বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের বক্তব্য
ঘিরে গণমাধ্যমে যে আলোচনা তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে রাষ্ট্রপতির প্রেস উইং।
‘মীমাংসিত বিষয়ে নতুন করে কোন বিতর্ক সৃষ্টি না করার জন্য,’ রাষ্ট্রপতি সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার রাষ্ট্রপতির প্রেস উইং
থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ”সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ইস্যুতে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন মিডিয়ায় যে প্রচারণা চালানো হয়েছে তা জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে।”
”এ বিষয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে সুস্পস্ট বক্তব্য হচ্ছে, ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে প্রধানমন্ত্রীর
পদত্যাগ ও দেশত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং বর্তমান
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাংবিধানিক বৈধতার উপর যত ধরনের প্রশ্ন জনমনে উদ্রেক হয়েছে
সেগুলোর যাবতীয় উত্তর স্পেশাল রেফারেন্স নং-০১/২০২৪ এ মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের
আপিল বিভাগের গত ০৮ আগস্ট, ২০২৪ এর আদেশে প্রতিফলিত হয়েছে”।
বিবৃতিতে বলা হয়,” সংবিধানের ১০৬
অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি গত ৮ই আগস্ট সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত
চাওয়ার প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ এই মতামত দিয়েছিলেন।”
”তাই মীমাংসিত এই বিষয়ে নতুন করে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তীকালীন
সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত করা থেকে বিরত থাকতে রাষ্ট্রপতি সকলের প্রতি
আহ্বান জানিয়েছেন।”
সম্প্রতি মানবজমিন পত্রিকার সম্পাদকের কাছে দেয়া সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দাবি করেছেন শেখ হাসিনা ৫ই অগাস্ট তার কাছে পদত্যাগপত্র দিয়ে যান নি। সোমবার ওই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হওয়ার পরে দেশজুড়ে আলোচনা শুরু হয়।
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় সোমবার আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করেছেন।
তিনি বলেন, “উনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পান নাই এটা হচ্ছে মিথ্যাচার, এবং এটা হচ্ছে ওনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল। কারণ উনি নিজেই ৫ই অগাস্ট তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বলেছেন যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওনার কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন”।
সোমবার ওই বক্তব্যের জবাবে আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের আরো বলেছেন, “রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্য শপথ ভঙ্গের সামিল। তিনি তার বক্তব্যে অটল থাকলে তিনি পদে থাকতে পারেন কিনা তা উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আলোচিত হতে পারে।’
“যখন ফ্যাসিস্টের শক্তিরা বিভিন্ন জায়গায় যখন মাথাচার দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে তখন হঠাৎ করে আড়াই মাস পরে কেন এই কথা বললেন রাষ্ট্রপতি, এখন সেই প্রশ্ন আসাটাও স্বাভাবিক” বলছিলেন মি. নজরুল।
এ নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে এই ব্যাখ্যা দেয়া হলো।