সরকারের বিরোধিতা নয়, সরকারের কিছু ভুল পদক্ষেপ বা ভুল কার্যক্রমের বিরোধিতা বা সমালোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না।
একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় জামিনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে সোমবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ পুলিশ প্রতিবেদন না দেওয়া পর্যন্ত তাকে জামিন দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, আহসানুল করীম, এ ম কে রহমান, মোহাম্মদ হোসেন ও শিশির মনির।
আদেশের পর আহসানুল করিম বলেন, তাকে (জেড আই খান পান্না) সম্পূর্ণভাবে হয়রানি করার জন্য এ মামলা করেছে। আমি মনে করি না এখানে রাষ্ট্র যারা ক্ষমতার সঙ্গে জড়িত তাদের এখানে কোনো প্রভাব আছে। অতি উৎসাহী ব্যক্তি এ মামলাটা করেছেন। তিনি কোটাবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের পক্ষে সব সময় ফ্রন্টলাইনার ছিলেন। সব সময় তৎকালীন সরকারের সমালোচনা করেছেন।
আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, আমি যতুটুক খোঁজ পেয়েছি, এই যে মামলাটা হলো এটা মুলাদীর (বরিশাল) লোকাল পটিলিক্স। সেখানে একজন আইনজীবীও আছে দুর্ভাগ্যবশত। পংকজ দেবনাথের(সাবেক সংসদ সদস্য) বিরুদ্ধে বাদীর কিছু অভিযোগ ছিলো। তারে বলছে পংকজ দেবনাথের বিরুদ্ধে মামলা হবে। বাদী লেখা পড়া কিছু জানে না। ওখানে কি কি নাম ঢুকিয়েছে। আর সে সাইন দিয়ে আসছে। এটা শুনছি। সত্যি কি মিথ্যা আমি জানি না। মুলাদীর রাজনীতি বা বৃহত্তর বরিশালের রাজনীতির সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। সারা বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে আমার সম্পর্ক। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক। যদিও আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য নই।
সরকারের বিরোধীতা যেটা করছিলেন সেটা কি এখনো চালিয়ে যাবেন কিনা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জেড আই খান পান্না বলেন, সরকারের বিরোধিতা করি নাই। সরকারের কিছু ভুল পদক্ষেপ, ভুল কার্যক্রমের আমি বিরোধিতা করেছি, সমালোচনা করেছি।
গত ১৭ অক্টোবর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় এ মামলা হয়েছে। এ মামলায় আসামি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ ১৮০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আইনজীবী জেড আই খান পান্না এ মামলার ৯৪ নম্বর আসামি।
গত ১৯ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আহাদুল ইসলাম নামে একজনকে গুলি ও মারধর করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়। গত ১৭ অক্টোবর মামলাটি করেন আহাদুলের বাবা মো. বাকের।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া বাজারের পশ্চিমে শুক্কুর আলী গার্মেন্টস মোড়ে ছাত্রজনতার আন্দোলনে অংশ নেন বাদী মো. বাকেরের ছেলে মো. আহাদুল ইসলাম। এ সময় পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন এবং ১৪–দলীয় জোটের নেতা–কর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ ককটেল ও সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটান এবং আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নসাৎ করার জন্য হত্যার উদ্দেশ্যে এ গুলি চালানো হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। সেখানে আহাদুল ইসলাম বাঁ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে যান। সন্ত্রাসীরা তাঁকে পরে আরও লাঠিপেটা করেন। আহাদুলকে প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিক, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।