বেইলি রোডের অগ্নিকান্ডের ঘটনা এখনো রয়েছে গণমাধ্যমে আলোচনার শীর্ষে। টানা ২য় দিনের মতো পত্রিকাগুলোর প্রথম পাতায় ও প্রধান সব শিরোনামে ঠাঁই পেয়েছে এই আগুন ঘিরে নানান সব খবরাখবর।
দৈনিক সমকাল শিরোনাম করেছে – সবার ভেজাচোখ বেইলি রোডে। এর সাথে একটা ছবি জুড়ে দিয়েছে তারা। যার ক্যাপশনে লেখা, চুলে ঝুঁটি বাঁধা, পায়ে গোলাপি মোজা আধখোলা। পরনে ভালোবাসার ডিজাইনে জিন্সের প্যান্ট।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে বিভীষিকাময় আগুন কেড়ে নিয়েছে আড়াই বছর বয়সী ফুটফুটে শিশু ফাইরোজের প্রাণ। যেন দেখে মনে হয় একটা ছোট পরী ঘুমোচ্ছে। পরে জানা যায় তার সঙ্গে মা-বাবারও মৃত্যু হয়েছে।
ঝুঁকি জেনেও কেউ ব্যবস্থা নেয় নি – প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম। তারা লিখেছে, রাজধানীর বেইলি রোডের ভবনটিতে যে আগুনের ঝুঁকি ছিল, তা জানত সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা। তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। ভবন কর্তৃপক্ষও গায়ে মাখেনি। মানুষের মৃত্যুর পর বেরিয়ে এসেছে গাফিলতির চিত্র।
বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের বহুতল ভবনে গত বৃহস্পতিবার রাতের আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১১ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁরা কেউ ‘শঙ্কামুক্ত’ নন। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৭৫ জনকে।
আগুনের ভয়াবহতা ও মৃত্যুর পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন গতকাল শুক্রবার বেইলি রোডে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ভবনটিতে কোনো অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে তিনবার চিঠি দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) জানিয়েছে, ভবনটিতে রেস্তোরাঁ বা পণ্য বিক্রয়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না। আগুনের ঝুঁকি ও অনুমোদন না থাকার পরও ভবনটিতে আটটি রেস্তোরাঁ চলছিল বছরের পর বছর ধরে।
একটি প্রশ্ন দিয়ে প্রধান শিরোনাম করেছে ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। লিখেছে – Who is to enforce fire safety? Fire service, Rajuk or city corp? অর্থাৎ অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে কে? ফায়ার সার্ভিস, রাজউক নাকি সিটি কর্পোরেশন?
বলা হয় লিপ ডে-র নানান সব বিশেষ অফার সেদিন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তরুণদের নিয়ে আসে ঐ ভবনে। আর আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যুর পর জানান যায় যে ভবনটিতে না ছিল কোন অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা না জরুরি নির্গমন পথ। আবার সিঁড়িতে ভর্তি করে রাখা ছিল গ্যাস সিলিন্ডার।
সাধারণত অতীতে এরকম ঘটনায় দেখা গিয়েছে কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে গিয়ে একজন আরেকজনকে দোষারোপ করতে থাকে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা নিয়ে অবহেলার জন্য। কিন্তু আসলে একটা ভবনে সবরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে কি-না এটা দেখভাল করার দায় কার?
আর ঢাকা ট্রিবিউনের শিরোনাম Everything was wrong এতে বলা হয় দোকান-রেস্টুরেন্টের অনুমোদন ছিল না, কোন ফায়ার সেফটি নেই, কোন ইমার্জেন্সি এক্সিটও ছিল না এই ভবনে।
বলা হচ্ছে রাজধানীর বেইলি রোডে আগুনের ঘটনার কথা উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় ৪৬ জন লোক মারা গেছেন এর থেকে কষ্টের আর কী হতে পারে! অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা বাড়ানোর নির্দেশ দিচ্ছি, সেটা কিন্তু আর মানে না।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বেইলি রোডে যেখানে আগুন লেগেছে সেখানে কোনো ফায়ার এক্সিট নেই। এসব ভবন নির্মাণে ইঞ্জিনিয়ার এবং মালিকদের গাফিলতি থাকে। এসব ক্ষেত্রে সচেতনতা খুব প্রয়োজন।
ভবনের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা কেমন হবে আইনে পরিষ্কারভাবে বলা আছে। অথচ ভবন মালিকরা জেনেবুঝেও তা মানছেন না। যত্রতত্র রাখা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে না ফিটনেস। আবাসিক ভবনে কেমিক্যাল রাখা বন্ধ হয়নি। ওদিকে দেখভালের দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থাগুলোও আগের ভূমিকায়। ঘুষের বিনিময়ে সবকিছু জায়েজ করে দেওয়ার গুরুতর অভিযোগও আছে।
আইনের কিছু দুর্বলতাও বিদ্যমান। তবে এসব নিয়ে দায়িত্বশীলদের মাথাব্যথা কম। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে কিছুদিন হইচই। তারপর সবকিছু আগের মতো। এসব কারণে নিয়ম না মানার এক প্রতিযোগিতা চলছে সর্বত্র। এর ফলে রাজধানী নগরী ঢাকা এখন রীতিমতো অগ্নিকুণ্ডের ওপর বসে আছে।
মার্চ থেকেই জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ কার্যকর – কালের কন্ঠের খবর। বিস্তারিত হল আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি কার্যকর হচ্ছে চলতি মার্চ মাস থেকেই। এখন প্রতিমাসে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ হবে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামের সঙ্গে দেশেও ওঠানামা করবে দাম।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে ‘জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ নির্দেশিকা’ এর প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার সংক্রান্ত ১০টি বিবেচ্য বিষয় দিয়ে হিসাব-নিকাশ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিজেল, পেট্রল, অকটেন, কেরোসিনের মূল্য নির্ধারণের নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়।
আইএমএফের শর্ত পূরণে ডিজেল, পেট্রল, অকটেনসহ জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিল রেখে নিয়মিত সমন্বয় করার উদ্যোগ নেয় সরকার। শুরুতে এটি তিন মাস পরপর নির্ধারণের পরিকল্পনা ছিল। তবে এখন প্রতি মাসে দাম নির্ধারণের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে তিন দিন গোলাগুলি বন্ধ থাকলেও গত বৃহস্পতিবার নতুন করে আবার গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত গোলাগুলির তীব্রতা বেড়েছে। গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত কেঁপে ওঠে।
প্রতিমন্ত্রী হলেন আরও ৭ জন – মানবজমিনের খবর এটি। বলা হয় মন্ত্রিসভায় আরও ৭ জন প্রতিমন্ত্রী যুক্ত হয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যায় তারা বঙ্গভবনে শপথ নিয়েছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীসহ ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা যাত্রা শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে সরকার। দুই মাস না পেরুতেই সেই মন্ত্রিপরিষদে যুক্ত হলেন আরও ৭ সদস্য। এখন মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা হলো প্রধানমন্ত্রীসহ ৪৪ জন। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী ও ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী।
অস্ত্রর লাইসেন্স আনাড়ির হাতে ঘটছে দুর্ঘটনা – কালবেলার অন্যতম শিরোনাম এটি। বলা হয় কোনোরকম প্রশিক্ষণ না থাকলেও অস্ত্র নিয়ে ঘুরছে বিপুলসংখ্যক মানুষ। সরকারের কাছ থেকে অনুমতি (লাইসেন্স) নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র বহন করলেও ন্যূনতম ব্যবহারিক জ্ঞান নেই অনেকেরই। এমনকি এগুলো কীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়—সে সম্পর্কেও অধিকাংশের নেই স্পষ্ট ধারণা। এ অজ্ঞতার কারণেই লাইসেন্সধারীদের বৈধ অস্ত্রে ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা। জানা গেছে, দেশে ৭০ হাজারের বেশি বিভিন্ন ধরনের বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে।
বলা হয় একজন প্রাপ্তবয়স্কের দিনে খাদ্য গ্রহণ করতে হয় কমপক্ষে ২ হাজার ১২২ ক্যালরি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাবে প্রয়োজনীয় ন্যূনতম ক্যালরির এ খাদ্য গ্রহণে গড় মাথাপিছু ব্যয় মাসে ১ হাজার ৮৫১ টাকা। এটিকেই ফুড পোভার্টি লাইন বা খাদ্য দারিদ্র্যসীমা হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে বিবিএস।
আর বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) হিসাবে, গত ডিসেম্বরজুড়ে এ ন্যূনতম ক্যালরিসমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করতে দেশের মানুষকে মাথাপিছু ব্যয় করতে হয়েছে ২ হাজার ৭৯৯ টাকা। সে হিসেবে বিবিএসের মাথাপিছু ন্যূনতম খাদ্য গ্রহণের খরচ ডব্লিউএফপির তুলনায় ৩৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ বা ৯৪৮ টাকা কম।
দুই সংস্থার তথ্যে এ বড় ব্যবধানের কারণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিবিএস যেটিকে খাদ্য দারিদ্র্যসীমা হিসেবে দেখাচ্ছে, সে মূল্যে একজন মানুষের পক্ষে খাবারের ন্যূনতম চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়।
অন্যান্য খবর
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট বিপিএল নিয়ে দেশ রুপান্তরের শিরোনাম – বরিশালের প্রথম শিরোপা। তারা লিখেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের জয়রথ থামিয়ে দিয়েছে ফরচুন বরিশাল। টানা চারবার ফাইনালে ওঠা কুমিল্লা দেখছিল পঞ্চম শিরোপা জয়ের স্বপ্ন। তাদের স্বপ্নকে অধরাই রেখে দিল তামিম ইকবালের দল। কুমিল্লাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে বিপিএলের দশম আসরের শিরোপা জিতল ফরচুন বরিশাল।
আগের বছরগুলোতে যা হয়, শেষ সময়ে এসে অনেকে বই কিনেন। এবারও তাই হচ্ছে। গতকাল ছিল বইমেলার বর্ধিত সময়ের প্রথম দিন। শেষ সময়ে অনেকেই মেলা ঘুরে দেখছেন যারা এতদিন আসতে পারেননি নানা কাজে জড়িয়ে পড়ায়। আজ শনিবারও মেলায় থাকবে জনস্রোত। আজ বইমেলার ৩১তম দিনে মেলা শুরু হবে বেলা ১১টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।