বাংলাদেশে গত এক বছরে চাল ও আটার মতো পণ্যের দাম না বাড়লেও শুধু অক্টোবরেই খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে সর্বোচ্চ হয়েছে। কৃষি ও বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বেশিরভাগ সময় সিন্ডিকেটের দিকে আঙুল তোলা হলেও এর পেছনে আরও বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
কারণ অনেক সময় উৎপাদন বেশি হলেও বাজারে ঠিকমতো সরবরাহ হয় না। আবার উৎপাদন ও আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ার প্রভাবও পড়েছে অনেক পণ্যের দামে। সরকারি যেসব তথ্য দেয়া হয়, সেখানেও প্রকৃত অবস্থার সাথে তারতম্য থাকে।
যদিও বিশ্লেষকদের অনেকে বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে শুধু সিন্ডিকেটকে দায়ী করতে চান না, তবে এ নিয়ে বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির পেছনে সিন্ডিকেট বা ব্যবসায়ীদের কারসাজিকে বিভিন্ন সময় দায়ী করা হয়েছে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ও সরকারের কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে।
গত ২৬শে জুন সংসদ অধিবেশন চলাকালে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতাদের কঠোর সমালোচনা ও ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন।
মন্ত্রী এমন সমালোচনার জবাবে বলেছিলেন, ‘চাইলে জেল-জরিমানাসহ বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। এটা ঠিক যে বড় বড় গ্রুপগুলো একসঙ্গে অনেক বেশি ব্যবসা করে।”
বেশ কিছু ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে বাজারে কারসাজি, মজুদদারির মতো অভিযোগে জরিমানা বা কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। যদিও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, বাজার ব্যবস্থায় পরিবর্তন না আসলে শুধু জেল জরিমানা দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়।
এমন প্রেক্ষাপটে গত কয়েকমাস ধরে নানা ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশে। গত বছর এই সময়ে এই হার ছিল ৮.৫০ শতাংশ।
বর্তমানে এটি ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়েছে।
যেসব পণ্য ভূমিকা রেখেছে
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ- টিসিবির বাৎসরিক মূল্য তালিকা অনুযায়ী, গত এক বছরে কিছু পণ্যের মূল্যে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। চাল, আটা ও ময়দার মতো বেশি চাহিদা রয়েছে এমন পণ্যের দাম না বাড়লেও কিছু পণ্যের আবার অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে।
নাজিরশাইল ও মিনিকেটের মতো সরু চাল এবং পাইজাম ও লতার মতো মাঝারী চালের দাম কেজি প্রতি এক থেকে সাড়ে তিন শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। মোটা চালের দাম অপরিবর্তিত ছিল।
খোলা ও প্যাকেজজাত আটা, ভোজ্য তেলের দাম আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। তবে মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে আনুষঙ্গিক অন্যান্য পণ্যের দাম।
যেসব পণ্যের দাম একেবারেরই প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে তার মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজ, আলু, কাঁচামরিচ ইত্যাদি। এছাড়াও দামে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে সব ধরনের মাংস এবং মাছের দামে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, খাদ্য মূল্যস্ফীতি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ছিল ৭.৭৬ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে ৮.১৩, মার্চে ৯.০৯, এপ্রিলে ৮.৮৪, মে মাসে ৯.২৪, জুনে ৯.৭৩, জুলাইতে ৯.৭৬, অগাস্টে ১২.৫৪, সেপ্টেম্বরে ১২.৩৭ এবং অক্টোবরে ১২.৫৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
ভোক্তা অধিকার বলছে, শুধু বাজার পর্যবেক্ষণ নয়, বরং মূল্যস্ফীতির প্রকৃত কারণ খুঁজে তা সমাধানের চেষ্টা করছেন তারা।
১. পেঁয়াজ
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, দেশি পেঁয়াজের দাম গত এক বছরে ১৪০.৯১ শতাংশ এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০ শতাংশ বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজ এক বছর আগে ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ১৩০-১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৪৫-৫৫ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ৯০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২৫ লাখ মেট্রিকটন। তবে বাস্তবে এই চাহিদা আরো বেশি বলেও জানা যায়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের দাবি, দেশে এ বছর পেঁয়াজের উৎপাদন ছিল প্রায় ৩৪ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু মজুদের সুবিধা না থাকায় এর প্রায় ২৫ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে আমদানি করতে হয় সাড়ে ৬ লাখ টনের মতো পেঁয়াজ।
তারপরেও পেঁয়াজের দাম বেড়েই চলেছে। আমদানি করেও পরিস্থিতি পুরোপুরি সামাল দেয়া যায়নি।
২. আলু
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে আলুর দাম ৮২.৬৯ শতাংশ বেড়েছে। এক বছর আগে আলুর দাম প্রতি কেজি ২৪-২৮ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে আলুর দাম কেজি প্রতি ৪৫-৫০ টাকা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, আলুর চাহিদা ৮৫-৯০ লাখ টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলু উৎপাদিত হয়েছে এক কোটি ১২ লাখ টন।
তবে কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন বলছে, দেশে এবার আলুর উৎপাদন ৮০ লাখ টনের বেশি হবে না।
সে হিসেবে আলুর সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে।
৩. মাছ-মাংস
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে প্রায় সব ধরনের মাছ মাংসের দাম বেড়েছে।
ব্রয়লার মুরগি গত এক বছরে ৭.৪৬ শতাংশ, খাসী ১১.৭ শতাংশ, গরু ১২.৫ শতাংশ, ইলিশ ৫.৪১ শতাংশ, রুই ২৫ শতাংশ বেড়েছে।
দেশি মুরগির দাম এক বছরে কেজি প্রতি ২৮.২৬ শতাংশ বেড়েছে। আগে কেজি প্রতি দাম ৪২০-৫০০ টাকা ছিল। এখন এই দাম ৫৩০-৬৫০।
প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত ১০টি অর্থবছরে সব ধরনের মাংসের উৎপাদন বেড়েছে। বর্তমানে দেশে ৮৭ লাখ টন মাংস উৎপাদিত হয়। আর মাংসের চাহিদা রয়েছে বার্ষিক ৭৬ লাখ টন।
ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, উৎপাদন বেশি হলেও কেউ যদি তা বিক্রি করতে না চায়, বরং পরে ভাল দাম পাওয়ার আশায় ধরে রাখে তাহলে বেশি চাহিদার কারণে সেই পণ্যের দাম বেড়ে যায়।
৪. মসলা
দারুচিনি ও এলাচ ছাড়া সব ধরনের মসলার দাম বেড়েছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে রসুনের দাম। গত এক বছরে এই পণ্যটির দাম ১২৭.৭৮ শতাংশ বেড়েছে। গত বছরের ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে রসুন বিক্রি হলেও বর্তমানে ১৯০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া গত এক বছরে দেশি ও আমদানি করা আদার দাম ২৩ শতাংশ থেকে শুরু করে ৪৫.১৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। আমদানি করা আদা গত বছর সর্বোচ্চ ১৯০ টাকা করে বিক্রি হলেও সেই আদা এ বছর সর্বোচ্চ ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা করে।
মসলার মধ্যে শুকনা মরিচ, হলুদ, জিরা, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, ধনে ও তেজপাতারও দাম বেড়েছে।
৫. ডিম
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে প্রতি হালি ডিমের দাম শতকরা ৫.২৬ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর এক হালি ডিমের দাম ছিল সর্বোচ্চ ৫০ টাকা। বর্তমানে এটি ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে চলতি বছর ডিম প্রতি ডজন ১৬০থেকে ১৬৫ টাকায়ও বিক্রি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ডিমের চাহিদা এক হাজার ৮০৬ কোটি পিস। উৎপাদন হয়েছে দুই হাজার ৩৩৮কোটি পিস।
সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ডিম ও মাংসের উৎপাদন গত অর্থবছরে চাহিদার তুলনায় বেশি উৎপাদিত হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ডিম একটা পচনশীল দ্রব্য। সেটা ধরে রাখা যায় না। তাই উৎপাদন হলেও সেটা কতদিনের জন্য হয়েছে সেটা জরুরি।
ডিমের দাম কমাতে এরই মধ্যে ডিম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ভারত থেকে বাংলাদেশে ডিম আসতেও শুরু করেছে।
৬. কাঁচামরিচ
টিসিবি বলছে, কাঁচামরিচের দাম গত এক বছরে কেজি প্রতি ১৮০ শতাংশ বেড়েছে।
গত বছর কাঁচা মরিচ ৪০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে এই পণ্যটি ১০০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এক মাস আগেও কাঁচামরিচ সর্বোচ্চ ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
৭. চিনি
চিনির দাম গত এক বছরে ১২৫ শতাংশ বেড়েছে। এক বছর আগে চিনির দাম প্রতি কেজি ছিল ১২০ টাকা। বর্তমানে এটি সর্বোচ্চ ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত চিনির কলগুলোতে চলতি বছর ২১ হাজার ৩০০ টনের মতো চিনি উৎপাদিত হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায়ও ১৩ শতাংশ কম।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, মিলগুলোতে আখের সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে চিনির উৎপাদন ২৩ বছরের মধ্যে কম হয়েছে।
