যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের হামিদপুর পশ্চিমপাড়ায় আসাদুজ্জামান নামের এক ব্যক্তির বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ করা হয়েছে, তারই নির্দেশে বৃহস্পতিবার দুপুরে আকস্মিকভাবে শতাধিক যুবক বুলডোজার নিয়ে ওই বাড়িতে হাজির হন। এরপর লুটপাট করে বাড়ির আটটি ঘর ভেঙে চুরমার করে তারা। পরে খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হলে ওইসব যুবক সেখান থেকে চলে যায়। এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
ভুক্তভোগী আসাদুজ্জামানের অভিযোগ, বাওরপাড়ে তার দু’একর ৯৭ শতক জমি ঝিনাইদহ শিল্প ব্যাংকের কাছ থেকে নিলামে কেনেন ১৯৯৩ সালে। এর আগে ওই জমি ছিল বাঘারপাড়ার নূরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির। তিনি সেখানে খামার করেছিলেন ওই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে। টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ব্যাংক নিলামে তা বিক্রি করে দেয়।
১৯৯৩ সালে নিলামে কেনার পর থেকেই তিনি ওই জমি ভোগদখল করে আসছেন। তিনি আরও বলেন, নূরুল ইসলাম মূলত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের বেয়াই। সেই কারণে কয়েক বছর আগে থেকে ওই জমি শহিদুল ইসলাম মিলন দখলের চেষ্টা করে আসছেন। জমি থেকে তাদেরকে উচ্ছেদের চেষ্টা করছেন তিনি। সর্বশেষ, বৃহস্পতিবার দুপুরে ১০ থেকে ১২ টি মাইক্রোবাসে করে শতাধিক সন্ত্রাসী তাদের বাড়িতে লাঠি, হকিস্টিক নিয়ে হাজির হয়। তারা মুহূর্তের মধ্যে ঘর খালি করে দিতে বলে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সন্ত্রাসীরা তাদের ঘরে ঢুকে লুটপাট শুরু করে। সোনার গহনাসহ নগদ টাকা পয়সা নিয়ে বাকি আসবাবপত্র বাইরে ফেলে দেয়। গোয়াল থেকে গরু-ছাগল খুলে নেয়।এরপর বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভাঙতে শুরু করে।ওইসময় পুলিশকে ফোন দেয়ার চেষ্টা করলে বাড়ির সকলের কাছ থেকে ফোন কেড়ে ভেঙে ফেলে। একে একে আটটি ঘর ভেঙে চুরমার করে দেয়। একপর্যায়ে স্থানীয়রা খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান,জমি কেনার সময় ভুলবশত ওই জমির দাগ নম্বর এসএ ১০৯ এর পরিবর্তে এসএ ১৬১৯/২০ হয়ে যায়। এই ভুল সংশোধনের জন্য আদালতে মামলা চলমান। এটিকে পুঁজি করে শহিদুল ইসলাম মিলন ওই জমি দখলের চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে তিনি পুলিশ প্রশাসনসহ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন,এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমি নিজে ওইস্থানে গিয়েছি কোনো প্রমান কেউ দেখাতে পারবে না। আমার কোনো লোকজন সেখানে যায়নি। যার জমি তিনিই সেখানে লোক পাঠিয়েছে। কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, ৯৯৯ কল পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।