দিল্লিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের ম্যাচে সোমবার রাতে ৩ উইকেটে জিতে পরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার আশা জিইয়ে রাখল বাংলাদেশ। কিন্তু বিশ্বকাপের এই ম্যাচ ইতিমধ্যেই ক্রিকেটের ইতিহাসে ঢুকে পড়েছে একটি বিরলতম ডিসমিস্যালের কারণে!
প্রথমে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কা ২৭৯ রানে অল আউট হয়ে গেলে বাংলাদেশ ৪১ ওভার ১ বলে ৭ উইকেটে ২৮২ রান তুলে ম্যাচটি জিতে নেয়।
তাদের এই জয়ের ভিত গড়ে দেয় তৃতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্ত (৯০) আর অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের (৮২) ১৬৯ রানের বিরাট পার্টনারশিপ।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রায় দেড়শো বছরের ইতিহাসে এই ম্যাচেই প্রথম কোনও ক্রিকেটারকে দেরি করে ক্রিজে আসার জন্য আউট হতে হয়েছে – আর তিনি হলেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ।
ম্যাথিউজের বিরুদ্ধে এই আবেদন করার জন্য অনেকেই যেমন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সমালোচনা করছেন – তেমনি আবার অনেকের প্রশংসাও পাচ্ছেন তিনি।
সাকিব নিজে পোস্ট ম্যাচ প্রেজেন্টেশনে দাবি করেছেন, “এটা ঠিক কি ভুল আমি জানি না।“
“হয়তো এটা নিয়ে বিতর্কও হবে, কিন্তু আমি তখন একটা যুদ্ধের মধ্যে ছিলাম – আর সেই যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য যা করা দরকার ছিল সেটাই করেছি”, জানিয়েছেন সাকিব।
অন্য দিকে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস বলেছেন, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ক্রিজে পৌঁছতে দেরি হওয়ার কারণ তার হেলমেটের স্ট্র্যাপ ঠিকঠাক কাজ করছিল না।
আম্পায়াররা ম্যাথিউজকে আউট ঘোষণা করার আগে এই ‘ইকুইপমেন্ট ম্যালফাংশনে’র (খেলার কোনও সরঞ্জাম বিগড়ে যাওয়া) বিষয়টি বিবেচনায় নিলেই ভাল করতেন, এমনটাই অভিমত দিয়েছেন তিনি।
তবে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা সবাই এক বাক্যে বলছেন, দু’মিনিটেরও অনেক দেরিতে ম্যাথিউজ ক্রিজে পৌঁছেছিলেন – কাজেই তার বিরুদ্ধে অ্যাপিল করে বাংলাদেশ দল মোটেই খেলার নিয়মবিরুদ্ধ কিছু করেনি।
কিন্তু নৈতিকতার মাপকাঠিতে বিষয়টা কতটা সঙ্গত ছিল, কিংবা এতে ক্রিকেটের স্পিরিটের সঙ্গে আপষ করা হয়েছে কি না – সেই ইস্যুতেই এখন শুরু হয়েছে বিতর্ক!
এদিকে ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে চারিথ আসালাঙ্কার ১০৫ বলে ১০৮ রানের ইনিংসের সুবাদে বাংলাদেশকে জেতার জন্য ২৮০ রানের টার্গেট দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা।
দিল্লিতে টুর্নামেন্টের এই ৩৮তম ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ৪৯ ওভার ৩ বলে ২৭৯ রানে অল আউট হয়ে যায়।
তবে আসালাঙ্কা শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হওয়ার পর দাবি করেছিলেনন, অন্তত তিনশো তাদের টার্গেট থাকলেও এটাও ‘গুড এনাফ’ – মানে ডিফেন্ড করার জন্য যথেষ্ঠ বলেই তিনি মনে করছিলেন।
আসালাঙ্কার সেঞ্চুরি ছাড়াও শ্রীলঙ্কার হয়ে পাথুম নিসাঙ্কা ৪১, সাদিরা সমরাউইকরামা ৪১ ও ধনঞ্জয় ডি সিলভা ৩৪ রান করেন।
সেই বিতর্কিত ডিসমিস্যাল যেভাবে
কিন্তু শ্রীলঙ্কার ইনিংসে অবশ্যই সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজের ‘টাইমড আউট’ হওয়া।
এর আগে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে কয়েকটি টাইমড আউটের দৃষ্টান্ত থাকলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের টেস্ট, ওয়ানডে বা টিটোয়েন্টি কোনও ফর্ম্যাটেই কখনো এ জিনিস ঘটেনি।
শ্রীলঙ্কার ইনিংস তখন ২৪ ওভার ২ বল গড়িয়েছে – সাকিব আল হাসানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সদ্য প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন সমরাউইকরামা।
ক্রিকেটের নিয়ম বলে একজন ব্যাটার আউট হয়ে মাঠ ছাড়ার তিন মিনিটের মধ্যে পরে ব্যাটারকে ক্রিজে আসতে হবে – সে নিয়ম মানতে না-পারায় সাকিব আল হাসান তখন আম্পায়ারের কাছে ম্যাথিউজের বিরুদ্ধে ‘টাইমড আউটে’রও আবেদন করে ফেলেছেন!
