বলিউড চলচ্চিত্র ‘দিওয়ানা’ যখন ১৯৯২ সালে মুক্তি পায়। সে সময়, ছবিতে ভারতীয় টেলিভিশন থেকে আসা ওই নব্য যুবককে দেখে মনে হয়েছিল উদীয়মান এক তারকা যেন দর্শকদের মনে হৃদয়ে আলোড়ন তুলতে এসেছেন। বেপরোয়া, বিদ্রোহের মনোভাবে ঠাঁসা রাজা (দিওয়ানা ছবিতে শাহরুখ খান অভিনীত চরিত্রের নাম) যেন ‘দিওয়ানা’ ছবিতে ‘এন্ট্রি’ নেননি, সরাসরি প্রবেশ করেছেন দর্শকের হৃদয়ের দরজা দিয়েই।
কিন্তু সেই নায়ক বক্স অফিসে সে অর্থে সাড়া ফেলেছিলেন ১৯৯৩ সালে, ‘বাজিগর’ আর ‘ডর’ নামক দুটি বলিউড ছবি পরপর মুক্তি পাওয়ার পরে।
আজ হয়তো শাহরুখ খান ‘রোমান্টিক নায়ক’ হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয় কিন্তু তিনি সফলতার প্রথম ধাপটা চড়েছিলেন ‘অ্যান্টি-হিরো’ হিসেবে।
‘অ্যান্টি-হিরো’ হিসেবে শুরু হওয়া ‘বাজিগরের’ সেই সফর এখন পৌঁছেছে ‘জওয়ানে’।
অর্থাৎ, ৩০ বছরের তফাতে শাহরুখ খানকে দুই ধরনের ‘অ্যান্টি-হিরো’-র চরিত্র পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে দেখা গিয়েছে।
রোমান্টিক হিরো
বর্ষীয়ান চলচ্চিত্র সাংবাদিক নম্রতা জোশী বলেন, ‘বাজিগর’ ও ‘ড্র’ ছায়াছবিতে শাহরুখ খানের নায়ক-বিরোধী আবেগ একটি মেয়ের প্রতি তার ভালবাসা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
কিন্তু পরবর্তীকালে এই ‘নেগেটিভ’ চরিত্র ছেড়ে তাকে দেখা গেছে আপাদমস্তক শহুরে একজন রোমান্টিক নায়কের ভূমিকায়।
“গত কয়েক বছরে, যখন তিনি নিজেকে নতুন করে আরও একবার আবিষ্কার করার চেষ্টা করেছিলেন, সে সময়ে তাঁর ছবিগুলি কিন্তু চলেনি। এটা বলাই যেতে পারে যে, ২০২৩ সালে ‘পাঠান’ এবং ‘জওয়ান’-এর মাধ্যমে তিনি আরও একবার নিজেকে নতুন উদ্যমে ফিরে আসেন। আমরা যে পরিস্থিতিতে এই মুহূর্তে আছি, তাতে ‘জওয়ান’-এর মতো একটা প্রতিষ্ঠান-বিরোধী ছবি কিন্তু হিন্দি সিনেমার জন্য একটা নতুন দিক,” মিজ জোশী বলেছেন।
তাঁর কথায়, “এই ধরনের প্রতিষ্ঠান-বিরোধী ভূমিকা নেওয়াটা কিন্তু একটা লক্ষ্য করার মতো বিষয়। ‘বাজিগর’-এ প্রেমিকার জন্য নায়ক-বিরোধী হওয়া আর ‘জওয়ান’-এ ক্ষমতা এবং সমগ্র প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যাওয়া- এই দুটো বিষয়ের মধ্যে কিন্তু তফাৎ রয়েছে। এবং এটাই কিন্তু শাহরুখের সফরকে দর্শায়।”
বছর তিরশ আগে, ১৯৯৩ সালের ১৩ নভেম্বর মুক্তি পায় আব্বাস-মস্তান পরিচালিত হিন্দি ছায়াছবি ‘বাজিগর’।
হয়তো, কেউই আশা করেনি যে একজন নতুন নায়ক যিনি মাত্র কয়েকটা সিরিয়াল এবং একটা বা দুটো ছবিতে অভিনয় করেছেন, তিনি এমন এক চরিত্রে অভিনয় করবেন, যে আদতে একজন খুনি এবং কোনও অপরাধবোধ ছাড়াই মানুষকে মেরে ফেলে। শুধু তাই নয়, একটার পর একটা খুন করতে তার দ্বিধাও বোধ হয় না।
‘বাজিগর’ ছবির শুরুতেই শাহরুখ খান ও শিল্পা শেঠির দুটি রোমান্টিক গান আছে। সিনেমায়, এরপর দুজনেই আইনি বিয়ে সারতে যান এবং হঠাৎই শাহরুখ খান খুব নৃশংসভাবে শিল্পা শেঠিকে একটি উঁচু ইমারত থেকে ফেলে দেন, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘কোল্ড ব্লাডেড মার্ডার’ (ঠাণ্ডা মাথায় খুন করা)।
প্রেমের মাঝে খুনের এই দৃশ্যটি কিন্তু হঠাৎই আসে যা দর্শকদের বেশ হতভম্ব করে দেয়।
সেই যুগে যখন সালমান খান ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ ছবিতে ভালবাসার জন্য প্রত্যেকটা পরীক্ষার সম্মুখীন হতে রাজি, আমির খান কয়ামত সে কয়ামত তক’ ছবিতে প্রেমের জন্য প্রাণ দিতে প্রস্তুত, সেখানে অজয় শর্মা ওরফে ভিকি মালহোত্রা (শাহরুখ) বাজিগরের চরিত্রে অভিনয় করে বলিউডের নায়কের ভাবমূর্তিকেই ভেঙে দেন।
ছক ভাঙার চেষ্টা
চলচ্চিত্র ইতিহাসবিদ অমৃত গঙ্গর বলেন, “শাহরুখ যদিও চেনা ছকের বাইরে গিয়ে মণি কৌল-এর (ভারতীয় চিত্র পরিচালক) ছবি ‘আহাম্মক’ দিয়ে শুরু করেন, এবং তিনি ‘মায়া মেম সাহাব’-এর মতো সিনেমাও করেছেন। ‘সার্কাস-এর মতো টেলিভিশন সিরিয়ালও করেছেন। কিন্তু ‘বাজিগর’ ছবির ব্যাপক বাণিজ্যিক সাফল্য তাঁকে ‘অ্যান্টি-হিরো’র চরিত্রে স্বীকৃতি দেয়।”
তাঁর কথায়, “আমি এটাকে শাহরুখ খানের অভিনয় ক্ষমতা হিসাবে দেখি। তাঁর অভিনয়ের পরিধিও এটা দেখায়। একই সঙ্গে দেখায়, বলিউড কাস্টিং-এ প্রচলিত স্টিরিওটাইপ ভাঙার ক্ষেত্রেও শাহরুখের ক্ষমতাকেও। এমনকি ‘ডর’ ছবিতেও যশ চোপড়া তাঁকে একটি নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দেন, যা সে সময়ে নায়কদের জন্য ট্যাবু (নিষিদ্ধ) বলে মনে করা হত।”
‘বাজিগর’-এর চরিত্রটি এতটাই নেতিবাচক ছিল যে অনেক বড় নায়ক এই চরিত্রে অভিনয় করতে চাননি। ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন হওয়া সত্ত্বেও শাহরুখ খানই ছিলেন একমাত্র নায়ক যিনি এই বাজিটা লড়ার সাহস দেখিয়েছিলেন।
‘বাজিগর’-এর প্রায় এক মাস পর ১৯৯৩ সালের ২৪শে ডিসেম্বর মুক্তি পায় যশ চোপড়ার ছবি ‘ডর’। ওই সিনেমায়, শাহরুখ খান মানসিক ভাবে অস্থির এক যুবকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন যার এক তরফা ভালোবাসা তাঁকে এমন একটা পর্যায় নিয়ে যায় যেখানে সে নিজের এবং যে মেয়েটিকে ভালবাসে তাঁর জন্যেও ভয়েক কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আজকের হিসেবে বলতে গেলে, ‘ডর’-এর রাহুল ছিল একজন ‘স্টকার’।
‘ডর’-এ শাহরুখ যে চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, তার জন্য যশ চোপড়া প্রথমে ঋষি কাপুরের সঙ্গে কথা বলেছিলেন।
আত্মজীবনী ‘খুল্লাম খুল্লা’-তে ঋষি কাপুর লিখেছেন, “যশ চোপড়া যখন আমাকে এই চরিত্রটির কথা বলেন, তখন তাঁকে বলেছিলাম- আমি খলনায়কের চরিত্রের প্রতি আমার পক্ষে সুবিচার করা সম্ভব নয়।
আমি কিছুদিন আগে আপনার সঙ্গে চাঁদনী (এটি একটি রোমান্টিক চলচ্চিত্র ছিল) ছবিটা করেছি। আমি ‘খোঁজ’ ছবিতে একটা নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করেছি এবং সেটা ফ্লপ হয়েছিল। আপনি শাহরুখকে নিতে পারেন, আমি ওঁর (শাহরুখ খান) কাজ করেছি। তিনি একজন দক্ষ এবং স্মার্ট।”
ঋষি কাপুর লিখেছিলেন, “এরপর সেই ছবিটা আমির খান ও অজয় দেবগনের হাতে চলে যায়। দু’জনেই সেই চরিত্রে অভিনয় করেননি। শেষপর্যন্ত, শাহরুখ সেই চরিত্রে অভিনয় করেন।”
‘বাজিগর’-এর ভিকি হোক বা ‘ডর’-এর রাহুল, দুই চরিত্রেই শাহরুখ খানের কার্যকলাপ দেখে দর্শকের মধ্যে আপনা থেকেই এক ধরনের ঘৃণা তৈরি হয়।
ছবির নায়ক (সানি দেওল) বা অন্যান্য চরিত্রদের কিন্তু শাহরুখ অভিনিত চরিত্রের সমকক্ষ বলে কখনওই মনে হবে না দর্শকদের। বরং তাঁর (শাহরুখ) পাশে নজরে পড়তে পারে।
এর কৃতিত্ব আপনি চিত্রনাট্যকার বা ছবির পরিচালককে দিতে পারেন। পর্দায় দেখা শাহরুখ খানকেই যদিও মানুষ মনে রেখেছেন।
পরিবর্তনের দশক
অমৃত গঙ্গর বলেন, “১৯৯০-এর দশক ছিল পরিবর্তনের এবং মানুষ শাহরুখের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে নিজেদের একটা যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছিলেন।
শাহরুখ অভিনীত এই নেতিবাচক চরিত্রগুলোতে প্রেম এবং যৌন আবেগের মিশ্রণ ছিল। এতে এক ধরণের উন্মাদনা ছিল, যা তরুণরা খুঁজছিল।
যেমন, ‘ডর’ এমন একটা আবেগকে দেখিয়েছিল যা হিন্দি ছবিতে দেখা যেত না। পর্দায় শাহরুখের সেই বালক-সুলভ আকর্ষণ এক ধরণের রহস্য হয়ে দাঁড়ায়।
‘ডর’ ছবিটির সেই দৃশ্য মনে করে দেখুন যেখানে, সাধারণত চুপচাপ থাকা রাহুল টেলিফোনে মায়ের সঙ্গে কথা বলে। অথচ, তার মা আগেই মারা গিয়েছেন।
ছুরি দিয়ে বুকে ‘কিরণ’ নামটি লেখেন। অথবা সেই দৃশ্য যেখানে জুহি চাওলার বাগদত্তা সানি দেওল ছদ্মবেশে থাকা শাহরুখকে চিনতে পেরে তাঁর (শাহরুখের) পিছনে ছুটে যান।
