বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের একটি বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
তার বক্তব্যের পর বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে সরকারের ব্যবহৃত কৌশল, দলটির নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের ন্যায্যতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা-সহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে বিভিন্ন মহলে নতুন করে চর্চা হতে দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা ড. আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্য আসলে ঠিক কী অর্থ বহন করছে?
নির্বাচনে আনার জন্য বিএনপি নেতাদের কারাগার থেকে মুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলে সম্প্রতি বাংলাদেশের স্থানীয় একটি গণমাধ্যমকে জানান ড. রাজ্জাক।
তিনি বলেন, “তারা (বিএনপি) বলুক যে নির্বাচনে আসবে, সবাইকে আমরা কালকে ছেড়ে দিবো।”
দলটির নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ড. রাজ্জাক আরও বলেন, “এ ছাড়া আমাদের জন্য কোনো গত্যন্তর ছিল না, কোনো অলটারনেটিভ ছিল না। যেটা করেছি, আমরা চিন্তাভাবনা করে করেছি।”
তার এই বক্তব্য প্রচার হওয়ার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে নানান প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্যে সরকারের “গোমর ফাঁস” হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
“তার বক্তব্যে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, কোন অপরাধে নয়, বরং পথের কাঁটা সরাতে পরিকল্পিতভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন মিস্টার রিজভী।
তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিএনপিকে এ ধরনের কোনও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কি-না, সেটি “জানা নেই” বলে বিবিসি বাংলাকে বলেছেন দলের এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
যদিও ড. রাজ্জাকের বক্তব্য “একেবার অমূলক নয়” বলে মনে করছেন বিএনপির আরেক নেতা ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
“সরকার ও দলের এতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে উনি অমূলক কোন কথা বলবেন বলে আমার মনে হয় না”, বিবিসি বাংলাকে বলেন মিস্টার কামাল।
বিএনপি যেসব নেতারা এখন কারাগারে রয়েছেন, তাদেরকে এ ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।
“এ ধরনের প্রস্তাব যে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে, তার একটি বড় প্রমাণ সদ্য সাবেক বিএনপি নেতা শাহজাহান ওমর”, বিবিসি বাংলাকে বলেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
উল্লেখ্য, যে মোহাম্মদ শাহজাহান ওমর গত চার দশকেরও বেশি সময় বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন সম্প্রতি কারাগার থেকে বেরিয়ে তিনি দলত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
ক্ষমতাসীনদের হয়ে বর্তমানে তিনি ঝালকাঠি-১ আসনে নির্বাচনও করছেন।
অন্যদিকে, ড. রাজ্জাকের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছে বলে দলটির নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
“তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা তার ব্যক্তিগত মত। এ ধরনের কোনও প্রস্তাব আমাদের সরকার দেয়নি, দলও দেয়নি।”, গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
প্রয়োজন মনে করলে দল ড. রাজ্জাকের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
যদিও মঙ্গলবার পর্যন্ত এ ব্যাপারে দলের শীর্ষ পর্যায়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
“এ ব্যাপারে দল এখনও কোনও আলোচনা করেনি। সবাই এখন নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত”, বিবিসিকে বলেন মিস্টার নাছিম।
এদিকে, ড. রাজ্জাকের বক্তব্য রাজনৈতিকভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
“উনার বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকৃত সত্যটা বের হয়ে আসলো”, বিবিসি বাংলাকে বলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ।
কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য সত্যি হয়ে থাকলে সেটি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে “প্রশ্নবিদ্ধ” করবে বলে মনে করছেন আরেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. রাশেদা রওনক খান।
আর সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বিবিসি বাংলাকে বলেন, “সরকার তার ক্ষমতাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যেভাবে ব্যবহার করছে, তাতে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহার করা হচ্ছে।”
