‘বিএনপি-জামায়াতকে এবার এত সহজে ছাড়া হবে না’, সমকাল পত্রিকার এই প্রধান শিরোনামে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যকে উদ্ধৃত করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে এক মতবিনিময় বৈঠকে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে চলমান সন্ত্রাস-সহিংসতা ও নৈরাজ্যের জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশজুড়ে নাশকতা চালিয়েছে জামায়াত-শিবির। মদদ দিয়েছে বিএনপি। ২০১৩-১৪ সালের আগুন সন্ত্রাস ও সহিংসতার বিচার হয়েছে। কিন্তু তাদের চরিত্র বদলায়নি। এবার বিএনপি-জামায়াতকে এত সহজে ছাড়া হবে না।”
এই খবরটি আজ দেশের অনেক পত্রিকারই প্রধান শিরোনাম।
“সব গ্রেডে একই বিধান”, এটি যুগান্তর পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। এ খবরে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরির নিয়োগে সব গ্রেডেই (৯ম থেকে ২০তম) একই বিধান অর্থাৎ ৯৩ শতাংশ মেধা ও সাত শতাংশ কোটা রাখার প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে।
জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে উদ্ধৃত করে এই খবরে বলা হয়েছে, “সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে কোটা যেভাবে এসেছে, ঠিক সেভাবেই প্রজ্ঞাপন জারির জন্য সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে আজই (সোমবার) প্রজ্ঞাপন জারির প্রস্তুতি নিয়ে আমরা অপেক্ষা করছি।”
এই খবরটিও আজ দেশের অনেক পত্রিকার প্রধান শিরোনাম।
“চাকরিতে নারীদের জন্য কোটা না থাকলে বৈষম্য আরও বাড়বে”, প্রথম আলোর প্রথম পাতার এই খবরে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন নাগরিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং গবেষক ও শিক্ষাবিদরা সরকারি চাকরিতে নারী কোটা রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন।
তারা মনে করছেন, এখনও চাকরিতে নারী ও পুরুষের অংশগ্রহণ সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এ পরিস্থিতিতে নারীদের কোটা একেবারেই না থাকলে এ বৈষম্য আরও বাড়বে। কেউ কেউ আবার মনে করেন যে চাকরিতে এখনই নারীদের কোটা চালু না করে কিছুদিন দেখা যেতে পারে। বৈষম্য না কমে এলে আবার কোটা চালু হতে পারে।
মূলত, রোববার সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ ও বাকি সাত শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই সাত শতাংশ কোটা’র মাঝে কোনও নারী কোটা নেই। কিন্তু এর আগে নারীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা ছিল।
“বিচ্ছিন্ন ঘটনা, আরো ৬ মৃত্যু”, এটি নয়া দিগন্ত পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। এখানে বলা হয়েছে যে গত কয়েকদিনের তুলনায় এখন অনেকটাই শান্ত রাজধানী ঢাকা। নতুন করে কোনও সংঘর্ষ না ঘটলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে গুলিবিদ্ধ আরও ১১ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এছাড়া, সিদ্ধিরগঞ্জের মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতাল ভবনের উপরে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের অফিস থেকে গতকাল তিন শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, গত রোববার বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যকার সংঘর্ষে তারা মারা যান।
“সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যবসায়ীদের”, কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রধান শিরোনাম এটি। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের যে বৈঠক হয়, সেখানে তারা এমন অঙ্গীকার করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। বৈঠকে সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি ব্যবসায়ীদের আস্থা ও বিশ্বাস আছে।
বিজিএমইএ সভাপতি এসএম মান্নান কচি বলেন, “আপনি সব সময় ব্যবসায়ীদের পাশে ছিলেন, আমরাও জীবন দিয়ে হলেও আপনার পাশে থাকবো। আপনি থাকলে এই দেশ এগিয়ে যাবে।” ব্যবসায়ীদের অনেকে বৈঠকে একই ধরণের বক্তব্য রাখেন।
“সহিংসতা থেমেছে, স্বাভাবিকতার অপেক্ষা”, দেশ রূপান্তরের প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে ঢাকাসহ দেশজুড়ে টানা ছয়দিনের রক্তক্ষয়ী সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞের পর পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শান্ত। তবে জনজীবন এখনও স্বাভাবিক হয়নি।
টানা সহিংসতার ফলে গত শুক্রবার রাত ১২টা থেকে দেশজুড়ে কারফিউ জারি ও সেনাবাহিনী মোতায়েনের পর রাস্তায় সাধারণ মানুষের চলাচল ও সড়কে যানবাহনের সংখ্যা একেবারেই কম থাকলেও, গতকাল থেকে তা কিছুটা বেড়েছে।
পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আজ মঙ্গলবার ঢাকায় দুপুর একটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে।
বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রেতার ২০ কোটি ডলারের পণ্যের চালান আটকে গেছে”। এই খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্যতম বড় পোশাক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান হল সুইডিশ কোম্পানি এইচঅ্যান্ডএম।
প্রতিষ্ঠানটি বছরে ৩০০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থমূল্যের পোশাক বাংলাদেশ থেকে আমদানি করে। ইন্টারনেট পরিষেবার বন্ধ হয়ে পড়ায় কোম্পানির ক্রয়াদেশ প্রস্তুত করা ২০ কোটি ডলার মূল্যের চালান এখন চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে রয়েছে।
এইচঅ্যান্ডএম বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউর রহমান বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরে আমাদের প্রচুর মালামাল পড়ে আছে। শুধু ইন্টারনেট নেই বলে আমরা এগুলো হ্যান্ডওভার করতে পারছি না। কারফিউ থাকলেও যদি ইন্টারনেটটা চালু থাকতো, তাহলেও হত। আমাদের অন্তত ২০০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য পড়ে আছে, যেগুলো আমরা কার্গো করতে পারিনি।”
“সংঘাতের ঘটনায় ঢামেকে ৭৮ লাশ”, মানবজমিন পত্রিকার প্রধান শিরোনাম এটি। চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে কয়েকদিনের সংঘাত-সংঘর্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭৮জনের মৃত্যুর রেকর্ড করা হয়েছে। তাদের কারও লাশ এসেছে হাসপাতালে, কারও আবার মৃত্যু হয়েছে চিকিৎসাধীন অবস্থায়।
এছাড়া, আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন এক হাজার ৫৫৪ জন। আহতদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ। গত ১৫ই জুলাই থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত, আট দিনের এই পরিসংখ্যান দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হতাহতের মধ্যে শিক্ষার্থী, পথচারী, ব্যবসায়ী, রিকশা চালকসহ নানা পেশার মানুষ রয়েছেন।
ঢামেকের বাইরে সোহরাওয়ার্দী হাসতাপাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল (মিটফোর্ড) কলেজ হাসপাতাল, উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালেও সংঘর্ষে নিহতদের লাশ নেওয়া হয়।
“সহিংসতায় রাজধানীতে ৩০ মামলা, গ্রেফতার ৫১৬”, দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার প্রথম পাতার এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত পাঁচ দিনের সহিংসতার ঘটনায় রাজধানীতে পুলিশের পক্ষ থেকে ৩০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এসব মামলায় বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাসহ অজ্ঞাত প্রায় ২০ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।
ডিএমপি’র একাধিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে এই খবরে বলা হয়েছে, রাজধানীর যেসব এলাকায় দুর্বৃত্তরা নাশকতা চালিয়েছে, সেসব এলাকার বিভিন্ন ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ফুটেজ দেখে নাশকতাকারীদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এছাড়া, ঘটনাস্থলে অনেকে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেছে। তাদের কাছ থেকে ভিডিও সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে।