নরওয়ের রাজধানী অসলোতে ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলিদের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৯৯৩ সালে এবং ওই চুক্তির জন্য তখনকার পিএলও নেতা ইয়াসির আরাফাত এবং তৎকালীন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আইজ্যাক রবিন নোবেল শান্তি পুরষ্কারও পেয়েছিলেন।
ওই চুক্তির ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের মধ্যে যে বোঝাপড়া হয়েছিলো তাহলো- ফিলিস্তিনিরা স্বশাসনের আংশিক অধিকার পাবে এবং ইসরায়েল প্রথমে পশ্চিম তীরের জেরিকো এবং তারপর গাজা থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেবে।
এর পরিবর্তে, ইসরায়েলি রাষ্ট্রের বৈধতা স্বীকার করে নেবে পিএলও।
কয়েক দশকের সংঘাতের শেষে এই সমঝোতাকে তখনকার প্রেক্ষাপটে বিরাট সাফল্য হিসেবে বিবেচনা করা হলেও বাস্তবতা হলো- ওই চুক্তির তিন দশক পরেও এখন ‘যুদ্ধাবস্থা’ বিরাজ করছে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের ইসরাইলের ভূখণ্ডের ভেতরে আকস্মিক কিন্তু ব্যাপক এক হামলার কারণে।
সবশেষ খবর অনুযায়ীসাতশোর বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছে হামাসের হামলায় ও জিম্মি করা হয়েছে বেশ কিছু ইসরায়েলিকে। গাজার কাছে ইসরায়েলি ভূখণ্ডেই লড়াই চলছে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের।
ঘটনার পর থেকে গাজা উপত্যকায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর অবস্থান লক্ষ্য করে অব্যাহতভাবে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
কিন্তু প্রশ্ন হলো অসলো শান্তি চুক্তির পর থেকে গত তিন দশকে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট এ পর্যায়ে এলো কী করে?
চুক্তি সত্ত্বেও যেসব বিষয়ে সমঝোতা কখনো হয়নি
অসলোতে শান্তি চুক্তি হলেও কয়েকটি বিষয়ে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল কখনো কোন সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি এবং এগুলোকে কেন্দ্র করেই বারবার সংঘাত সহিংসতা হয়েছে উভয় পক্ষের মধ্যে।
এগুলো হলো:
১. ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের বিষয়ে কী হবে
২.পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি থাকবে কি-না
৩. জেরুসালেম উভয় পক্ষই শেয়ার করবে কি-না
৪. এবং সম্ভবত সবচেয়ে জটিল প্রশ্ন হলো- ইসরায়েলের সাথেই একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র তৈরি হবে কি-না
এখানে বলে রাখা ভালো যে ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় ইসরায়েল পূর্ব জেরুসালেম, পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকা দখল করেছিলো।
এরপর বছরের পর বছর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। দখলকৃত এলাকা থেকে ইসরায়েলকে সরে আসার জন্য ২৪২টি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
অসলো শান্তি চুক্তির আগে ১৯৮৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়কালকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রথম ফিলিস্তিনি সংগ্রামের সময়কাল বা ‘প্রথম ইন্তেফাদা’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
অসলো চুক্তির পর কী হলো
নরওয়ের রাজধানী অসলোতে ১৯৯৩ সালে অত্যন্ত গোপনে এক আপোষ মীমাংসার মধ্য দিয়ে সমঝোতায় স্বাক্ষর করেছিলো দুই পক্ষ, যা অসলো চুক্তি নামে পরিচিতি পেয়েছিলো। কিন্তু সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস তখনি এ চুক্তির বিরোধিতা করেছিলো।
এ চুক্তিও কাঙ্ক্ষিত সফলতা এনে দিতে পারেনি বরং উভয়পক্ষ একে অপরকে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করে প্রায়শই হামলা-পাল্টা হামলায় লিপ্ত হয়েছে।
তবে ওই চুক্তির আওতায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়েছিলো এবং কথা ছিলো পরবর্তী পাঁচ বছর এ কর্তৃপক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবে সংঘাত নিরসনে আলোচনা চালিয়ে যাবে ও অন্য বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করবে।
পরে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের জায়গায় একটি নির্বাচিত সরকার সেখানকার ক্ষমতায় আসার কথা, যারা পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকা মিলিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। ফিলিস্তিনিদের দাবি ছিল, তাদের এই স্বাধীন রাষ্ট্রের রাজধানী হবে পূর্ব জেরুসালেম, যদিও এই বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কখনো সমঝোতা হয়নি।
বাস্তবতা হলো তিন দশক পরে এসেও এখন সেই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ রয়েই গেছে- যার নেতৃত্বে আছেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