কৃষিমন্ত্রীর ব্যাখ্যা
নিজ দলসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনার মুখে সোমবার নিজ বক্তব্যের বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
“আমার বক্তব্য এই যে, আওয়ামী লীগ আন্তরিকভাবে চেয়েছে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। এ কথাটা বলতে গিয়ে আমি সেদিন কিছু কথাবার্তা বলেছি”, বলেন মিস্টার রাজ্জাক।
তিনি আরও বলেন, “বহুবার আমি বলেছি বিএনপি অবশ্যই একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাদের নির্বাচনে আমরা আনতে চাই, কিন্তু সংবিধানের বাইরে আমাদের যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই।”
“আমার কথার এসেন্সটাই (সারমর্ম) ছিল, প্রধানমন্ত্রী ও আমরা সব সময় চেয়েছি, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। সেটা বলতে গিয়ে বলেছি আমরা কতোদূর পর্যন্ত… নির্বাচন কমিশনার কথা বলেছি।….আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।”
বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের ব্যাপারে দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, “আমি বহুবার বলেছি বিএনপি নেতাদের হুকুম ছাড়া কোনো কর্মী কি বাসে আগুন দেবে?… যারা সন্ত্রাস করছে, সন্ত্রাসের হুকুম দিচ্ছে, সন্ত্রাসের পরিকল্পনা করছে, লন্ডন থেকে যারা নির্দেশ দিচ্ছে, এই সন্ত্রাসের জন্যই সরকার বাধ্য হয়েছে গ্রেফতার করতে।”
নির্বাচনে অংশ নিলে বিএনপি নেতাকর্মীদের ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মিস্টার রাজ্জাক গণমাধ্যমকে বলেন, বিএনপি নেতাদের তাৎক্ষণিকভাবে ছেড়ে দেওয়া হবে, বিষয়টি এমন নয়। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হতো।
“তারা (বিএনপি) যদি নির্বাচনে আসত, নির্বাচনে আসলে স্বীকার করে নিল। তখন সন্ত্রাস করার দরকার নেই। সহিংসতা-আগুন সন্ত্রাসের দরকার নেই। তখন এমনিতেই শান্তি হতো”, বলেন ড. রাজ্জাক।
আগের যত ঘটনা
গত ২৮শে অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। সমাবেশ শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাথে সংঘর্ষ শুরু হলে সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। তাছাড়া একজন পুলিশ সদস্যও সেদিন মারা যান।
এ ঘটনার পর বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও আটক করতে শুরু করে পুলিশ।
এই তালিকায় দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা যেমন ছিলেন, তেমনি তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও ছিলেন।
এমন অবস্থায় নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে দফায় দফায় হরতাল-অবরোধ ঘোষণা করতে থাকে বিএনপি।
এই কর্মসূচি পালনের সময় বেশ কয়েকটি জেলায় পুলিশ ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
তাছাড়া সারা দেশে ট্রেনসহ কয়েকশো যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
এই আগুনে বেশ কয়েকজন মারাও যায়।
এই পরিস্থিতিতে বিএনপির ধরপাকড় আরও জোরদার হতে দেখা যায়।
গত দুই মাসে সারাদেশে দলটির প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।
বর্তমানে দলটির মহাসচিবসহ অধিকাংশ শীর্ষ নেতা কারাগারে রয়েছেন।
জাতীয় নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলোর ওপর ধরপাকড়, গ্রেফতার, মামলা ও সাজা দেয়ার বিষয়ে দেশ- বিদেশে নানা সমালোচনা হতে থাকে।
বিএনপি এখনও দাবি করছে যে সরকার “পরিকল্পিতভাবে” তাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে।
“সরকার এটা করছে, যাতে তাদের পথের কাঁটা দূর হয়।” বলেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিবিসি বাংলাকে তিনি আরও বলেন “তারা যেন আবারও একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতায় যেতে পারে, সেজন্যই আমাদের নেতাকর্মীদের জেলে ভরা হচ্ছে।”
এদিকে, নভেম্বরের মধ্যভাগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করা বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো এই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না-করার ঘোষণা দেয়।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার জন্য জোরালো তাগিদ দিতে থাকে পশ্চিমা দেশগুলো।
ফলে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখানোটাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়।
এমন পরিস্থিতিতে সাবেক বিএনপি নেতাদের নেতৃত্বে বেশ কিছু নতুন দল নির্বাচনকে ঘিরে সামনে আসে।
এসব দলের মধ্যে আলোচনায় ছিল ২০২৩ সালে নিবন্ধন পাওয়া তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) এবং বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি।
