টেলিফোনে আড়িপাতা সংস্থা এনটিএমসির গর্হিত কাজ বন্ধ হবে কি— এটি বণিক বার্তা পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। এতে বলা হয়েছে, সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে টেলিযোগাযোগ সম্পর্কিত দিকনির্দেশনা, পর্যবেক্ষণ ও অন্যান্য সরকারি গোয়েন্দা সংস্থাকে সহযোগিতা করার জন্য ২০১৩ সালে জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (এনটিএমসি) যাত্রা শুরু করলেও এতদিন সংস্থাটিকে শুধু সরকারের হয়ে নাগরিকদের ফোনকল ও ইন্টারনেটে বিভিন্ন যোগাযোগ অ্যাপে আড়িপাতা এবং ইন্টারনেট ব্যবস্থা ও ইন্টারনেট অপারেটর নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোবাইল ফোনের ভয়েস ও এসএমএস, ল্যান্ডফোন ভয়েস এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক, টুইটার- বর্তমানে এক্স, টেলিগ্রাম, ভাইবার, ইমো, স্কাইপি) আড়িপাততে পারে এনটিএমসি। ওয়েবসাইট ব্লগ, ই-মেইলে ইত্যাদি মাধ্যমেও শতভাগ আড়িপাতার সক্ষমতা রয়েছে সংস্থাটির।
ভিক্যাল মাউন্টেড ডাটা ইন্টারসেপ্টর, ভিক্যাল মাউন্টেড মোবাইল ইন্টারসেপ্টরের মতো নজরদারি যন্ত্র ব্যবহার করে এনটিএমসি। সংস্থাটির জন্য ইসরায়েলি সাইবার গোয়েন্দা কোম্পানি এনএসও গ্রুপের কাছ থেকে পেগাসাস স্পাইওয়্যারও ক্রয় করা হয়েছিল। সফটওয়্যারটির মাধ্যমে মোবাইল ফোন হ্যাক করা যায়।
অ্যাপটি একবার কারো মোবাইল ফোনে ইনস্টল করা হলে তা দিয়ে নজরদারি প্রতিষ্ঠান সেই ফোনের মেসেজ, ফটো বা ই-মেইল হস্তগত করতে পারে। একই সঙ্গে ফোনে কথাবার্তা রেকর্ডের পাশাপাশি গোপনে মাইক্রোফোন ও ক্যামেরা চালু করতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ফাঁস হওয়া কিছু গোপনীয় প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, ডিআইজি হারুন-অর-রশিদ, বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের দোকানদার অরুণ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা, গণমাধ্যমকর্মীসহ অনেকের দৈনিক কল মনিটরিং প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেয়া হয়েছে।
ইসলামী ব্যাংকের ৫০ হাজার কোটি টাকাই এস আলমের পকেটে— এটি দৈনিক প্রথম আলো’র প্রধান শিরোনাম। এখানে বলা হয়েছে, মাত্র বছর দশেক আগেও দেশের শীর্ষ ব্যাংক ছিল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। আইনকানুন পরিপালন, গ্রাহককে সেবা দেওয়া ও আর্থিক সূচকে অন্য সব ব্যাংককে ছাড়িয়ে গিয়েছিল এই ব্যাংক।
গ্রাহকের আস্থার কারণে স্থানীয় আমানত কিংবা বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহে এটি সবচেয়ে এগিয়ে ছিল। ব্যাংকটির আকার এতটাই বড় হয়ে উঠেছিল যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বলা হতো—ইসলামী ব্যাংক ঝুঁকিতে পড়লে পুরো খাতে ‘পদ্ধতিগত ঝুঁকি’ তৈরি হবে, যা রোধ করা সম্ভব হবে না।
কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। ওই বছর সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ইসলামী ব্যাংককে ‘জামায়াতমুক্ত’ করার উদ্যোগ হিসেবে এর মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নেয় সদ্য বিদায় নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপ। এরপর সাড়ে সাত বছরে নামে-বেনামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজশাহীর নাবিল গ্রুপ।
এই অর্থ ব্যাংকটির মোট ঋণের এক–তৃতীয়াংশ। এই টাকা বের করতে কোনো নিয়মকানুন মানা হয়নি। ঋণের যে তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, ব্যাংক থেকে পাচার করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ তার চেয়ে বেশি বলেই মনে করেন কর্মকর্তারা।
হাসিনার নামে হত্যা মামলা— এটি সমকাল পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। এখানে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার ৯ দিনের মাথায় শেখ হাসিনার নামে হত্যা মামলা হয়েছে।
ছাত্র আন্দোলনে ঢাকার মোহাম্মদপুরে পুলিশের গুলিতে এক মুদি দোকানি আবু সায়েদের মৃত্যুর ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন আদাবর এলাকার দুগ্ধ খামারি আমীর হামজা শাতিল।
বাদীর জবানবন্দি নিয়ে মামলার নথি পর্যালোচনা করে মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী আবেদনটি মোহাম্মদপুর থানাকে সরাসরি এজাহার (এফআইআর) হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় দায়ের করা এ মামলা আদালত আমলে নেওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে।
আবু সায়েদ হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ছাড়াও আসামি করা হয়েছে সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ এবং যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারকে।
এই খবরটি আজ দেশের প্রায় সকল পত্রিকার প্রধান শিরোনাম।
Salman, Anisul arrested in Sadarghat— দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম এটি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঢাকার সদরঘাট থেকে গ্রেফতার হয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা কলেজের একজন ছাত্র হত্যার ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মাইনুল বলেন, দু’জনেই নৌপথ ব্যবহার করে পালানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের পাগলা এলাকায় কোস্টগার্ডরা তাদেরকে ধরে ফেলে এবং তারপর আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের গ্রেফতারের এই ঘটনাও দ্য ডেইলি স্টারসহ আজ দেশের প্রায় সকল পত্রিকার প্রথম পাতার শিরোনাম।
১৫ আগস্টের ছুটি বাতিল— দেশ রূপান্তর পত্রিকার এই প্রধান শিরোনামে বলা হয়েছে, শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী ১৫ই অগাস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হওয়ার পর থেকেই জাতীয় শোক দিবস পালন করা হবে কি না তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। দেশে মন্ত্রিসভা বা উপদেষ্টা পরিষদের সভায় বছরের ছুটির তালিকা (বর্ষপঞ্জি) অনুমোদন করা হয়। সেই হিসেবে এ দিবস ও ছুটি বাতিল করতে হলে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় বাতিল করতে হবে।
উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের পর গতকালই প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। এর আগে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাতীয় শোক দিবস বাতিলের দাবি জানায়। গত সোমবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা শোক দিবস বাতিলের দাবি জানালেও কয়েকটি দল তা বাতিল না করার পক্ষে মত দেয়। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সোমবার দিবসটি বাতিলের দাবি জানায়।
মূলত, ‘ধর্মীয় পরিচয় নয়, বরং মানুষ হিসেবে এবং বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে’ বিবেচনা করে সাংবিধানিক অধিকার চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বিভিন্ন হামলার ঘটনায় দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান। সেখানে তিনি বলেন, “এমন বাংলাদেশ আমরা করতে যাচ্ছি, যেখানে সবাই এক পরিবার। এটা হল মূল জিনিস। এখানে পরিবারের মধ্যে কোনও পার্থক্য করা, বিভেদ করা, এটার কোনও প্রশ্নই আসে না।…আমরা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ হিসেবে বিবেচিত নই; মানুষ হিসেবে বিবেচিত। আমাদের অধিকারগুলো নিশ্চিত হোক।”
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির কাছে বিদেশি কোম্পানিগুলোর পাওনার পরিমাণ ৫০ কোটি ৫০ হাজার মার্কিন ডলার দাঁড়িয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা।
ইতোমধ্যে আমদানিকৃত পরিশোধিত ও অপরিশোধিত তেলের দাম পরিশোধ না করলে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে নির্ধারিত সময়ে তেল আমদানি করা যাবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার গুলশানে জাতিসংঘের অফিসে গিয়ে সংস্থার আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইসের কাছে এই চিঠি হস্তান্তর করেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এ সময়ে বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদও ছিলেন।
পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের মি. চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে যে হত্যাযজ্ঞ হয়েছে, গুম করা হয়েছে, নাগরিকদের এটা উন্মোচন করার প্রয়োজন আছে এবং জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে হলে, দেশের মধ্যে এবং দেশের বাইরে যে ঘটনার মাধ্যমে এই হত্যাযজ্ঞ করেছে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায়- এটাকে জাতির সামনে, বিশ্বের সামনে আমাদের তুলে ধরতে হবে।”
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তালিকা তৈরির কাজ চলছে। এখনো সেটা চূড়ান্ত করা হয়নি।
পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলেন, ‘পুলিশের পেশাদারিত্ব ধ্বংসের জন্য বিশেষ একটি এলাকা ও রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট কর্মকর্তারাই দায়ী। এরা পুলিশের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলোতে বসে পুলিশকে রাজনৈতিক দমন নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। পিআরবিসহ প্রচলিত যাবতীয় বিধি লঙ্ঘন করে তারা সরাসরি আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছেন।’
শেখ হাসিনাকে উৎখাত করেনি যুক্তরাষ্ট্র— এটি আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার একটি খবর। এতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে হোয়াইট হাউজ।
গত সোমবার হোয়াইট হাউসের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র কারিন জ্যঁ-পিয়েরকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মিত্রদের বার্তা দিয়েছেন যে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা আছে। বাংলাদেশের একটি দ্বীপ যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছিল। দ্বীপটি দিতে তিনি রাজি হননি। এরপর তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এই অভিযোগের বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া কী?”
এর জবাবে পিয়েরে বলেন, “এর সঙ্গে আমাদের কোনো যোগসূত্র নেই। এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র জড়িত—এ ধরনের কোনও প্রতিবেদন কিংবা গুজব পুরোপুরি মিথ্যা। এগুলো সত্য নয়। এটা বাংলাদেশের মানুষের চাওয়া ছিল। এটা ঘটিয়েছে বাংলাদেশের মানুষ। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সরকার ভবিষ্যতে কেমন হবে, সেটা দেশটির মানুষেরই ঠিক করা উচিত। এটাই আমাদের অবস্থান।”