একই সাথে শান্তি চুক্তি যখন স্বাক্ষরিত হয় তখন পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি ছিলো এক লাখ দশ হাজার। এখন সেই সংখ্যা সাত লাখ।
আবার ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ থাকা এলাকায় এখন যাদের বয়স ৩৫ বছর তারা কখনো ভোট দেয়া বা নির্বাচিত সরকার গঠনেরও সুযোগ পায়নি।
বরং পূর্ব জেরুজালেম, গাজা এবং পশ্চিম তীরে যে ফিলিস্তিনিরা এখন থাকেন, তাদের সঙ্গে ইসরায়েলিদের উত্তেজনা প্রায়শই চরমে উঠতে দেখা যায়।
শান্তি চুক্তিতে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিত্ব করেছিলো প্রয়াত ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বাধীন পিএলও পার্টি। কিন্তু ২০০৭ সাল থেকে গাজা শাসন করে আসছে কট্টরপন্থী ফিলিস্তিনি দল হামাস।
ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের অনেকবার যুদ্ধ হয়েছে। আবার গাজার সীমান্ত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েল এবং মিশর, যাতে হামাসের কাছে কোন অস্ত্র পৌঁছাতে না পারে।
ব্যর্থতার ধারাবাহিকতায় নানা উদ্যোগ
অসলো চুক্তির ধারাবাহিকতায় পরে ১৯৯৫, ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে বিভিন্ন জায়গায় উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
এরপরে ২০০০ সালে ক্যাম্প ডেভিডে তখনকার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক ও ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাতের মধ্যে আলোচনা হয়েছিলো প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের উদ্যোগে।
তবে সে বৈঠক ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলে শুরু হয় ফিলিস্তিনিদের নতুন সংগ্রাম, যা দ্বিতীয় ইন্তেফাদা হিসেবে পরিচিত। ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়কে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের এই সংগ্রাম কালকে ‘দ্বিতীয় ইন্তিফাদা’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এর মধ্যেও নানা ধরণের উদ্যোগ হয়েছে দু পক্ষের মধ্যে সমঝোতার জন্য। ২০০২ সালে সৌদি আরব একটি পরিকল্পনা নিয়েছিলো যা আরব লীগ অনুমোদন করেছিলো। কিন্তু সেটিও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থই হয়েছে।
পরে ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের যৌথ প্রচেষ্টায় একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়, যার লক্ষ্য ছিলো ২০০৫ সালের মধ্যে চূড়ান্ত আলোচনার পর্যায়ে আসা। কিন্তু তাও কার্যকর হয়নি।
২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ম্যারিল্যান্ডে একটি সম্মেলনের আয়োজন করেন। যাতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মাহমুদ আব্বাস অংশ নেন। এক ডজনের বেশি আরব দেশ তাতে অংশ নিয়েছিলো।
কিন্তু এর মধ্যেই গাজায় নির্বাচনে জিতে যাওয়া হামাসের তাতে কোন প্রতিনিধিত্ব ছিলো না।
এরপর ২০১০ সালে ওয়াশিংটনে আবারো শান্তি আলোচনার উদ্যোগ নেন তখনকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। কয়েক সপ্তাহে কিছু অগ্রগতির পর তাতেও অচলাবস্থা তৈরি হয়।
অর্থাৎ খুব একটা লাভ হয়নি। বরং ২০১৪ সালের এপ্রিলে দু পক্ষের মধ্যে সরাসরি আলোচনা শেষ পর্যায়ে এসে ভেস্তে যায়।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছিলো ফিলিস্তিনিদের তরফ থেকে।
এর আগে ওই বছরের মে মাসে হামাস ইসমাইল হানিয়াকে তাদের নতুন নেতা হিসেবে ঘোষণা দেয়।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র জানায় যে অধিকৃত এলাকায় ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের সাথে তারা আর আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে কোন বিরোধ দেখে না।
আমেরিকার হঠাৎ ঘুরে দাঁড়ানো
২০২০ সালে তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছিলেন তাদের জেরুসালেমকে ইসরায়েলের অবিভক্ত রাজধানী হিসেবেই উল্লেখ করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র তার দূতাবাসও জেরুসালেমে সরিয়ে নিয়েছে যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে ফিলিস্তিনিদের।
তিনি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র এবং পশ্চিম তীরের বসতি এলাকায় ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব করেছিলেন।
কিন্তু ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এ পরিকল্পনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ আখ্যায়িত করে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
তবে এর মধ্যেও বিভিন্ন সময়ে ছোট বড় নানা ধরণের সহিংসতা হয়েছে ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের মধ্যে।
পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের এক বছর পর ২০০৭ সালে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর ইসরায়েল ও মিসর গাজায় অবরুদ্ধ অবস্থা আরও জোরদার করে।
