মুনাফা বিদেশে নেয়ার নীতিমালা শিথিল

 

বাংলাদেশ থেকে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) লভ্যাংশ বিদেশে নেয়ার নীতিমালা আরও শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের বিপরীতে অর্জিত লভ্যাংশ সহজে বিদেশে পাঠানো যাবে।

এসব অর্থ বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে যাচ্ছে, যা আউটওয়ার্ড রেমিটেন্স হিসেবে গণ্য হবে। অর্জিত মুনাফা দেশে পুনরায় বিনিয়োগও করা যাবে।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এর আগে দেশ থেকে বিদেশি বিনিয়োগের অর্থ এবং প্রবাসীদের বিনিয়োগ করা অর্থ বিদেশে নেয়ার নীতিমালা শিথিল করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, দেশে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ সহজ করা এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাপারে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের নীতিমালা শিথিল করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবেই এসব শিথিলতা আনা হচ্ছে।

অপর একটি সূত্র জানায়, বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের নীতিমালা এতটাই বেশি শিথিল করা হচ্ছে যে, এর ফলে দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে নেয়ার পথ সহজ হবে। এতে দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে যাবে।

আগের নিয়ম অনুযায়ী বিদেশি বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগ থেকে অর্জিত মুনাফা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে বিদেশে নিতে পারতেন। পরে তা শিথিল করে শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই বিদেশে নেয়ার বিধান চালু করা হয়। নতুন নিয়মে বাংলাদেশ থেকে বিদেশি বিনিয়োগের অর্জিত মুনাফা বিনিয়োগকারী ছাড়াও তার প্রতিনিধি, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের কাছে পাঠানো যাবে।

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে দুই ধরনের অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে হয়। এর মধ্যে একটি টাকা হিসাব এবং অপরটি বৈদেশিক মুদ্রা হিসাব। বিদেশি বিনিয়োগ প্রথমে বৈদেশিক মুদ্রা হিসেবে রাখতে হবে। পরে সমপরিমাণ অর্থ টাকা হিসেবে স্থানান্তর করতে হবে। সেখান থেকে খরচ করতে হবে। বিনিয়োগ থেকে অর্জিত মুনাফা টাকা হিসেবেই থাকবে। বিদেশে পাঠাতে হলে মুনাফার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের বৈদেশিক মুদ্রা হিসেবে স্থানান্তর করা যাবে। পরে কিছু শর্ত সাপেক্ষে এসব মুদ্রা বিদেশে নেয়া যাবে।

এর মধ্যে অর্জিত মুনাফা বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাকে এ মর্মে সন্তুষ্ট হতে হবে যে, এতে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। প্রয়োজন মনে করলে তিনি ঘটনাটি তদন্ত করেও নিশ্চিত হতে পারবেন। এর সমুদয় রেকর্ড ব্যাংকে রাখতে হবে। বিষয়টি পরে বাংলাদেশ ব্যাংকে জানাতে হবে। এ অর্থ আউটওয়ার্ড রেমিটেন্স বা বাংলাদেশ থেকে বিদেশে বৈদেশিক মুদ্রা গিয়েছে হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে।

বর্তমানে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নামে, বিদেশে বা দেশে বসবাসরত বিদেশি নাগরিক এবং বিদেশে নিবন্ধিত বিদেশি সংস্থাগুলোর বাংলাদেশে বা বিদেশে অবস্থানরত প্রতিনিধি, বিদেশি মিশন এবং তাদের প্রবাসী কর্মচারীদের নামে বৈদেশিক মুদ্রা হিসাব খোলার সুযোগ রয়েছে।

এসব হিসাবের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে দেশ থেকে যেমন বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানো যায়, তেমনি বিদেশ থেকে দেশে আনাও যায়। এসব হিসাবের মাধ্যমে যেসব বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসবে সেগুলো দিয়ে প্রচলিত নিয়ম মেনে দেশে শেয়ার ক্রয় করা যাবে বা দেশে বিনিয়োগ করতে পারবে।

 

সূত্র: যুগান্তর

এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে ফেইসবুক পেজটি লাইক দিন এবং এই রকম আরো খবরের এলার্ট পেতে থাকুন

 আরো পড়তে পারেন:  

Loading...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *