গত এক সপ্তাহে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে ৩০ কোটি ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আইএমএফের হিসাব পদ্ধতিতে মঙ্গলবার দিন শেষে রিজার্ভ নামে ২১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারে। এক সপ্তাহ আগে রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ডলার সংকটের কারণে আমদানির দায় মেটাতে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রির কারণে গত এক সপ্তাহে রিজার্ভ কমেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে রেকর্ড সাড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া রেমিট্যান্সেও ভাটা পড়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে এক বৈঠকে গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর রিজার্ভ যেন আর না কমে সে বিষয়ে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
জানতে চাইলে আহসান এইচ মনসুর সমকালকে বলেন, সামনে নির্বাচন তাই অর্থনীতিতে এখনই বড় ধরনের সংস্কার করতে চাইবে না সরকার। অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে তিনি আপাতত স্বল্পমেয়াদী কিছু পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। বড় উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে ক্রমন্বয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে আসছে। তবে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ধরে রাখার স্বার্থে রিজার্ভ আর কমতে দেওয়া ঠিক হবে না। এ জন্য রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ানোর উপর জোর দিতে হবে। একই সঙ্গে বিদেশি উৎস থেকে সহজ শর্তে ঋণের অনুসন্ধান চালাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি যা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ দেওয়া বন্ধ করতে হবে। রাজস্ব আহরণ বাড়িয়ে সরকারকে ব্যয় করতে হবে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী অর্থনীতির স্থিতিশীলতায় কর–জিডিপির অনুপাত বাড়াতে রাজস্ব প্রশাসনে বড় ধরনের সংস্কার করতে হবে। ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে হবে। একই সঙ্গে ব্যাংকিং খাত ও সরকারি অর্থ ব্যয়ে আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।