এমসিসি-র নিয়মে তিন মিনিটের কথা বলা থাকলেও চলতি বিশ্বকাপে আইসিসি আবার সেটাকেই কমিয়ে করেছে মাত্র দু’মিনিট!
পরে স্টাম্প মাইকে রেকর্ড করা কথোপকথনে সাকিব আল হাসানকে এটাও বলতে শোনা গেছে “আয়্যাম সিরিয়াস!”
আসলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেহেতু কেউ কখনো টাইমড আউটের ঘটনা দেখেনি, তাই এই বিরলতম আবেদন করার সময় সাকিবকে এটাও বোধহয় আম্পায়ারকে বুঝিয়ে বলতে হয়েছিল তিনি কতটা সিরিয়াস!
হতচকিত ম্যাথিউজ আম্পায়ারকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, হেলমেটের সমস্যার কারণেই তার ক্রিজে আসতে দেরি হয়েছে – কিন্তু আম্পায়ারের এ ক্ষেত্রে কিছুই করার ছিল না!
ডিসমিস্যালের আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য শ্রীলঙ্কান ব্যাটার সাকিবের কাছেও অনুরোধ জানান – কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজেনি, বাংলাদেশ দল তাদের অ্যাপিল ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়নি।
আম্পায়ার মারাস ইরাসমাস সাকিবকে দুই দুইবার জিজ্ঞেস করেছিলেন তিনি অ্যাপিল প্রত্যাহার করে নেবেন কি না – দু’বারই তাকে সটান ‘না’ বলে দেন বাংলাদেশ আধিনায়ক।
প্রতিক্রিয়া যা হল
এদিকে বিরক্ত ও হতাশ ম্যাথিউজকে ডাগ-আউটে ফিরেই সজোরে হেলমেট ছুঁড়ে ফেলতে দেখা যায় – যার জন্য তাকে পরে শাস্তির মুখেও পড়তে হতে পারে।
এদিকে এই ‘টাইমড আউট’ করার সিদ্ধান্ত কতটা সমীচীন, সেটাকে ঘিরে ক্রিকেট মহলে ইতিমধ্যেই জোর বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে।
সাবেক শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার রাসেল আর্নল্ড কমেন্ট্রি বক্স থেকেই ঘোষণা করেছেন, “কোনও দিন আমরা ক্রিকেটে এরকম জিনিস দেখিনি!”
পাকিস্তানি গ্রেট ওয়াকার ইউনিস আরও এক ধাপ এগিয়ে মন্তব্য করেছেন, “এটা খেলাটার জন্য আদৌ ভাল হল না। এই জিনিসটা ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী!”
তবে ইনিংস ব্রেকে দুই ভাষ্যকার, সঞ্জয় মঞ্জরেকর ও রামিজ রাজা উভয়েই বাংলাদেশের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন।
মঞ্জরেকর বলেছেন, ইদানীং সাদা বলের ক্রিকেটে ব্যাটারদের মধ্যে মাঠে ঢোকার ক্ষেত্রে যেরকম গা-ছাড়া মনোভাব বা ঢিলেঢালা মানসিকতা দেখা যায় তাতে এ জিনিস অবধারিত ছিল।
ম্যাথিউজের ক্রিজে আসার আগে বাংলাদেশ টিম প্রায় চার থেকে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করেছে বলেও তিনি মনে করিয়ে দেন।
সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার রামিজ রাজা বলেন, এই ঘটনা যখন ঘটছে বাংলাদেশ তখন ওভার রেট টার্গেটের চেয়ে পিছিয়ে ছিল – কাজেই তারা দেরির জন্য ম্যাথিউজের বিরুদ্ধে আবেদন করে মোটেও অনৈতিক কিছু করেনি।
আগেকার খবর
বিশ্বকাপের সেরা আটটি দল ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলবে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের এমন ঘোষণার পর চলতি বিশ্বকাপের পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা দলগুলোর এখন লক্ষ্য এখন সেই টুর্নামেন্টে জায়গা করে নেয়া।
সেজন্য শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ ম্যাচটির গুরুত্ব কম নয়।
বাংলাদেশ সাত ম্যাচে ১ জয় নিয়ে আছে নয় নম্বরে। আর শ্রীলঙ্কা সাত ম্যাচে ২টি জয় নিয়ে আছে সাত নম্বরে।