দলগুলো আওয়ামী লীগের সমর্থনপুষ্ট ‘কিংস পার্টি’ হিসেবেও পরিচিত হয়ে উঠে।
এটাও গুঞ্জন উঠেছিল যে, বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচনে যেতে সাবেক বিএনপি নেতাদের নেতৃত্বে নতুন “বিরোধী পার্টি” গঠনের পরিকল্পনা করছে ক্ষমতাসীনরা।
এসব পার্টিতে বিএনপির অনেক শীর্ষনেতা যোগদান করবেন, এই মর্মে তখন আওয়ামী লীগে নেতাদের দেওয়া বক্তব্য এই গুঞ্জনকে আরও উস্কে দেয়।
গত ৬ই নভেম্বর তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মেজর হাফিজের নেতৃত্বে আসছে ‘নতুন বিএনপি’।
আর গত ২২শে নভেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “ফুল ফুটতে শুরু করেছে, শত ফুল ফুটবে।”
তাদের এসব কথার ফলে বিএনপিতে ভাঙনের গুঞ্জন ওঠে। যদিও শেষ পর্যন্ত দলটিতে ভাঙন দেখা যায়নি।
কেবল বিএনপি-র অল্প কয়েকজন নেতাকর্মীকে দলত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নিতে দেখা গেছে।
“বিএনপিকে ভাঙার জন্য সরকার নানান কৌশল অবলম্বন করেছে।”, বিবিসি বাংলাকে বলেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল।
তিনি আরও বলেন, “অনেক নেতাকে প্রলোভনও হয়তো দেখানো হয়েছে। কিন্তু শেষে তাদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।”
আওয়ামী লীগের কৌশল
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু বিষয় নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
এসব আলোচনার বিষয়ের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে – বিএনপিকে নির্বাচনে আনার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের অবস্থান।
ক্ষমতাসীনরা বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে চায় বলে যে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিলো, ড. রাজ্জাকের বক্তব্যের পর সেটি আর টিঁকবে না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. রাশেদা রওনক খান।
“উনার কথায় বোঝা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগ সত্যিই বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে চেয়েছিল এবং তারা হয়তো সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করেছে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন মিজ খান।
আরেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ অবশ্য বিষয়টিকে একটু ভিন্নভাবে দেখছেন।
তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “আওয়ামী লীগ নিজেও এটা জানে যে, বিএনপি অংশ না নিলে এই নির্বাচন রাজনৈতিকভাবে বৈধতা পাবে না। যেমন বৈধতা পায়নি, আশির দশকে করা সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদের নির্বাচন।”
আর এ কারণেই বিএনপিকে “শর্ত মেনে” নির্বাচনে আনতে চেয়েছে আওয়ামী লীগ, এমনটাই মনে করছেন মি. আহমেদ।
“তারা বিএনপিকে আনতে চেয়েছে, তবে শর্ত সাপেক্ষে। শর্তটা হচ্ছে, এই সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা বিএনপি মানেনি”, বিবিসিকে বলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ।
বিএনপিকে ভাঙার যে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল, সে বিষয়টিও ড. রাজ্জাকের বক্তব্যে কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে বলে মনে করছেন মিস্টার আহমেদ।
“এমন একটা চেষ্টা যে ছিল, সেটি বোঝাই যাচ্ছে। তাদের প্রস্তাবে বিএনপির অধিকাংশ নেতা হয়তো রাজি হয়নি। কিন্তু যে অল্প দু-এক জন রাজি হয়েছে, তারা তো এখন নির্বাচনে আছেই।”
শাহজাহান ওমর ছাড়াও বিএনপির আরেক নেতা বিস্ফোরক মামলায় জামিন পাওয়ার পর নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তিনি হচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান। বিএনপি তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে।
এদিকে, বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে ড. রাজ্জাকের বক্তব্যে বাংলাদেশের বিচারবিভাগের স্বাধীনতার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
“বিচার বিভাগ আসলে কাদের কথায় চলে, তাঁর বক্তব্যে সেটি আবারও পরিষ্কার হয়েছে।”, বিবিসি বাংলাকে বলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ।
এ বিষয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বিবিসি বাংলাকে বলেন, “জনস্বার্থে প্রয়োজন মনে করলে সরকার যে কাউকেই গ্রেফতার করতে পারে। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে সে ক্ষমতা তাদের দেওয়া হয়েছে।”
“কিন্তু যত্রতত্র ভাবে এই আইনের ব্যবহার করার অর্থ হচ্ছে দেশে আইনের শাসন একেবারে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।”, বিবিসি বাংলাকে বলেন মিস্টার মালিক।