যশোরের অভয়নগর উপজেলার বাশুয়াড়ী গ্রামের ঐতিহ্যের পীর খানজাহান আলী দীঘির অবৈধ ব্যক্তি মালিকানা বাতিলের দাবিতে অভয়নগরে বিরাট এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১১ টায় বাশুয়াড়ী খানজাহান দীঘির পাড়েই এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে ছাত্র-যুবক-নারীসহ শতশত সাধারণ মানুষ উপস্থিত থেকে ভূমিদস্যু আখতারুজ্জামান পান্না মোল্লার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
পীর খানজাহান আলী (রহঃ) দীঘি নামে খ্যাত সরকারি জলাশয়টি ১৯৬২ সালের পর্চায় যশোর কালেক্টরেটরের নামে থাকলেও খুলনা জেলার ফুলতলা থানাধীন দামোদরের বাসিন্দা সরোয়ার মোল্লা ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে জবরদখলে রেখেছিল। আনুমানিক ১৯৭১ সালের দিকে সরোয়ার মোল্লা মৃত্যুবরণ করলে তার বড় পুত্র আখতারুজ্জামান পান্না মোল্লা দিঘিটি জবরদখল করে আসছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে জোরজুলুমে ও ক্ষমতার অপব্যবহাার করে দখল রাখায় ওই এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভের কোন শেষ নেই। রাজনৈতিক ক্ষমতাবলে পান্না মোল্লার নামে অবৈধ মালিকানা বাতিল করে সরকারি জলাশয় সরকারের অনুকূলে রাখতে এলাকার সাধারণ মানুষের ব্যাপক উপস্থিতিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন আলহাজ্ব মকবুল হোসেন সরদার, মুন্সি মনিরুল ইসলাম, মাওলানা হাফিজুর রহমান, মুন্সি রেজওয়ান, মোঃ রফিকুল সরদারসহ ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মোঃ হাবিবুর রহমান দশম শ্রেণীর ছাত্র মোঃ মোমিন উদ্দিন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ইতিহাস নন্দিত জননায়ক ও কামেল দরবেশ খানজাহান আলী (রহঃ) জৌনপুর হতে যশোর আসেন। তিনি পায়গ্রাম কসবা হতে দলবল নিয়ে রাস্তা, দীঘি ও মসজিদ নির্মাণ করতে করতে পূর্বাভিমুখে অগ্রসর হতে থাকেন। কিছুদূর আসার পর ভৈরব পার হয়ে অভয়নগর উপজেলার শুভরাড়া ইউনিয়নের বাশুয়াড়ী গ্রামে বিশ্রামের জন্য আস্তানা ফেলেন। বাশুয়াড়ীতে তিনি উঁচু পাড় সম্বলিত ২৭৫ গজ দৈর্ঘ্য ও ২২৫ জগ প্রস্থের আয়তনে একটি বিশাল দীঘি খনন করেন। পাড়সহ দীঘির আয়তন প্রায় ৭০ বিঘা। দীঘির চর্তুপার্শ্বে পাড়ের উপর রোপন করেন প্রচুর বৃক্ষ। স্থাপন করেন ঘাট। দীঘির পশ্চিম পাড়ে রয়েছে ঈদের জামায়াতের জন্য সুউচ্চ মিনার সম্বলিত ‘ঈদগাহ’। কথিত আছে, পঞ্চাশ হাজার লোক দীঘিখননে অংশ নিয়েছিলেন। প্রতিবছর চৈত্রপূর্ণিমায় দীঘির চার পাশে বিশাল মেলা বসে।