তবে দুই দলের মধ্যে নেট রান রেটের ব্যবধান খুব বেশি না।
তাই আজকে ম্যাচে যে দলই জয় পাবে তাদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্পট অর্থাৎ সেরা আটে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের বিপক্ষে বরাবরই দাপটের সাথে জয় তুলে নিয়েছে।
কখনো তো প্রথম ওভারেই খেলা শেষ করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা, যেমনটা ২০০৩ সালে ঘটেছিল।
সেইবার শ্রীলঙ্কার নামকরা বাহাতি ফাস্ট বোলার চামিন্ডা ভাসের করা প্রথম ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোরলাইন ছিল ৫ রানে চার উইকেট।
২০০৭ সালের বিশ্বকাপেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ সুবিধা করতে পারেনি। ম্যাচের কোনও মুহূর্তেই মনে হয়নি বাংলাদেশ কিছু করতে পারবে।
বল হাতে ৩১৮ রান দেয়ার পর ব্যাট হাতে প্রথম চার ওভারের মধ্যে সাত রান তুলে দুই ওপেনার সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন।
২০১৫ বিশ্বকাপের খেলায় বালাদেশ ব্যাট হাতে কিছু রান তুলেছে, কিন্তু বল হাতে পুরো ৫০ ওভারে মাত্র এক উইকেট নিয়েছিল সেবার।
আর ২০১৯ বিশ্বকাপে বৃষ্টির কারণে দেখা হয়নি দুই দলের। ব্রিস্টলের বৃষ্টিভেজা দিনে কেবল অপেক্ষা করেই সময় কাটিয়েছে দুই দল।
সেই সম্ভাবনা নাকি আজও আছে। দিল্লির বাতাসে দূষণের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বলেছে তারা পর্যবেক্ষণ করবে, পরিস্থিতি খেলার জন্য অনুপযুক্ত হলে ম্যাচ বাতিলও হতে পারে।
সাকিব আল হাসান ও বাংলাদেশের বিশ্বকাপ
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ এখনও পর্যন্ত বিবর্ণ, মলিন।
সাকিব আল হাসান সম্পর্কেও একই কথা বলা যায়। ২০১৯ বিশ্বকাপে যিনি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলেন এবারের বিশ্বকাপে সেই সাকিব নিজের অর্ধেকও সক্ষমতা দেখাতে পারেননি।
শুরুটা হয়েছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে, যেখানে সাকিবের তিনটি উইকেট আছে। ওই শুরু ওখানেই শেষ।
এরপর আর জয়ের মুখ দেখেনি বাংলাদেশ।
সাকিবও তেমন ভালো বোলিং বা ব্যাটিং কিছুই করতে পারেননি।
সাকিবের নামের পাশে বিশ্বকাপের বেশ কয়েকটি রেকর্ড জ্বলজ্বল করছে। কিন্তু এমন বিবর্ণ বিশ্বকাপের পরে সেগুলোর খুব একটা মূল্য থাকবে না বলেই মনে হচ্ছে।
বিশ্বকাপে স্পিনারদের মধ্যে সাকিবের উইকেট সংখ্যা ৪১, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, এক নম্বরে আছেন ৬৮ উইকেট নেয়া শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তী মুরালিধরন।
বাহাতি স্পিনারদের মধ্যে সাকিবই আছেন এক নম্বরে। নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ড্যানিয়েল ভেটোরিকে পার করেছেন তিনি চলতি বিশ্বকাপেই।
ব্যাট হাতেও সাকিব বিশ্বকাপের অলটাইম রান সংগ্রাহকদের তালিকায় শীর্ষ দশে আছেন। কিন্তু গতবারের সাথে মেলাতেই পারবেন না এবার।
গত বিশ্বকাপে ৮ ইনিংস ব্যাট করে ৭ বারই ৫০ বা তার বেশি রান তুলেছিলেন। যার মধ্যে ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরিও ছিল।
এবার ৬ ইনিংস খেলে এখন পর্যন্ত ১০৪ রান করেছেন। দুইবার মাত্র ৪০ স্পর্শ করেছেন।
২০১৯ বিশ্বকাপে সাকিব দলীয় মোট রানের ২৭% তুলেছিলেন, এবার তুলেছেন মাত্র ৮.৬%, তবু তিনি সবার চেয়ে কম নন।
কতোটা খারাপ খেলেছে বাংলাদেশ?
শুধু সাকিবই নন এবার বাংলাদেশের গোটা ব্যাটিং ইউনিট ব্যর্থ হয়েছে, ২০২৩ বিশ্বকাপে প্রথম দশ ওভারে সবচেয়ে বেশি মোট ১৬টি উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
এই সময়ে বাংলাদেশের রান রেট ছিল ৪.৬, যা গোটা বিশ্বকাপের দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম।
নাজমুল হোসেন শান্ত প্রথম ম্যাচে একটি ফিফটি তুলেছেন, এরপরের ছয় ম্যাচে তিনি ৪৮ বল খেলে ২৪ রান তুলেছেন মাত্র।
বাংলাদেশের বোলারদের পারফরম্যান্সও ছিল যাচ্ছেতাই,চলতি বিশ্বকাপে সবচেয়ে খরুচে বোলিং ইউনিটগুলোর একটি বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কার রান রেট ছিল ৬.৪, পাকিস্তানের ৬.৩, বাংলাদেশের ৬.১।
বাংলাদেশ একটি উইকেট নিতে এবারের বিশ্বকাপে প্রায় ৪৪ বল করতে হয়েছে যা বিশ্বকাপে সবচেয়ে বাজে।
বাংলাদেশ ৭ ম্যাচ খেলে মাত্র ৪২ উইকেট নিয়েছে প্রতিপক্ষের, এটাও চলতি বিশ্বকাপে সবচেয়ে কম।
শ্রীলঙ্কার পরে কেবল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ বাকি আছে বাংলাদশের।
শ্রীলঙ্কার অবস্থা ‘শোচনীয়’
বাংলাদেশের চেয়ে এক ম্যাচ বেশি জিতলেও শ্রীলঙ্কার সামগ্রিক অবস্থা শোচনীয়। চলতি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ৫৫ রানে অলআউট হয়েছে শ্রীলঙ্কা।
এশিয়া কাপের ফাইনালে ৫০ রানে অলআউট হয়েছিল দলটি।
এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ভারতের বিপক্ষেই ৭৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল।
শ্রীলঙ্কার গোটা ক্রিকেট বোর্ডকে বরখাস্ত করেছে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
শ্রীলঙ্কা প্রথম দুই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ইতিবাচক শুরু করেছিল, কিন্তু ম্যাচ হেরে গেছে।
নেদারল্যান্ডস ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেয়েছে দলটি।
টুর্নামেন্টের মাঝপথে দাসুন শানাকা চোটের কারণে দল থেকে ছিটকে যান, এরপর কুশাল মেন্ডিস অধিনায়কত্ব পেয়ে ব্যাট হাতে রান পাননি আর।
সব মিলিয়ে একটা জটিল পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
এখন টুর্নামেন্ট শেষে বড় রদবদল আসতে যাচ্ছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
মইন আলী বললেন, ‘বয়স হয়ে গেছে’
ইংল্যান্ডেরও হতাশাসূচক একটা বিশ্বকাপ কাটছে। সাত ম্যাচে মাত্র একটি জয়, দুটি ম্যাচ বাকি রয়েছে নেদারল্যান্ডস ও পাকিস্তানের বিপক্ষে।
এমন একটি টুর্নামেন্ট শেষে ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার সহ-অধিনায়ক মইন আলী বলেছেন, তিনি এখন তরুণ ক্রিকেটারদের নেয়ার পক্ষে।
৩৬ বছর বয়সী মইন আলী বলেন, “আমি দায়িত্বে থাকলে এখন তরুণ ক্রিকেটারদের নিতাম। এখন আবারও নতুন করে শুরু করতে হবে, আমি নিশ্চিত এটাই করা হবে”।
মইন আলী নিজের ক্যারিয়ারের ইতি টানার প্রসঙ্গেও কথা বলেন, “আমি জস বাটলার ও ম্যাথু মটের সাথে কথা বলবো, দেখবো তারা আসলে আমার থেকে কী চায়। তারা যদি তরুণ ক্রিকেটারদের চায় সেক্ষেত্রে আমি খুশিই হবো”।
শনিবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারের পর ইংল্যান্ডের এই টুর্নামেন্টের গাণিতিক হিসেবও শেষ হয়ে গেছে।
আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের কাছে টানা মাচ হেরেছে ইংল্যান্ড।
এই দলটাই ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছে। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল খেলেছে, ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জয় পেয়েছে।
মইন আলীর মতে সব ভালো জিনিসেরই একটা শেষ আছে।
গত মাসেই মইন আলী ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ডের সাথে এক বছরের নতুন চুক্তি করেছে।
মইন আলী মনে করেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা ভিন্ন ফরম্যাট তাই এটা নিয়ে ভাবার জায়গা আছে।
তবে ইংল্যান্ড এখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা নিশ্চিত করার জন্য খেলবে এটুকু নিশ্চিত।