যেসব কারণে দাম বেড়েছে
অর্থনীতিবিদরা দাম বাড়ার পেছনে যুদ্ধ এবং বাজার সিন্ডিকেটের যোগসাজশের কথা মানতে চাননি। তাদের মতে, উৎপাদন ও সরবরাহ কম থাকার কারণে খাদ্য পণ্যের দাম বেড়েছে।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. আসাদুজ্জামান বলেন, ”চাল ও আটার দাম না বাড়লেও এ দুটি পণ্য মানুষের প্রধান খাবার এবং মানুষ এগুলোর সাথে আরো পণ্য মিশিয়ে তারপর ভোগ করে। এতে করে অন্যান্য পণ্য যেমন সবজি, মাছ-মাংস ইত্যাদি পণ্যের চাহিদা বাড়ায় এবং সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে সেগুলোর দাম বেড়েছে।”
”ফলে চাল ও আটার তুলনায় পরিমাণে কম ব্যবহৃত হলেও সেগুলোর দাম বেশি বেড়ে যাওয়ার কারণে সার্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।”
গত এক বছরে বাংলাদেশে বৃষ্টিপাতের অনিয়ম হয়েছে উল্লেখ করে এই কৃষি অর্থনীতিবিদ বলেন, প্রয়োজনের সময় সঠিক পরিমাণে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ফসলের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, চাল ছাড়া বাংলাদেশ আর কোন পণ্যেই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ না। বাকি সব খাদ্য পণ্যই আমদানি করতে হয়। দাম বাড়ার পেছনে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ দেখানোকে ভুয়া বলে মনে করেন তিনি।
তার মতে, দেশে গত ৫০ বছর ধরে শুধু চাল উৎপাদনের উপর জোর দেয়া হয়েছে। বাকি খাদ্য পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিতে খুব একটা নজর দেয়া হয়নি। ফলে বিশেষ কোন খাদ্যের চাহিদা বেড়ে গেলেই সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়। এ কারণে দামও বেড়ে যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ও সিরডাপের পরিচালক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, দীর্ঘমেয়াদে পণ্যের দাম বাড়ার কারণ হচ্ছে উৎপাদন খরচ ও আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়া।
বাংলাদেশের আমদানির ৭৫ শতাংশ মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের জন্য করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ”ডলার সংকটের কারণে এসব পণ্যের আমদানি কমে গেছে। আবার আমদানি করলেও তা আগের তুলনায় বেশি দামে করতে হচ্ছে। এ কারণে দেশে উৎপাদিত পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে।”
”ফলে সরবরাহ থাকলেও সেগুলো কম দামে ছাড়তে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এছাড়া জ্বালানির দামের সমন্বয়ও উৎপাদন খরচ বাড়ার একটি কারণ বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।
মি. উদ্দিন বলেন, সেবা ও পণ্যের আমদানি কমে গেলেও সেগুলোর চাহিদা কমেনি। ফলে দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে এটিও একটি কারণ।
তার মতে, পণ্যের মজুদ কমে যাওয়াটা টের পেয়ে সরকার যদি আগেই আমদানির অনুমতি দেয় তাহলে ঘাটতি তৈরি হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে এটা হয় না বলে মনে করেন তিনি। যার কারণে ঘাটতি হওয়ার পরই আমদানির অনুমতি দেয়া হয়।
”আবার অনেক ক্ষেত্রে কোন পণ্যের ঘাটতি থাকলেও সেটির দাম বাড়ার আশঙ্কায় সরকার সেটি স্বীকারও করতে চায় না, তিনি বলছেন।
তবে এর আগে পণ্যের দাম বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের গোষ্ঠী বা সিন্ডিকেটের ভূমিকার কথা বিভিন্ন সময় আলোচনাতে এসেছে।
অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ডঃ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বিবিসি বাংলাকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, গত কয়েক বছর ধরেই আমদানির ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে এমন পরিবেশ তৈরি হয়েছে এবং কয়েকটি জরুরি পণ্যের মার্কেট শেয়ার এখন কয়েকটি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে।
“আমদানি থেকে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত নিজেদের বলয় তৈরি করে নিজেদের শর্তে বাজারে পণ্য দিচ্ছে তারা। তাদের কথা মতো না হলে অন্যরা ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
বাজারে ম্যানিপুলেশনের অভিযোগে বেশ কয়েকটি বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের জেল জরিমানাও করেছে সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান গত অগাস্ট মাসে বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় বিপণন ব্যবস্থার ভেতরে যে অনিয়ম ও অস্থিরতা চলছে। ফলে শুধুমাত্র কয়েকটি বাজারে নজরদারি ও জেল জরিমানা করে এই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য থামানো অসম্ভব।