২০০২ সালের এপ্রিলেও ইসরায়েলি বাহিনী এখানে এক পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান চালিয়েছিলো যাতে কমপক্ষে ৫২ জন ফিলিস্তিনি এবং এবং ২৩ জন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়।
তবে বড় ধরণের সংঘাত হয়েছিলো ২০২১ সালের মে মাসে। সেবার এগার দিনের ভয়াবহ লড়াইয়ের পর মিশর, কাতার এবং জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় পরোক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সংঘাতের অবসান হয়েছিলো।
বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সম্পাদক জেরেমি ব্রাউনের মতে ২০০৮ সালের পর ২০২১ সালের মে মাসের সহিংসতা চতুর্থ বড় সহিংসতার ঘটনা। ওই সহিংসতায় আড়াইশো মানুষ নিহত হয়েছিলো। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে সেবারের সহিংসতার অবসান হয়েছিলো।
তবে ২০০৫ সালের পর সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনাগুলোর একটি হলো চলতি বছরের জুলাইয়ে অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরের শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের বড় আকারের সামরিক অভিযান।
২০২২ সালের অগাস্টেও তিনদিনের সংঘাতে নিহত হয়েছিলো ৪৪ জন।
শক্তি বেড়েছে হামাসের
এরপরও মাঝে মধ্যে বিক্ষিপ্ত হামলা – পাল্টা হামলার ঘটনায় নিয়মিতই ঘটেছে উভয় পক্ষের মধ্যে। এর মধ্যেই চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন আপাতত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিলো ইসরায়েল।
কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে শনিবার ইসরায়েলিদের ওপর বিস্ময়কর এক হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস, যার জের ধরে ইসরায়েল নিজেকে ‘যুদ্ধাবস্থায়’ আছে ঘোষণা করে পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে হামাস অবস্থান লক্ষ্য করে।
অবশ্য চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের একজন দূত টর ওয়েনেসল্যান্ড বিবিসির সাথে সাক্ষাতকারে জেরুসালেমে বলেছিলেন ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সহিংসতা জটিল পর্যায়ে উপনীত হয়েছে।
তিনি রক্তপাত বন্ধে দৃঢ় কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের আহবান জানিয়েছিলেন।
আর ওদিকে রামাল্লায় অসলো চুক্তির লিগ্যাসি বহন করে চলেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অফিস। তবে পশ্চিম তীরের কিছু এলাকা বিশেষ করে নাবলুস ও জেনিন শহরের নিয়ন্ত্রণ তারা আগেই হারিয়েছে।
এর পরিবর্তে শক্তি বেড়েছে হামাস ও ইসলামিক জিহাদের।
একশ বছরের পুরনো সংকট
ফিলিস্তিন একসময় ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের অধীন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমানদের পরাজয়ের পর ব্রিটেন ফিলিস্তিনের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
তখন ফিলিস্তিনে যারা থাকতো তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল আরব, সেই সঙ্গে কিছু ইহুদী, যারা ছিল সংখ্যালঘু।
কিন্তু যখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ব্রিটেনকে দায়িত্ব দিল ইহুদী জনগোষ্ঠীর জন্য ফিলিস্তিনে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার তখন এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করলো।
ইহুদীরা এই অঞ্চলকে তাদের পূর্বপুরুষদের দেশ বলে দাবি করে। কিন্তু আরবরাও দাবি করে এই ভূমি তাদের এবং ইহুদীদের জন্য সেখানে রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টার তারা বিরোধিতা করে।
উনিশশো বিশ থেকে ১৯৪০ দশকের মধ্যে ইউরোপ থেকে দলে দলে ইহুদীরা ফিলিস্তিনে যেতে শুরু করে এবং তাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ইউরোপে ইহুদী নিপীড়ন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভয়ংকর ইহুদী নিধনযজ্ঞের পর সেখান থেকে পালিয়ে এরা নতুন এক মাতৃভূমি তৈরির স্বপ্ন দেখছিল।
ফিলিস্তিনে তখন ইহুদী আর আরবদের মধ্যে সহিংসতা শুরু হলো, একই সঙ্গে সহিংসতা বাড়ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধেও।
উনিশশো সাতচল্লিশ সালে জাতিসংঘে এক ভোটাভুটিতে ফিলিস্তিনকে দুই টুকরো করে দুটি পৃথক ইহুদী এবং আরব রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হলো। জেরুজালেম থাকবে একটি আন্তর্জাতিক নগরী হিসেবে। ইহুদী নেতারা এই প্রস্তাব মেনে নেন, কিন্তু আরব নেতারা প্রত্যাখ্যান করেন। জাতিসংঘের এই পরিকল্পনা কখনোই বাস্তবায়িত হয়নি।
ব্রিটিশরা এই সমস্যার কোন সমাধান করতে ব্যর্থ হয়ে ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন ছাড়ে। ইহুদী নেতারা এরপর ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়।