প্রায় তিন মিনিট ধরে চলতে থাকা সেই ধাওয়া করার দৃশ্য চলাকালীন শাহরুখ অভিনীত চরিত্রটি ‘ভুল’ জেনেও অনেক দর্শক কিন্তু তাঁরই পাশে থাকে।
যদিও অনেকেই এই চরিত্রটিকে ‘বিষাক্ত’ বলে ছবিটির সমালোচনা করেন, তবে ‘ডর’ বা ‘বাজিগর’এই দুটো ছবিতেই শাহরুখ ‘অ্যান্টি-হিরো’র চরিত্রে (যা অন্যান্য নায়কেরা করতে রাজি ছিলেন না) অভিনয় করে নিজের জন্য একটা বিশেষ জায়গা তৈরি করেছিলেন।
কিং খান
‘দিল ওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’, ‘দিল তো পাগল হ্যায়’, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ এই সব ছবিই পরে শাহরুখ খানকে ‘কিং খান’ বানিয়েছে।
তাঁর কিং খান হয়ে ওঠার পথ যদিও মসৃণ করেছিল ওই অ্যান্টি-হিরো চরিত্রগুলিই। একই সাথে দর্শকদের সঙ্গেও এমন এক অভিনেতার পরিচয় করায়, যিনি ঝুঁকি নিয়ে ভয় পান না-সেটা ‘অনজাম’, ‘মায়া মেমসাহাব’ হোক বা ‘ও ডার্লিং ইয়ে হ্যায় ইন্ডিয়া’-র মতো ছবি।
তবে, সুপারস্টারডমের এই পথটায় যে শুধুমাত্র ফুলই বিছানো ছিল, এমনটা নয়। শুরুতে তাঁর বেশ কিছু ছবি ফ্লপও হয়।
সিনেমায় সুপারস্টারের ইমেজ থেকে সরে গিয়ে অন্য চরিত্রে অভিনয় না করার জন্য অনেকে তাঁর সমালোচনাও করেন।
এরই মধ্যে শাহরুখ খান বক্স অফিসে সব রেকর্ডও ভাঙেন। তারপর মানুষ যখন বলতে থাকেন, ‘শাহরুখের দিন শেষ’- সে সময়ে আবার ‘হিরো’ থেকে ‘জিরো’ও হয়ে যান।
পরে, বেশ কয়েক বছর শাহরুখকে সিনেমার পর্দায় দেখা না গেলেও অবশ্যই তাকে টিভিতে ‘বিমল ইয়ালাচি’র বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছে। একটা সময় তাঁর বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক তোলপাড় শুরু হয়, শাহরুখ খান তখন চুপ ছিলেন। তাঁর ছেলেকে যখন জেলে যায় তখনও কিন্তু তিনি চুপই ছিলেন।
পরে তিনি অবশ্য স্বভঙ্গিমায় জবাব দেন, ‘পাঠান’ এবং তারপর ‘জওয়ান’ ছবির মাধ্যমে।
‘ছেলেকে স্পর্শ করার আগে বাবার সঙ্গে কথা বলুন’ – এই সংলাপের মাধ্যমে নিজের নীরবতা ভাঙেন তিনি। ‘জওয়ান’-এর এই সংলাপের প্রত্যেকেই নিজের মতো করে অর্থ করে নিয়েছিলেন। তা সে রাজনৈতিক হোক বা অন্য অর্থ।
‘বাজিগর’ এবং ‘ডর’-এর মতো ‘জওয়ান’-এর আজাদ রাঠোরও এক ধরনের অ্যান্টি-হিরো। কিন্তু সেটা নব্বইয়ের দশকের ‘অ্যান্টি-হিরো’দের থেকে আলাদা।
ছবির মূল চরিত্র আজাদ রাঠোর একটি নজরদারি গোষ্ঠীর মাধ্যমে সমাজে ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতিকে চ্যালেঞ্জ করেন, তিনি আইন নিজের হাতে তুলে নেন, প্রচলিত নিয়ম কানুন তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়।
কিন্তু এই ‘অ্যান্টি-হিরো’ ‘বাজিগর’-এর ভিকি বা ‘ডর’ এর রাহুলের মতো কাউকে খুন করে না, বরং মানুষের জীবন বাঁচায়।
নম্রতা জোশী অবশ্য বলেছেন, “জওয়ান সফল হয়েছে ঠিকই, কিন্তু চলচ্চিত্র হিসেবে এটা আমার কাছে তেমন নয়।
এটি একটি পুরুষ-ভিত্তিক ছবি যেখানে শাহরুখ অবশ্যই নারীদেরও জায়গা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এর পরিবর্তে, আমি শাহরুখকে ‘চক দে ইন্ডিয়া’-র মতো ছবিতে বেশি দেখতে চাই, যেখানে তিনি নারীদের দলটাকে জয়ের পথে নিয়ে যান। জওয়ানদের মধ্যে লিঙ্গ-সমতা দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু আমি মনে করি না সেটা কাজ করেছে।”
বাজিগর
ব্যাপারটা শুরু হয়েছিল ‘বাজিগর’ দিয়ে, তাই সেখানেই শেষ করা যাক। ছবিটির শুটিং ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়েছিল। কিন্তু তার পরপরই মুম্বই দাঙ্গার আগুনে ঝলসে যায় এবং বেশ কয়েক মাস পরে এর শুটিং আবার শুরু হয়।
ছবির জন্য শ্রীদেবী, মাধুরী থেকে শুরু করে অনেক অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছিল। কিন্তু শ্রীদেবী দুই বোন অর্থাৎ কাজল ও শিল্পার চরিত্রে অভিনয় করতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু নির্দেশকের মনে হয়েছিল সিনেমায় শাহরুখের হাতে শ্রীদেবীর মতো বড় নায়িকার খুন হওয়ার বিষয়টি হয়তো দর্শকদের পছন্দ হবে না।
ছবিতে মদন চোপড়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন দলীপ তাহিল। মদনের থেকে প্রতিশোধ নিতেই অজয়ের (শাহরুখ খান) ভিকি অর্থাৎ বাজিগর হয়ে ওঠা। সম্প্রতি ‘দ্য আনট্রিগার্ড’ নামের একটি পডকাস্টে দলীপ তাহিল বলেন, “আমি লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে ছিলাম। এক মেয়ে আমার কাছে এসে বলল, ‘বাজিগর’-এ শাহরুখ খানকে এত মারলেন কেন? কী কারণে? সেই মেয়েটির মন জুড়ে ছিল শাহরুখ।”
‘বাজিগর’ ও ‘ডর’-এর খুনি ও নায়ক-বিরোধী চরিত্রকে কিছুটা হলেও মানবিক করে তোলার কৃতিত্বটা ছিল শাহরুখের।
এর মাঝেই কখনও তাঁকে দেখা গিয়েছে রাজের চরিত্রে, কখনওবা ভারতীয় নারী হকি খেলোয়াড়দের কোচ কবীর খান হিসেবে।
তিনিই আবার ‘স্বদেশ’-এ ফেরা মোহন, ‘পাহেলি’-র কিষণলাল, ‘ইয়েস বস’-এ চাঁদ-তারা মাটিতে নিয়ে আসতে চাওয়া রাহুল, ‘হে রাম’-এর আমজাদ আলি খান কিংবা ‘জিরো’র বাউয়া সিং।
বাস্তব আর পর্দার জীবনের মধ্যে এই চরিত্রগুলোর মধ্যে কেউ কেউ খুঁজে পেয়েছেন তাঁর নায়ক শাহরুখকে, কেউ পেয়েছেন খলনায়ক আর কেউবা অ্যান্টি হিরোকে।