ছবির উৎস, Shafiqul Alam
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের একটি আদালত সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং ইসকনের বহিস্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করেছে।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে চিন্ময় দাসের ভার্চুয়াল শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মফিজুল হক ভূইঁয়া যুক্তি তুলে ধরেন যে, “রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা জামিন অযোগ্য, ফলে মি. দাসের জামিন পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
এরপর শুনানি শেষে মি. দাসের জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেয় আদালত।
মি. দাসের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বিবিসি বাংলাকে এ তথ্য জানান।
সাবেক ইসকন নেতার জামিন শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন ১১ জন
আইনজীবীর একটি দল। মি. রায় ওই দলের একজন সদস্য।
তিনি বিবিসিকে বলেছেন, আদালতে
রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে, এটি একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা যার শাস্তি সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন
এবং মামলাটি যেহেতু তদন্তাধীন, এক্ষেত্রে তারা জামিনের বিরোধিতা করছেন। এবং জামিন
না দিতে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে প্রার্থনা করেছে।
শুনানিতে
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবীরা বলেছেন, তার বিরুদ্ধে পতাকা অবমাননার অভিযোগে যে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা
হয়েছে তা ভিত্তিহীন।
মি. রায় বলেন, “প্রথমত,
সমাবেশের ভিডিওতে ইস্কনের পতাকার নিচে যে পতাকাটি ওড়ানো হয়েছে, সেটি আসলে চাঁদ তারা খচিত পতাকা। অর্থাৎ সেটা
বাংলাদেশের পতাকা না।”
“সেইসাথে
পতাকা অবমাননার কোনো ধারা বাদী মামলার সাথে সংযুক্ত করেননি এবং যে পতাকাটি অবমাননার
কথা বলা হয়েছে সেটাও জব্দ তালিকায় নাই।”
তার যুক্তি এর ফলে অভিযোগ যথাযথভাবে প্রমাণ হচ্ছে না।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৬ ধারা অনুযায়ী
রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা নেওয়ার ক্ষেত্রে
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন নেওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ক্ষেত্রে
তা মানা হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।
সুমন
কুমার রায় বলেন, “কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রের অনুমতি ছাড়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করতে পারেন
না। এ ধরনের মামলা আমলে নেয়ারও কোনো এখতিয়ার নাই। সব মিলিয়ে মামলায় পদ্ধতিগত ত্রুটি
রয়েছে। তার মানে এই মামলা ভিত্তিহীন। এমন অবস্থায় চিন্ময়কৃষ্ণ তার জামিন
পাওয়ার হকদার।”
জামিন
আবেদনের শুনানিতে চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবীরা বলেছেন, “তার নির্দিষ্ট ঠিকানা আছে, তাই
জামিন পেলে তার পালিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। সেক্ষেত্রে আমরা নিয়মিতভাবে ট্রায়াল
ফেইস করব।”
তবে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে মি. দাসের জামিন নামঞ্জুরের আদেশ হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন এই আইনজীবী।
গত ২৫শে নভেম্বর বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গোয়েন্দা পুলিশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে।
পরদিন ২৬শে নভেম্বর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চিন্ময় দাসের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
২৬শে নভেম্বর মি. দাসের জামিনকে ঘিরে সংঘর্ষ, ভাঙচুরের পর সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে একজন আইনজীবী নিহত হন।
মি. দাসের গ্রেফতার নিয়ে ভারতের তরফ থেকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
এ নিয়ে আরো পড়তে পারেন: