখসুদপুর গেছি। ঢাকার বাসে উঠছি। সায়েদাবাদ গিয়ে এয়ারপোর্টের গাড়িতে উঠছি। এয়ারপোর্টে গিয়ে নামছি। ওপরের তলায় (বিমানবন্দরের দ্বিতীয় তলায় বহির্গমন) পুলিশ উঠতে দেয় নাই। তারপর ওই পাশ দিয়ে ঘুরে অন্য ছাদের ওপর দিয়ে দুই তলায় যাই। দুই তলায় যেখান দিয়ে চেক করে, সেখানে আমাকেও চেক করে ভেতরে ঢুকাইছে। চেক করার সময় তেমন কিছু বলেনি। শুধু বলছে, তুমি একা আসছ, না তোমার সঙ্গে কেউ আসছে? তখন আমি বলছি, সঙ্গে লোক আছে।’

‘চেক করার পর বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকে বিমানের কাছে যাই। তখন একজন পুলিশ আটকাইছিল। এসময় সেখান দিয়ে অনেক লোক যাচ্ছিল, তাদের সঙ্গে মিশে আমিও একটা রুমে গিয়ে বসছি। তারপর সবার সঙ্গেই বিমানের ভেতর চলে গেছি। এক ঘণ্টার মতো বিমানে বইসা ছিলাম। তারপর একজন আইসা বলে এটা আমার সিট। তুমি বইছো কেন। তারপর আমি উঠে গেছি।’

‘এর মধ্যে একজন জানতে চাইছে, একাই গেছি না সঙ্গে কেউ আছে। আমি কইছি অন্য কেউ আছে আমার সঙ্গে। তখন পাইলটের সঙ্গে থাকে এমন একজনকে সবাই ডাকছে। তারপর তিনি আসলে যাত্রীরা বলে, এই বাচ্চার সঙ্গে যে লোক আসছে, তাকে খুঁজে পাচ্ছে না। তখন আমি একজনের নাম বলছি। তখন তারা খুঁজে পায়নি। পরে বিমান থেকে নামায় দিছে।’

শিশু জোনায়েদ আরও বলে, ‘বিমানবন্দরে ভয় পাইনি। তবে পুলিশ থানায় নিয়ে যাওয়ার পর ভয় পাইছি। এক হাজার টাকা নিয়ে বের হইছি। সব টাকা খরচ হয়ে গেছে। অনেক কিছুই খাইছি।’

এর আগে গত সোমবার দিবাগত রাতে পাসপোর্ট, ভিসা, টিকিট ছাড়া একাই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কুয়েত এয়ারওয়েজের (কেইউ-২৮৪) একটি ফ্লাইটে উঠে যায় জোনায়েদ।

এ ঘটনায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এছাড়া এ ঘটনায় বুধবার বিমানবন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১০ জনকে বিমানবন্দর থেকে প্রত্যাহার করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। একই সঙ্গে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও বেবিচক সূত্র জানিয়েছে।

শিশু জোনায়েদ মোল্লার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মকসুদপুরে। ঘটনার পর তার গ্রামের বাড়িতে খবর পাঠানো হয়েছিল। পরে গতকালই তার চাচা মো. ইউসুফ মোল্লা থানায় আসেন। তার জিম্মায় তাকে দেওয়া হয়েছে।

source:  bd protidin

এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে ফেইসবুক পেজটি লাইক দিন এবং এই রকম আরো খবরের এলার্ট পেতে থাকুন

 আরো পড়তে পারেন:  

Loading...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *