পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ছেড়ে গিয়ে শেখ
হাসিনা এখন ভারতেই আছেন। দিল্লির নিকটবর্তী হিন্ডোন বিমানঘাঁটি থেকে তাকে
দিল্লির উপকণ্ঠে গাজিয়াবাদে আধাসামরিক বাহিনীর একটি অতিথিশালায় রাখা হয়েছে।
যদিও
সকালে একটি সংবাদ সংস্থাসহ বেশ কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম খবর দিয়েছিল যে শেখ হাসিনাকে বহন করে
আনা বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিমানটি দিল্লির নিকটবর্তী হিন্ডোন বিমানঘাঁটি থেকে
তাকে নিয়ে উড়ে গেছে। তবে কিছুক্ষণ পরে ওই সংবাদ সংস্থাই খবর দেয় যে বিমানটি উড়ে
গেলেও সেটিতে শেখ হাসিনা নেই। বিমানটি বাংলাদেশের সামরিক অফিসারদের নিয়ে নিজের
দেশের দিকে রওনা হয়েছে।
সোমবার মধ্যরাতে নিরাপত্তা বিষয়ক
ক্যাবিনেট কমিটি বা সিসিএসের বৈঠক হয়েছে দিল্লিতে। ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও ছিলেন। বৈঠকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়েই আলোচনা হয়েছে। তবে বৈঠকের
পরে কোনো বিবৃতিও যেমন দেওয়া হয়নি, তেমনই আসেনি কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তিও।
মঙ্গলবার সকালে দিল্লির সংসদ ভবনের
অ্যানেক্সে একটি সর্বদলীয় বৈঠক হয়েছে। বিভিন্ন দলের সংসদ সদস্যদের সামনে ওই বৈঠকে
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পরিস্থিতির বিবরণ দেন। তিনি বলেন, সরকার সঠিক সময়ে
সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী
কিরেন রিজিজু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-সহ সব দলের সংসদ সদস্যরাই ওই বৈঠকে
ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই বৈঠকে সংসদ
সদস্যদের জানিয়েছেন যে শেখ হাসিনার সঙ্গে সরকারের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। নিজের
ভবিষ্যত পরিকল্পনার জন্য ভারত তাকে আরও সময় দিতে চায় বলেও মন্তব্য করেছেন মি.
জয়শঙ্কর, এমনটাই কয়েকটি সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে।
ওই বৈঠকে সংসদের নিম্ন কক্ষ লোকসভায়
বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তুলেছিলেন, যে বাংলাদেশ নিয়ে দীর্ঘমেয়াদে এবং স্বল্পমেয়াদে ভারত কী কৌশল নিচ্ছে?
সরকার এই প্রশ্নের উত্তরের
জানিয়েছে যে পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে, এবং ক্রমাগত বিশ্লেষণ চলছে।
মি. গান্ধী এটাও জানতে
চেয়েছিলেন যে বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহে ‘বিদেশি শক্তির হাত’ আছে কি না। সরকার এর
জবাবেও বলে যে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই কংগ্রেস নেতা কার্তি
চিদাম্বরমকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে যে জাতীয় নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থের ব্যাপারে
কংগ্রেস সম্পূর্ণভাবে সরকারের পাশে আছে।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য কোথায়, তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রথমে শোনা যাচ্ছিল যে তিনি ভারত থেকে হয়ত
লন্ডনের দিকে রওনা হবেন। কিন্তু দিল্লি থেকে বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা শুভজ্যোতি
ঘোষ জানাচ্ছেন যে পরবর্তী গন্তব্য এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তাই আপাতত
ভারতেই থাকবেন শেখ হাসিনা, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু কতদিন তাকে ভারতে থাকতে হবে, সেটি এখনও স্পষ্ট নয়।