বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের ‘হেফাজতে’ নিয়েছে। এনিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পাঁচজন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বা ডিবির ‘হেফাজতে’ রয়েছে। বিষয়টি স্বীকার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
শনিবার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জুনায়েদ আলম সরকার বিবিসি বাংলাকে বলেন, “গত কয়েকদিনে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিষয়ে জানতে ও তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়েছে”।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসারত অবস্থায় আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে ‘তুলে নিয়ে যাওয়ার’ অভিযোগ উঠে।
এদিকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার করে আদালতের রায় পর সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপনকে প্রত্যাখ্যান করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
শনিবার রাতে অনলাইনে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন তিন দাবিতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা।
এসব দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে আরো ‘কঠোর কর্মসূচি’ ঘোষণার কথা জানান তারা।
তিন দাবিতে আল্টিমেটাম
শনিবার রাতে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক জানান, পুলিশের ধরপাকড়সহ নানা কারণে সব সমন্বয়কদের সাথে তারা যোগাযোগ করতে পারছেন না। যে কারণে সমন্বিতভাবে তারা কোন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারছেন না।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, “আন্দোলনের মূল দাবি মেনে নেয়া হয়েছে বলে প্রচার করছে সরকার। কিন্তু আমাদের দাবি ছিল কমিশন গঠন করে এই সংকটের সমাধান করা। কিন্তু সেটি করা হয়নি বলেই আমরা এই পরিপত্র প্রত্যাখ্যান করছি।
অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারসহ সমন্বয়কদের গ্রেফতার ও মামলা হামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।
মি. মাসুদ বলেন, “রোববারের মধ্যে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ, আসিফ মাহমুদসহ আটক সকল শিক্ষার্থীদের মুক্তি, মামলা প্রত্যাহার ও শিক্ষার্থী গণহত্যার সাথে জড়িত মন্ত্রী পর্যায় থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত সকল দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে”।
তিনি জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই তিন দফা না মানা হলে তা না হলে পরশুদিন থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আরো কঠিন কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে।
একই সাথে রোববার সারাদেশের দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন কর্মসূচিরও ঘোষণা দেয়া হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
এছাড়া সোমবার থেকে সারাদেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জেলা, উপজেলা ও নগরকেন্দ্রিক “হেলথ ফোর্স” গঠন করে আহত-নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি, এবং আহত-নিহত ছাত্র-নাগরিক ও তাদের পরিবারকে মানসিক ও আর্থিকভাবে সহযোগিতা কার্যক্রম পরিচালনার ঘোষণা দেয়া হয়।
একইসাথে “লিগ্যাল ফোর্স” গঠন করে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের নামে মামলার ডকুমেন্টেশন এবং যাদের আইনি সাহায্যের প্রয়োজন তাদেরকে সেই সাহায্যের ব্যবস্থা করারও ঘোষণা দেয়া হয়।
‘নিরাপত্তা দিতেই ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়েছে’
কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ পাঁচ সমন্বয়কের নামে এখনো কোন মামলা হয়নি বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
শনিবার রাতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুনায়েদ আলম সরকার বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ওই পাঁচ জন নিরাপত্তার নিয়ে সংশয়ে ছিল। যে কারণে ডিবি তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে হেফাজতে নিয়েছে”।
একই সাথে সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে তাদের কাছে তথ্য নেয়া হবে বলেও জানান মি. সরকার।
কিন্তু তারা কী ধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ছিল? এই প্রশ্নে কোন উত্তর দেননি গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা।
বিবিসি বাংলাকে নাহিদ ইসলামের পিতা বদরুল ইসলাম বলেন, “আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্ত আমার ছেলের সাথে কোন যোগাযোগ করতে পারিনি। এই অবস্থায় কী করবো বুঝতে পারছি না”।
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, মামলা ছাড়া কেন তাদের তুলে নেয়া হয়েছে। এতক্ষণ ধরে আটকে কেন রাখা হয়েছে সেটিও জানতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন বলেও জানান তাদের পরিবারের সদস্যরা।
সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদের পিতা বিল্লাল হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “আমরা শুনছি পুলিশের কাছে আছে। আমরা তো কোন যোগাযোগও করতে পারছি না তারা কেমন আছে, কিভাবে আছে। ছেলের নামে মামলা হইছে কী না তাও জানি না। এখন আমরা কি করবো”?
তবে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে তাদের নামে কোন মামলা হয় নি। আগেও তাদের নামে কোন মামলা নেই।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা মি. সরকার বলেন, “মামলা হয়নি, তবে তারা অনিরাপদ মনে করছিল তাই নিরাপত্তা দিয়ে রেখেছি আমরা”।
নুরকে নির্যাতনের অভিযোগ
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত শুক্রবার গভীর রাতে হাতিরঝিলের বাসা থেকে আটক করা হয় ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে।
এরপর গত বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে যখন হাজির করা হয় তখনকার কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায় পুলিশের কাঁধে ভর করে আদালতে হাজির করা হয় মি. নূরকে।
শনিবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে মি. নুরের স্ত্রী মারিয়া অভিযোগ করেন, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে তার স্বামীকে।
তিনি জানান, গত ২০শে জুলাই ভোর রাতে দরজা ভেঙে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা নুরকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ডিবি, র্যাব কার্যালয় ও হাতিরঝিল থানায় খোঁজ নিলে তারা কোনও তথ্য দেয় নি।
মিজ আক্তার বলেন, যেদিন তাকে কোর্টে তোলা হল সেদিন গিয়ে যা দেখলাম তা কোনও মানুষ সহ্য করতে পারবে না। গ্রেফতারের পর থেকে তার ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। এমন নির্যাতন করা হয়েছে যে নুর নিজের পায়ে হেঁটে আদালতে আসতে পারেনি।
নুরের চিকিৎসার দাবি জানিয়ে মিজ আক্তার বলেন, “আমার অনুরোধ সন্তানের জীবন থেকে বাবার স্নেহ যেন কেড়ে নেওয়া না হয়। আমি দাবি জানাই নুরকে আর যেন রিমান্ড নেওয়া না হয়। তার চিকিৎসা ব্যবস্থা যেন করা হয়”।
নুরের স্ত্রী এসময় বলেন, “প্রয়োজনে ওকে আমরা রাজনীতি করতে আমরা দিব না। তবু আমার হাজবেন্ডকে আমাদের কাছে ফেরত দেয়া হোক।
চলছে মামলা ও গ্রেপ্তার অভিযান
পুলিশের দেয়া তথ্য মতে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত ১৬ই জুলাই থেকে ১৯শে জুলাই পর্যন্ত হামলা, সহিংসতা ও ভাঙচুরের অভিযোগে সারাদেশে ৫০০’র বেশি মামলা হয়েছে।
সূত্র জানাচ্ছে, এখন পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ সারদেশের যে সব মামলা হয়েছে তার বেশিরভাগ মামলার বাদী পুলিশ। আবার কোথাও কোথাও সরকারদলীয় নেতাকর্মীরাও মামলার বাদী হয়েছেন।
পুলিশের দেয়া তথ্যমতে এর মধ্যে শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকায় মামলা হয়েছে ২০৯টি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ফারুক হোসেন বিবিসিকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন অভিযোগে ঢাকায় যে সব মামলা হয়েছে এসব মামলায় আড়াই হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
এর মধ্যে বিএনপি, জামায়াত, গণঅধিকার পরিষদসহ কিছু রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীও রয়েছে।
দেশের বিভিন্ন থানায় যে সব মামলা হয়েছে এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা অনেককে আসামী করা হয়েছে।
প্রায় প্রতিদিন রাতেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা ব্লক রেইড দিয়ে যৌথ অভিযানের মাধ্যমে অনেককে গ্রেপ্তারেরও খবর পাওয় যাচ্ছে।
পরে তাদেরকেই অজ্ঞাত মামলায় আসামি করে আদালতে পাঠানো হচ্ছে। তাদের মধ্যে কারও কারও রিমান্ড চাওয়া হচ্ছে। আবার রিমান্ড ছাড়াই কোন কোন আসামিকে আদালত থেকে পাঠানো হচ্ছে কারাগারে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যা বললেন
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে শনিবার নারায়ণগঞ্জে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন শেষে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এসময় তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কারী তিনজনকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। কারা তাদের আক্রমণ করতে চায় সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসময় কথা বলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নতুন আট দফা দাবি নিয়েও।
তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলনের নেতারা নতুন যে ৮ দফা দাবী দিয়েছিলেন সে প্রসঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন এগুলোর মধ্যে যৌক্তিক দাবীগুলো ক্রমান্বয়ে মেনে নিবেন। কিন্তু সেই সুযোগ শিক্ষার্থীরা দেন নি।
তিনি দাবি করেন, একটি মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আক্রমণকারীদের প্রধান আক্রোশই ছিল পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের প্রতি। আমাদের র্যাব, পুলিশ, বিজিবি যখন একত্রে পারছিল না তখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছি। খুব শিগগিরই আমরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাবো”।
হাসপাতাল ও ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনায় প্রধানমন্ত্রী
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা দেখতে টানা তিনদিন ঢাকার বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার সকালে সহিংসতায় আহতদের দেখতে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থপেডিক রিহ্যাবিলিটেশন-নিটোরে (পঙ্গু হাসপাতাল) যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সে সময় তিনি আহত চিকিৎসাধীন কয়েকজনের সাথে কথা বলেন এবং তাদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “কোটা আন্দোলনকারীদের কমপ্লিট শাটডাউন, আর তার ফলাফল আজকের এই অবস্থা। সমস্ত দাবি মেনে নেওয়ার পরেও তাদের আর সেই শাটডাউন শেষ হয় না, কী কারণে আমি বুঝি না। আমরা তো সবগুলো দাবিই মেনে নিয়েছি”।
এই আন্দোলন ঘিরে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আজকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে সব একদিকে ছারখার, আর আজকে কত মানুষ জীবন হারাল! কতগুলো মানুষ পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে!”
তিনি বলেন, “২০০৮ এর বাংলাদেশ আর ২০২৪ এর বাংলাদেশ এক না। মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে। অর্থনীতি কত উপরে উঠে গিয়েছিলো। এটা আর কিছুই না, আমাদের দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে আবার ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত করা, এটাই বোধহয় এদের পেছনে ষড়যন্ত্র”।
পরে শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শন করেন। তিনি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজার ক্ষয়ক্ষতিও ঘুরে দেখেন।
মেট্রোরেল চালু হবে কবে?
কোটা আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ ও সহিংসতার সময় রাজধানীর বিভিন্ন স্থাপনায় যে ক্ষতি হয়েছে তার মধ্যে মেট্রোরেলের স্টেশনও রয়েছে।
মেট্রোর মিরপুর ও কাজী পাড়ার দুটি স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর গত ১৮ই জুলাই থেকে বন্ধ রয়েছে ঢাকায় নতুন চালু হওয়া মেট্রোরেল।
শনিবার সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রাজধানীর বনানীতে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ভবন পরিদর্শনে গেলে সেখানে তাকে মেট্রোরেল কবে চালু হবে তা জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে মি. কাদের বলেন, “মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন ধ্বংসপ্রাপ্ত। এটা এক বছরেও যন্ত্রপাতি এনে সচল করা সম্ভব হবে না বলে এক্সপার্টরা জানিয়েছেন।’
কবে নাগাদ মেরামত হবে এ প্রসঙ্গে সরকারের এই মন্ত্রী মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নেবেন, ওই সিদ্ধান্তের ওপর আমরা পর্যায়ক্রমে যেখানে যা করার সেটা করব। তার সিদ্ধান্তের আগে আমরা কোনও কিছু করতে চাই না”।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন, মেট্রোরেলের স্টেশনসহ সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা ছাত্ররা করেনি। হামলা ও আগুনের ঘটনায় জড়িত ছিল বিএনপি-জামায়াত।
অফিস আদালতের নতুন সময়সূচী ঘোষণা
রোববার ২৮শে জুলাই থেকে আগামী ৩০শে জুলাই মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস চলবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।
কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে শনিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে নতুন এই সময়সূচী ঘোষণা করা হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ শিবলী সাদিক বিবিসি বাংলাকে বলেন, “আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকারি অফিস আদালতের জন্য নতুন এক সময়সূচী ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়সূচী কি হবে তা মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে”।
তিন দিনের জন্য সরকারি অফিস সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চালু থাকলেও ব্যাংকের জন্য নতুন সময়সূচী নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
শনিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সারাদেশের সব ব্যাংক খোলা সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে লেনদেন চলবে সকাল দশটা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত।
কোটা আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে গত রবি ও সোমবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে। পরে তা মঙ্গলবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার আংশিকভাবে খোলে সরকারি অফিস। সে দু’দিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।