দরজায় কড়া নাড়ছে বসন্ত, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা
দিবস। এই ৩ টি দিবসের বাজার ধরতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঝিনাইদহের
ফুলচাষীরা। দিবসগুলোতে দাম ভালো পেলে গত বছরে হরতাল অবরোধে যে ক্ষতি হয়েছে
তা পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবে বলে আশা তাদের। এদিকে ভালো ফলন পেতে কৃষি
বিভাগের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে নানা পরামশ।
ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার গান্না গ্রামের মাঠ। মাঠভর্তি বাগানে শোভা
পাচ্ছে গাঁদা, গোলাপ, জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকাসহ নানা জাতের ফুল। রং বেরং এর
ফুলে মাঠগুলো সেজেছে যেন নতুন সাজে। সেই ফুলের বাগানে পরিচর্যায় ব্যস্ত
চাষীরা। এখন ফুলের ভরা মৌসুম তারপরও ধরতে হবে তিনটি উৎসব। যে কারণে ব্যস্ততা
বেড়েছে তাদের। ফুলের কড়ি ধরে রাখতে আর ফলন ভালো পেতে বাগানগুলোতে চলছে
পরিচর্যা। কেউবা জমিতে সেচ দিচ্ছে, করছে আগাছা দমন আবার কেউ করছেন
কীটনাশক স্প্রে।
ঋতুরাজ বসন্ত, ভালোবাসা দিবস আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ফুলের
চাহিদা থাকে বেশি। সেই চাহিদা মিটিয়ে ভালো লাভের আশায় দিনরাত পরিশ্রম
করছেন কৃষকরা। দিবসগুলোতে ঘীরে সারা বছরের লাভ-লোকসানের হিসাব মেলান
তারা। উর্দ্ধগতির বাজারে ফুল চাষে বেড়েছে সব ধরনের খরচ। তাই দাম ভালো পেলে
হরতাল অবরোধে যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে লাভের মুখ দেখবেন এমনটিই আশা
তাদের।
ফুল চাষী রফিকুল ইসলাম জানান, বসন্ত, ভালোবাসা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা
দিবসে ফুলের চাহিদা থাকে বেশি। তবে সঠিক সময়ে যদি ফুল তুলে বাজার ধরতে
পারি তাহলে এবার ভালো দাম পাব বলে আমি আশা করছি।
অপর ফুল চাষী আশাদুল বিশ^াস জানান, আমরা আশা করছি এবার ফুলের ভালো দাম
পাব। এছাড়াও হরতাল অবরোধে আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে এবছর লাভের মুখ দেখবো এমনটিই আশা করছি।
ফুল বাগানের মালী আলমঙ্গীর হোসেন জানান, আমি ফুলের বাগানে কাজ করি
দির্ঘদিন ধরে। তবে এই তিনটি দিবস একই মাসে হওয়াই আমার ব্যস্ততা এতটাই
রেড়ে যাই যে আমি কারও সাথে ঠিক মত কথাই বলতে পারি না। এমন কি আমি
সময় মত খাবার খেতেও পারি না।
সদর উপজেলার গান্না বাজারের ফুল ব্যবসয়ী মতিয়ার রহমান জানান, বর্তমানে
বাজারে গোলাপ ফুলের সংকট দেখা দিয়েছে কারণ সামনে বিশ^ ভালোবাসা
দিবস। আর ভালোবাসা দিবসের দিন একটি গোলাপ ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রী
হবে বলে আশা করি।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আজগর আলী জানান, ফলন
ভালো পেতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের দেওয়া প্রযুক্তিগত সহযোগিতার
পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে নানা পরামর্শ। এতে ফুলের ফলন ভালো হবে ও দামও ভালো
পাবে। এছাড়াও পূর্বের ক্ষতি কাটিয়ে লাভের মুখ দেখবেন এ জেলার ফুল চাষীরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছরে রবি মৌসুমে জেলায়
৫৪ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে নানা জাতের ফুলের। যা বিক্রি করে আয় হবে প্রায় আড়াই কোটি টাকা।