বিদেশে পড়তে যাওয়ার জন্য স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে তিন সপ্তাহরও বেশি সময় ধরে ব্যাংকে ব্যাংকে ঘুরেছেন আহনাফ আহমেদ। মি. আহমেদ সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির ডাক পেয়েছেন।
কিন্তু ব্যাংকে স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও বেতনের অর্থ জমা দিতে পারছিলেন না তিনি।
“এত দৌড়াদৌড়ি করার পরও কোনো ব্যাংক স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে রাজি হয়নি। শেষে প্রভাবশালী এক আত্মীয়ের তদবিরে বেসরকারি একটি ব্যাংকে ফাইল খুলতে সক্ষম হয়েছি”, বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন মি. আহমেদ।
পড়াশোনার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিদেশে পাড়ি জমান। এক্ষেত্রে যাওয়ার আগেই তাদেরকে ভর্তি ফি, বেতনসহ পড়াশোনার খরচের বড় একটি অংশ আগেই ডলারের হিসেবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাতে হয়।
সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকে একটি বিশেষ হিসাব খোলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিদেশের এসব ফি পরিশোধ করে থাকে, যেটি স্টুডেন্ট ফাইল নামেই বেশি পরিচিত।
কিন্তু ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো এখন নতুন করে স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এতে বিপাকে পড়ছেন বিদেশে পড়তে যেতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা।
স্টুডেন্ট ফাইল না খোলার জন্য ব্যাংকগুলোর কোনো কোনোটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার দোহায় দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করছেন কেউ কেউ।
“ফাইল না খোলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে কয়েকটি ব্যাংক আমাকে বলেছে যে, ডলারের সংকট থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশেই তারা নতুন ফাইল খুলছেন না”, বিবিসি বাংলাকে বলেন হাসিবুর রহমান নামের একজন শিক্ষার্থী।
যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, তাদের পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
আরও যত সমস্যা
ভর্তি ফি পাঠানোর পর বিদেশে থাকা-খাওয়ার জন্যও ডলার নেওয়ার প্রয়োজন হয় শিক্ষার্থীদের।
এক্ষেত্রে কেউ কেউ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলেও শিক্ষার্থীদের অনেকেই পাসপোর্টে এনডোর্সের মাধ্যমে বিদেশে ডলার নিয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক বিদেশ যাওয়ার সময় এক বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার এনডোর্স করতে পারেন।
যদিও একজন ব্যক্তি একবারে নগদ পাঁচ হাজার ডলারের বেশি সঙ্গে নিতে পারেন না।
কিন্তু সংকটের কারণে কোনো কোনো ব্যাংক এখন পাঁচশ ডলারের বেশি এনডোর্স করছে না বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
“আমার যেখানে অন্তত: তিন হাজার ডলার সঙ্গে নেওয়া প্রয়োজন, সেখানে পাঁচশ ডলার নিয়ে আমি কী করবো?”, বিবিসি বাংলাকে বলেন উচ্চশিক্ষায় বিদেশে যেতে ইচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শিক্ষার্থী এটাও জানিয়েছেন যে, অন্য ব্যাংকগুলোতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে শেষমেশ হুন্ডির মতো অবৈধ পথেই হয়তো তাকে বিদেশে অর্থ নিয়ে যেতে হবে।
এছাড়া ইতিমধ্যেই যারা বিদেশে পড়াশোনা করছেন, অনেক ক্ষেত্রে তারাও বৈধপথে দেশ থেকে খরচের অর্থ নিতে পারছেন না বলে অভিযোগ করছেন।
“বাসাভাড়া, খাওয়া-দাওয়া এবং অন্যান্য হাতখরচ বাবদ প্রতিমাসেই বাড়ি থেকে আমাকে কিছু ডলার পাঠায়। এবার সেটার সাথে টিউশন ফি যুক্ত হওয়ায় পুরোটা ব্যাংকের মাধ্যমে আনা সম্ভব হয়নি”, বিবিসি বাংলাকে বলেন আশরাফ কবির।
মি. কবির কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করছেন। ব্যাংকের মাধ্যমে আনতে না পেরে সহজ বিকল্প হিসেবে তিনিও হুন্ডির পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
“এতে খরচ অবশ্য কিছুটা বেশি পড়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টিউশন ফি জমা দেওয়ার জন্য অন্য কোনো উপায় ছিলো না”, বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন মি. কবির।
বাংলাদেশে সাধারণত সেপ্টেম্বর-অক্টোবর এবং ফেব্রুয়ারি-মার্চ সেমিস্টারে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী বিদেশে যায়।
উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ গমনেচ্ছু একজন শিক্ষার্থীকে শুরুতে ভর্তি ও অন্যান্য ফি বাবদ ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার, ক্ষেত্র বিশেষে আরও বেশি পরিমাণ ডলার বিদেশে পাঠানোর প্রয়োজন পড়ে।
এরপর টিউশন ফি হিসেবে প্রতি ছয় মাস পরপর প্রায় ১০ হাজার ডলার পাঠাতে হয়।
এর বাইরে, থাকা-খাওয়া ও অন্যান্য হাতখরচ বাবদ মাসে গড়ে দেড় থেকে তিন হাজার ডলার পর্যন্ত বিদেশে পাঠান অভিভাবকরা।
অভিভাবকেরা বলছেন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে টাকা নিতে চায় না। সেসব ক্ষেত্রে বেকায়দায় পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের।
এদিকে, ডলার সংকটের মুখে স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে না পারায় বিদেশে শিক্ষার্থী পাঠানোর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যহারে কমে গেছে বলে জানিয়েছে এ কাজের সাথে যুক্ত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলো।
“আগে বছরে আমরা যত স্টুডেন্ট পাঠাতাম, সংকট শুরু হওয়ার পর এখন সেটার চারভাগের একভাগ শিক্ষার্থী পাঠাতে পারছি”, বিবিসি বাংলাকে বলেন উচ্চশিক্ষা বিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ব্লু বন্ডের কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার।
দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলতে থাকলে প্রতিষ্ঠান চালানো কষ্ট হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন মি. সারোয়ার।
কী বলছে ব্যাংকগুলো?
ডলার সংকটের কারণে যে নতুন করে স্টুডেন্ট ফাইল খোলায় আগ্রহ কমেছে, সেটি স্বীকার করছে ব্যাংকগুলোও।
“আগে আবেদন করলেই আমরা যেভাবে স্টুডেন্ট ফাইল খুলে দিতাম, সেটি আর এখন হচ্ছে না”, বিবিসি বাংলাকে বলেন ব্যাংকগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেডের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন।
মি. হোসেন ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ডলার সংকটের কারণে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের সবাইকে আমরা স্টুডেন্ট ফাইল খোলার সুবিধা দিতে পারছি না।”
ডলার সংকটের কারণে গত জাতীয় নির্বাচনের আগে এলসি খোলাও প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রমজান মাস উপলক্ষ্যে গত জানুয়ারির মধ্যভাগ থেকে ফের এলসি খোলা শুরু হয়।
এতে ডলারের উপর চাপ কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। আর সেজন্যই গড়ে সবাইকে না দিয়ে ব্যাংকগুলো দেখেশুনে স্টুডেন্ট ফাইল খুলছেন বলেও জানান তারা।
“যেহেতু সবাইকে দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা, কাজেই ফাইল খোলার ক্ষেত্রে এখন অনেক সময় আমরা নতুনদের চেয়ে পুরান গ্রাহক বা তাদের ছেলে-মেয়েদেরকে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছি”, বিবিসি বাংলাকে বলেন প্রিমিয়ার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রিয়াজুল করিম।
দেখে-শুনে ফাইল খোলার পেছনে আরও একটি কারণ উল্লেখ করেছেন তিনি।
“উচ্চশিক্ষার কথা বলে বিদেশে যাওয়ার পর অনেক সময় দেখা যায় তারা লেখাপড়া বাদ দিয়ে সেখানে অবৈধভাবে থেকে যাচ্ছে। আমরা যেহেতু ফাইল খুলে দিচ্ছি, ফলে এটি আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. করিম।
“দেখে-শুনে স্টুডেন্ট ফাইল খোলার পেছনে এটিও একটি বড় কারণ”, বলছিলেন তিনি।
অন্যদিকে, দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বাংলাদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বিদেশে যাওয়ার সংখ্যা কমেনি, বরং ক্রমেই বাড়তে দেখা যাচ্ছে।
ইউনেস্কোর হিসেবে দেখা যাচ্ছে, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ থেকে সাড়ে ১৬ হাজার শিক্ষার্থী বিদেশে পড়তে গিয়েছিল। গত দেড় দশকে সেই সংখ্যা তিন গুণেও বেশি বেড়েছে।
“দিন যত যাচ্ছে, এই সংখ্যা আরও বাড়ছে। ফলে ক্যাপাসিটির বাইরে চলে যাওয়ায় অনেক সময় আবেদনকারীদের সবার ফাইল খোলা সম্ভব হচ্ছে না”, বিবিসি বাংলাকে বলেন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন।
এছাড়া একসাথে ৫০০ ডলারের বেশি নগদ এনডোর্স করা হচ্ছে না বলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে যে অভিযোগ করা হয়েছে, সেটিও সত্য নয় বলে দাবি করেছেন তিনি।
“এনডোর্সমেন্টের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। সেটি মেনেই ব্যাংকগুলো ডলার এনডোর্স করে থাকে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. হোসেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বিদেশ গমনকালে এক বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার বা সমমানের বৈদেশিক মুদ্রা এনডোর্স করতে পারেন।
“এক্ষেত্রে কেউ যদি বছরের সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করে না থাকেন, তাহলে পাঁচশ ডলারের অধিক এনডোর্সমেন্ট নিতে না পারার কোনো কারণ দেখছি না”, বলেন মি. হোসেন।
এছাড়া মি. হোসেন এটা জানিয়েছেন যে, চরম সংকটে প্রয়োজন মনে করলে একটি ব্যাংকের কর্তৃপক্ষ দৈনিক ডলার এনডোর্সমেন্ট কমানো বা নতুন করে স্টুডেন্ট ফাইল খোলা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার মতো সিদ্ধান্তও নিতে পারে।
যা বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক
ডলার এনডোর্সমেন্ট কিংবা স্টুডেন্ট ফাইল খোলার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তরফ থেকে কোনো ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।
“নিজেদের সক্ষমতার উপর নির্ভর করে ব্যাংকগুলো নিজেরাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে স্টুডেন্ট ফাইল খোলার ব্যাপারে কোনো বিধি-নিষেধ জারি করা হয়নি”, বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. হক।
বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ধরে, বিশেষ করে করোনা মহামারীর পর থেকেই ডলার সংকট দেখা যাচ্ছে। ২০২১ সালে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যেখানে ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছিল, সেটি কমতে কমতে এখন ২৫ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলারে এসে ঠেকেছে।
ডলারের বাজারেও দেখা যাচ্ছে অস্থিরতা। সরকার ডলারের দাম ১১০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি দরে।
এমন পরিস্থিতিতে সংকট কাটিয়ে ডলারের খরচ কমাতে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্বতাসাধন, গুরুত্বপূর্ণ পণ্য ব্যতীত এলসি খোলা নিরুৎসাহিতকরণ-সহ নানান ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার।
“এতকিছুর পরও কিন্তু বিদেশে উচ্চশিক্ষার বিষয়টি নিরুৎসাহিত করা হয়নি। আর সে কারণেই শিক্ষার্থীরা এখনও বিদেশে পড়তে যেতে পারছে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।
তবে আগেও বিভিন্ন সময় ডলার সংকটের মুখে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে নতুন করে স্টুডেন্ট ফাইল বন্ধ রাখতে দেখা গেছে, বিশেষে করে গত দুই বছরে।
ডলার সংকটের কারণে ২০২২ সালের নভেম্বরে সাময়িক সময়ের জন্য নতুন স্টুডেন্ট ফাইল বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো।
পরের বছরের শুরু ও শেষের দিকেও কিছুদিন একই অবস্থা চলতে দেখা যায়।
তখন ডলার সাশ্রয় করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি করার প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।
এছাড়া ডলার সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিতেও দেখা গেছে।
পাশাপাশি ডলারের লেনদেন ও জমানোর ব্যাপারে প্রয়োজনের নিরিখে নানান কড়াকড়িও আরোপ করা হয়েছে।
এর মধ্যে গত অগাস্টে ডলার সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের ৩০শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে দশ হাজার ডলারের অতিরিক্ত বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির নির্দেশ দিয়েছিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এই সময়ের পর কারো কাছে অতিরিক্ত ডলার পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশ করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে।
সংকট কাটবে কবে?
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে ৪৯ হাজারেরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন গেছেন।
এর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থী গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। দুই হাজার একুশ সালে সাড়ে আট হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পড়তে গেছেন দেশটিতে।
এছাড়া মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়াতেও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে যান।
কিন্তু উচ্চশিক্ষায় বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা এখন ফাইল খোলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গান নানান সমস্যার মুখে পড়ছেন।
“ডলারের সংকট না কাটা পর্যন্ত এগুলো কিছুটা থাকবে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন।
কিন্তু সেই সংকট কাটতে কতদিন লাগবে?
“এটা সুনির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। তবে ডলারের সংকট এখন আগের চেয়ে কমতে শুরু করেছে”, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এই সংকট অনেকটাই কমে আসবে বলে আশা করছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।
যদিও অর্থনীতিবিদরা বলছেন ভিন্ন কথা।
“বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য আমদানির তুলনায় রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করতে হবে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
“একই সাথে প্রবাসী আয় বাড়ানো এবং অবৈধপথে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন বন্ধ করতে পারলে ডলারের সংকট কিছুটা কাটতে পারে”, বলেন মি. মোয়াজ্জেম।
কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কোনো ধরনের পরিকল্পনা ছাড়া হঠাৎ করেই রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাড়ানো সম্ভব নয়।
কাজেই চলমান ডলার সংকট সহসাই কাটছে না বলে মনে করছেন তারা।